কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে বিক্ষোভকারীদের ওপর সোমবার (৭ জুলাই) গুলি চালিয়েছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। স্থানীয় প্রতিনিধির বরাতে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
গুলি চালানোর পর এক ব্যক্তিকে রাস্তায় নিথর পড়ে থাকতে দেখেছেন রয়টার্সের প্রতিনিধি। অবশ্য এই প্রতিবেদন লেখার আগ পর্যন্ত কোনও হতাহতের নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে পুলিশের বক্তব্য জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে বাহিনীর মুখপাত্র মুচিরি নিয়াগা কোনও সাড়া দেননি।
সোমবার বিক্ষোভকারীদের মিছিলে জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস (টিয়ার গ্যাস) প্রয়োগের কথা জানিয়েছেন রয়টার্স প্রতিনিধি। এর কয়েক ঘণ্টা পর পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের হাতাহাতি শুরু হলে গুলি চালিয়ে বসে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
দেশটির নাইয়েরি, এমবু এবং নাকুরু শহরেও বিক্ষোভ হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম। সেখানে পুলিশের ওপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করেন আন্দোলনকারীরা। তাদের দমনে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছিল পুলিশ।
১৯৯০ সালের ৭ জুলাই তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল আরাপ মই-এর বিরোধীরা দেশকে বহুদলীয় গণতন্ত্রে রূপান্তরের জন্য আন্দোলন শুরু করে। প্রতিবছর এই দিনটিকে স্মরণ করে কর্মীরা বিক্ষোভ করে। এই প্রতিবাদের নাম ‘সাবা সাবা’ — যা কিসোয়াহিলি ভাষায় ‘সাত সাত’ অর্থাৎ ৭ জুলাই বোঝায়।
চলমান বিক্ষোভের সূচনা গত বছরের জুনে। দেশটিতে কর বৃদ্ধির প্রতিবাদে শুরু হওয়া আন্দোলন রূপ নেয় সরকারি দুর্নীতি, পুলিশি নিপীড়ন এবং সরকার সমালোচকদের গুমবিরোধী বিক্ষোভে।
তবে গতমাসে পুলিশি হেফাজতে আলবার্ট ওজওয়াং নামের এক ব্লগারের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভে নতুনমাত্রা যুক্ত হয়। কেনিয়া জাতীয় মানবাধিকার কমিশন জানিয়েছে, দেশব্যাপী বিক্ষোভে জুনে ১৯ জন নিহত হয়েছেন।
বিক্ষোভের প্রাক্কালে নাইরোবির দিকে যাওয়া প্রধান সড়কগুলো অবরুদ্ধ করে দেয় পুলিশ। সেইসঙ্গে যান চলাচলেও কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করে। গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভের বার্ষিকী উপলক্ষ্যে প্রতিবাদের জন্য প্রস্তুতি নিতে যাওয়া বিক্ষোভকারীদের আটকানোর জন্য এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
রবিবার এক্স অ্যাকাউন্টে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিপচুম্বা মুরকমেন বলেন, বিক্ষোভ চলাকালে জীবন ও সম্পদের সুরক্ষা দিতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে যাতে শান্তিপূর্ণ মিছিলকে ব্যবহার করে কোনও অপরাধী বা দুষ্টচক্র বিশৃঙ্খলা, ধ্বংস বা সহিংসতা সৃষ্টি করতে না পারে।
রবিবার অজ্ঞাত পরিচয় কিছু ব্যক্তি কেনিয়া হিউম্যান রাইটস কমিশনের অফিসে জোর করে ঢুকে সোমবারের বিক্ষোভের আগের এক সংবাদ সম্মেলন বন্ধ করে দেয়। এই ঘটনায় কমিশনের বোর্ড সদস্য আহত হন বলে জানান কমিশনের কর্মী আর্নেস্ট করনেল।