ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করতে ব্রিটেন প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। প্যারিসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ইউরোপীয় নেতাদের জরুরি বৈঠকের আগে রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) এই বক্তব্যের মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি বিষয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করলেন তিনি। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
তিনি বলেছেন, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মুখ্য ভূমিকা পালনের জন্য প্রস্তুত আছে ব্রিটেন। প্রয়োজনে তারা নিজেদের পদাতিক বাহিনী প্রেরণেও পিছপা হবেন না। স্টারমার আরও বলেছেন, আমাদের যুদ্ধের সমাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। এটি যেন কেবল একটি স্থগিতাবস্থা না হয়, যেখানে পুতিন চাইলেই আবার হামলা চালাতে পারেন।
গত সপ্তাহে পুতিনের সঙ্গে অপ্রত্যাশিত এক ফোনকল শেষে ট্রাম্প ঘোষণা করেন, ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তির জন্য তাৎক্ষণিক প্রক্রিয়া শুরুর বিষয়ে আলোচনা করেছেন তারা। ইউক্রেন ও অন্যান্য ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে পরামর্শ ব্যতিরেকেই এই আলোচনা করার হকচকিয়ে যান সবাই।
সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া রুশ ও মার্কিন কর্মকর্তাদের বৈঠকে ট্রাম্পের ঘোষণা অনুযায়ী ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি প্রক্রিয়ার আলোচনা হতে পারে।
ইউক্রেন ইস্যুতে হোয়াইট হাউজের বর্তমান অবস্থানে বাতাসের দিক পরিবর্তন টের পাচ্ছেন ইউরোপীয় নেতারা। অন্যদের খুব একটা তোয়াক্কা না করে পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্প একাই ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটানোর প্রক্রিয়া শুরু করার চিন্তা করায়, মহাদেশীয় নিরাপত্তার জন্য নিজেদেরই আরও বৃহত্তর দায়িত্ব নিতে হবে বলে বুঝতে পারছেন ইউরোপীয় নেতারা।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ইউরোপের সমষ্টিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার এক বিরল সুযোগ তাদের সামনে উপস্থিত হয়েছে। তবে এজন্য অবশ্যই তাদের যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে হবে।
সোমবার সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন বলেছেন, ইউক্রেনে যুদ্ধপরবর্তী শান্তিরক্ষী মোতায়েনের বিষয়ে তারা বিবেচনা করবেন। তবে এরকম কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মধ্যে সমঝোতার প্রয়োজন আছে।
এদিকে, সোমবার প্যারিসে একটি নিরাপত্তা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এখানে উপস্থিত থাকবেন জার্মানি, ইতালি, ব্রিটেন, পোল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস এবং ডেনমার্কের নেতার পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ এবং পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুট্টে। এই সম্মেলনে সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন ফরানি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।
সম্মেলনের বিষয়ে ফরাসি প্রেসিডেনশিয়াল কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথভাবে অথবা এককভাবে ইউরোপীয়রা কী ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দিতে পারবে, সম্মেলনে মূলত সে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে। শান্তিরক্ষী মোতায়েন মূলত নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের একটা সম্ভাব্য পদ্ধতি।