তুরস্কের এক মেয়রকে দুর্নীতির মামলায় বিচারাধীন অবস্থাতেই আটক রাখার আদেশ দিয়েছে দেশটির আদালত। ইস্তানবুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে গ্রেফতারে দেশব্যাপী ব্যাপক আন্দোলনের মাঝেই রবিবার (২৩ মার্চ) এই সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইমামোগলুসহ অন্তত ২০ ব্যক্তিকে দুর্নীতির তদন্তের অংশ হিসেবে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে ৫৩ বছর বয়সী মেয়রের বিরুদ্ধে ভিন্ন অভিযোগে সন্ত্রাসবাদের মামলা দায়ের করা হয়নি।
আদালত জানিয়েছে, ইমামোগলুর বিরুদ্ধে সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠনকে সহায়তা করার জোরালো সন্দেহ রয়েছে। তবে ইতোমধ্যে তাকে আর্থিক কেলেঙ্কারির জন্য আটকের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বিধায় নতুন করে আটকাদেশ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা যাচ্ছে না।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের দীর্ঘদিনের প্রতিপক্ষ এবং অন্যতম মুখ্য বিরোধীদলীয় নেতা হচ্ছেন এই একরেম ইমামোগলু। দুর্নীতি ও সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে বুধবার তাকে আটক করে সরকার।
ইমামোগলুর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ উঠানো হয়নি বলে ইস্তাম্বুল পৌরসভায় কোনও প্রশাসক নিয়োগ করতে পারবে না সরকার। বরং, নতুন মেয়র নির্বাচিত হবেন পৌর পরিষদের মধ্য থেকেই।
আদালতের রায় জানার পর হার না মানার অঙ্গীকার করেছেন ইমামোগলু। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেছেন, আমাদের দেশের গণতন্ত্রের ওপর লেপে যাওয়া এই কালিমা আমরা মুছে ফেলব। হাতে হাত রেখে একতাবদ্ধ হয়ে এই লড়াই করতে হবে। আমার শিরদাঁড়া এখনও সোজা আছে, আমি মাথা নত করব না।
আদালতের আদেশের সমালোচনা করে ইমামোগলুর মিত্র এবং আঙ্কারার মেয়র মানসুর ইয়াভাস বলেছেন, আটকের আদেশ দিয়ে পুরো বিচার ব্যবস্থাকে অপমানিত করা হয়েছে।
এদিকে, ইমামোগলুর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কারণে মামলা চলছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশটির বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদসহ একাধিক ইউরোপীয় নেতা। অবরুদ্ধ মেয়রের বিরুদ্ধে আদালতের পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করছেন তার সমর্থকরা। এই টানাপড়েনের মধ্যে শুনানি শুরুর আগেই তাকে আটকের আদেশ দিয়ে আগুনে ঘি ঢাললো আদালত।
বিরোধীদের সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে সরকার। তাদের দাবি, ইমামোগলুর বিরুদ্ধে মামলায় সরকারের হাত নেই এবং এগুলো মোটেও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত নয়।