ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় আশানুরূপ অগ্রগতি না হওয়ায় বিরক্ত হয়ে উঠছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার সেই বিরক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে মঙ্গলবার (২৭ মে) বলে ফেললেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আগুন নিয়ে খেলছেন। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, আমি না থাকলে রাশিয়ার সঙ্গে ভয়াবহ কিছু ঘটত। আমি বলছি, ভয়াবহ, মানে সত্যিকার ভয়াবহ। কিন্তু পুতিন তো সেটা আমলে নিচ্ছেন না। তিনি আসলে আগুন নিয়ে খেলছেন।
ট্রাম্প তার দাবির বিস্তারিত কোনও ব্যাখ্যা দেননি।
দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই প্রায় তিন বছরের এই যুদ্ধের অবসানের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে যাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। তবে, তার সর্বশেষ হুঁশিয়ারির কাছাকাছি সময়েও ইউক্রেনের সুমি অঞ্চলে চারটি গ্রাম দখল করেছে মস্কো বাহিনী। আর বিগত কয়েকদিন ধরে ইউক্রেনে মারাত্মক ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ক্রেমলিন।
এদিকে, ট্রাম্পের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছেন পুতিনের শীর্ষ কর্মকর্তা দিমিত্রি মেদভেদেভ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তিনি লিখেছেন, (রাশিয়ার জন্য) ভয়াবহ কিছু ঘটা এবং পুতিনের আগুন নিয়ে খেলা সম্পর্কে ট্রাম্প কয়েকটি কথা বলেছেন। আমি অবশ্য একটাই ভয়াবহ ঘটনার কথা ভাবতে পারি- তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। আশা করি, ট্রাম্প নিজেও এটা অনুধাবন করেন!
এর দু-দিন আগেও পাল্টাপাল্টি সমালোচনার করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। ইউক্রেনে ব্যাপক বিমান হামলা চালানোর প্রতিক্রিয়ায় রবিবার এক পোস্টে ট্রাম্প বলেছিলেন, পুতিন উন্মাদ হয়ে গেছেন। আর এর জবাবে ক্রেমলিন বলেছিল, সবাই বোধহয় একটু আবেগি হয়ে আছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন গত সপ্তাহে ট্রাম্পের সঙ্গে দুই ঘণ্টার ফোনালাপের পর বলেছিলেন, মস্কো একটি সম্ভাব্য শান্তিচুক্তির খসড়া নিয়ে ইউক্রেনের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। এই প্রক্রিয়ায় একটি যুদ্ধবিরতির সময়সীমা নির্ধারণ অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলেও জানান তিনি।
মঙ্গলবার ক্রেমলিন জানিয়েছে, তারা এখন যুদ্ধবিরতির সম্ভাব্য স্মারক চুক্তি নিয়ে কাজ করছে এবং এর সময়সীমা নির্ধারণে বিলম্ব হতে পারে।
ইউক্রেন এবং তার ইউরোপীয় মিত্র ও যুক্তরাষ্ট্র সম্মিলিতভাবে রাশিয়ার কাছে বারবার আহ্বান জানাচ্ছে, ৩০ দিনের নিঃশর্ত একটি যুদ্ধবিরতি যেন অবিলম্বে কার্যকর করা হয়। তবে তাদের এই আহ্বানে খুব একটা গা করছেন না পুতিন। কিয়েভ ও তার মিত্রদের অভিযোগ, পুতিন আসলে যুদ্ধক্ষেত্রে অগ্রসর হওয়ার জন্য সময়ক্ষেপণ করছেন।