মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকারি কর্মী সংখ্যা হ্রাস পরিকল্পনার ভবিষ্যৎ এখন বিচার বিভাগের হাতে। প্রায় ২০ লাখ কর্মীকে প্রণোদনার বিনিময়ে স্বেচ্ছা অবসরের প্রস্তাব নিয়ে সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সিদ্ধান্ত দেবেন এক মার্কিন বিচারক। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ট্রাম্পের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ফেডারেল কর্মচারী ইউনিয়নেরা করা মামলার শুনানি করবেন বস্টন অঙ্গরাজ্যের ডিস্ট্রিক্ট জাজ জর্জ ও'টুলি। ইউনিয়নের অভিযোগ, সরকারি কর্মীদের জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের প্রস্তাব অবৈধ। কারণ কংগ্রেস এই পরিকল্পনার তহবিল অনুমোদন করেনি।
গত সপ্তাহে বিচারক ও'টুলি সাময়িকভাবে এই স্বেচ্ছা অবসর প্রস্তাব গ্রহণ সমাপ্তির সময়সীমা স্থগিত করেছিলেন। ট্রাম্পের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বেতনাদি ও অন্যান্য সুবিধা পাবেন কর্মীরা।
এই কর্মী ছাঁটাই কার্যক্রম তদারকির জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দায়িত্ব দিয়েছেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ককে। নবগঠিত সরকারি সক্ষমতা বিভাগের (ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিশিয়েন্সি বা ডোজে) মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া পরিচালিত হচ্ছে।
স্বেচ্ছা অবসরের প্রস্তাব গ্রহণের বিষয়ে কর্মীদের সতর্ক করে ইউনিয়ন দাবি করছে, ট্রাম্প তার পরিকল্পনা ঠিকমতো বাস্তবায়ন করতে পারবেন না। তাদের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও শুক্রবার পর্যন্ত প্রায় ৬৫ হাজার কর্মী প্রস্তাব গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে। অবশ্য এই তথ্যের সত্যতা স্বাধীনভাবে এখনও নিশ্চিত করতে পারেনি রয়টার্স।
সোমবার শুনানি শেষে বিচারক ও'টুলি তার সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন। ট্রাম্পের পুরো কর্মসূচিকে আবারও সাময়িক স্থগিতাদেশ বা স্থায়ীভাবে বাতিল করা এমনকি এটি নিয়ে অগ্রসর হওয়ার সবুজ সংকেতও দিতে পারেন।
রবিবার রয়টার্সকে এক সরকারি কর্মী বলেছেন, আদালত রায়ের মাধ্যমে ট্রাম্পের প্রস্তাব আটকে দিলেও তিনি ও তার সহকর্মীরা চাকরি হারাতে যাচ্ছেন বলেই তার আশঙ্কা।
ভোক্তা স্বার্থ রক্ষাকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান সিএফপিবির নতুন ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রাসেল ভট তার কর্মীদের কাছে শনিবার পাঠানো এক মেইলে তাদের কাজ বন্ধ রাখার আদেশ দিয়েছেন। পরদিন সকালেই আরেকটি মেইল পান কর্মচারীরা। তাদের জানানো হয়, সোমবার থেকে কার্যালয় এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ থাকবে।
সিএফপিবি কর্মীদের প্রতিনিধিত্বকারী শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে রবিবার গভীর রাতে এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। তাদের অভিযোগ, সংস্থাটির কার্যক্রম চালু রাখতে এখতিয়ার ও তহবিল নির্ধারণের ক্ষমতা রয়েছে একমাত্র কংগ্রেসের। ভটের পদক্ষেপে কংগ্রেসের এই কর্তৃত্ব খর্বিত হচ্ছে।
হোয়াইট হাউজে প্রত্যাবর্তনের পর থেকেই মাস্ককে সঙ্গে নিয়ে একের পর এক আগ্রাসী পদক্ষেপ নিয়ে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর তাদের প্রায় প্রতিটি পদক্ষেপই নিয়মিত আইনি বাধার সম্মুখীন হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি-র জন্য সমস্ত অর্থায়ন বন্ধের প্রচেষ্টা আদালতে হস্তক্ষেপে আপাতত আটকে আছে। এছাড়া, ভিন্ন মামলায় সরকারি ঋণ ও অনুদান বন্ধ করার পদক্ষেপও আপাতত আদালতের হস্তক্ষেপে স্থগিত হয়ে আছে।
সম্প্রতি মার্কিন অর্থমন্ত্রণালয়ের সংবেদনশীল তথ্যে অ্যাক্সেস পায় মাস্কের ডোজে। শনিবার আদালতের এক সিদ্ধান্তে তাদের এই অ্যাক্সেস সাময়িকভাবে বাতিল করা হয়।