কারাগারে বছরের পর বছর বন্দি থাকার পর অস্ট্রিয়ার দুই নাগরিককে মুক্তি দিয়েছে ইরান। অস্ট্রিয়ার কর্মকর্তারা শুক্রবার এ কথা জানিয়েছেন। মুক্তিপ্রাপ্তরা হলেন, অস্ট্রিয়ান-ইরানি দ্বৈত নাগরিক কামরান গাদেরি এবং মাসুদ মোসাহেব। বন্দি বিনিময়ের অংশ হিসেবে তাদের মুক্তি দেয় ইরান সরকার।
গোয়েন্দাগিরি ও নিরাপত্তার অভিযোগে ইরানে এই দুইজনকে আটক করায় আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনার ঝড় ওঠেছিল।
এদিকে বেলজিয়াম সরকার জানিয়েছে, বন্দি বিনিময়ের অংশ হিসেবে ডেনমার্কের এক নাগরিককেও মুক্তি দিয়েছে ইরান। বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডি ক্রো বলেন, ‘মেডিক্যাল পরীক্ষার পর তিনজনই ওমান হয়ে বেলজিয়ামে ফিরবেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, ব্রাসেলসের ঠিক বাইরে মেলসব্রোক সামরিক বিমানবন্দরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাদজা লাহবিব তাদের স্বাগত জানাবেন।
অন্যদিকে অস্ট্রিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার শ্যালেনবার্গ এক টুইটে লিখেছেন, বছরের পর বছর ‘কঠোর কারাবাসের’ পর দুজনেই বাড়িতে ফিরছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘ইরানে এখনও কারাবন্দি তৃতীয় নাগরিকের মুক্তি নিশ্চিত করতে অস্ট্রিয়ার চেষ্টার কমতি হবে না।’
গাদেরিকে ২০১৬ সালে ইরানে গ্রেফতার করা হয়েছিল। গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর মোসাহেবকে ২০১৯ সালে তেহরান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এই দুইজন যথাক্রমে ২,৭০৯ এবং ১,৫৮৬ দিন কারাগারে ছিলেন।
এর আগে বন্দি বিনিময় চুক্তির অংশ হিসেবে বেলজিয়ামের মানবাধিকারকর্মী অলিভিয়ের ভ্যানডেকাস্টিল এবং ইরানের কূটনীতিক আসাদুল্লাহ আসাদিকে মুক্তি দেয় দেশদুটি।
গুপ্তচরবৃত্তিসহ কয়েকটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর জানুয়ারিতে তাকে ৪০ বছরের কারাদণ্ড এবং ৭৪টি বেত্রাঘাতের শাস্তি দেওয়া হয়েছিল।
বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভ্যানডেকাস্টিল ৪৫৫ দিন কারাগারে থাকার পর মুক্তি পান।’
অন্যদিকে আসাদিকে ২০২১ সালে ফ্রান্সে একটি ব্যর্থ বোমা পরিকল্পনার দায়ে বেলজিয়ামে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। তাকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আসাদিকে ‘অবৈধভাবে আটক’ করা হয়েছিল।
শুক্রবার অস্ট্রিয়ান-ইরানি নাগরিকদের মুক্তির বিষয়টি ওমানের মধ্যস্থতায় হয়েছে। উপসাগরীয় দেশটি আগেও বন্দি বিনিময়ের মধ্যস্থতা করেছিল।
সূত্র: বিবিসি