ট্রাম্প প্রশাসন ছাড়ছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক। বুধবার (২৮ মে) রাতে হোয়াইট হাউজের এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন, দ্রুতই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রশাসন ছাড়ছেন মাস্ক। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন টেসলা মালিক। এই স্বল্প সময় দায়িত্বে থাকাকালীন তিনি একাধিক সরকারি সংস্থার সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে আগ্রাসী পদ্ধতিতে কাজ করেছেন। তবে অঙ্গীকার অনুযায়ী সরকারি ব্যয় কমাতে পারেননি।
বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়ে মাস্ক বলেন, সরকারি সক্ষমতা বিভাগে (ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি বা ডোজে) বিশেষ কর্মী হিসেবে তার সময় ফুরিয়ে এসেছে।
কোনও আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই হুট করে প্রশাসন থেকে সরে গেলেন মাস্ক। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত এক কর্মকর্তা বলেছেন, পদত্যাগের আগে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় বসেননি তিনি। বরং জ্যেষ্ঠ পর্যায়ের কর্মীদের সঙ্গে টেসলা মালিকের চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত সম্পন্ন হয়েছে।
তার প্রস্থানের স্পষ্ট কারণ কোনও পক্ষ থেকে জানা যায়নি। তবে ট্রাম্পের কর বিলের সমালোচনা করার পরদিনই তিনি পদত্যাগ করলেন। প্রেসিডেন্টের প্রস্তাবিত বিলকে অত্যন্ত ব্যয়বহুল উল্লেখ করে তিনি বলেছিলেন, এটা অনুমোদিত হলে ডোজেতে তার কাজে ব্যাঘাত ঘটবে।
অবশ্য তার মন্তব্যের সঙ্গে প্রস্থানের কোনও সম্পর্ক আছে কিনা, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
মাস্কের মন্তব্যে অবশ্য প্রশাসনের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সদস্য ক্ষুব্ধ হন। প্রশাসন থেকে এরপর বিভেদ দূর করতে রিপাবলিকান সিনেটরদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ট্রাম্পের কর বিলের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
ট্রাম্পের অভিষেকের পর থেকেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে মার্কিন ধনকুবের। তার দাবি ছিল, ডোজের মাধ্যমে দুই ট্রিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করতে পারবে সরকার।
তবে মাস্কের আগ্রাসী কর্মকাণ্ডে প্রথমদিকে সন্তুষ্ট থাকলেও ক্রমশ বিরক্ত হতে থাকেন ক্যাবিনেট সদস্যরা। এরমধ্যেই আবার কয়েকজন প্রভাবশালী কর্মকর্তার সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে যান তিনি। তাদের মধ্যে রয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, পরিবহনমন্ত্রী শন ডাফি এবং অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট।
মাস্ক চলে গেলেও ডোজে তার কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাবে। এই ধনকুবের বলেছেন, ডোজে সামনের দিনগুলোতে আরও শক্তিশালী হবে। এই সংস্থা সরকারি পরিচালনার এক প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গে পরিণত হবে।
ডোজের মাধ্যমে বরাদ্দ স্থগিত এবং ব্যাপক ছাঁটাই কর্মসূচির মতো পদক্ষেপের মাধ্যমে সরকারি অর্থ সাশ্রয়ের পথ অবলম্বন করেছিলেন টেসলা মালিক। সরকারি নথি পর্যালোচনা করে রয়টার্স জানিয়েছে, বরখাস্তকরণ, ছাঁটাইয়ের হুমকি, চাকরি ছাড়ার জন্য প্রণোদনা ইত্যাদির মাধ্যমে প্রায় দুই লাখ ৬০ হাজার কর্মী কমিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন, প্রায় ২৩ লাখ সরকারি কর্মীর যা প্রায় ১২ শতাংশ।