সুদান সংকট গোটা অঞ্চলে প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন দেশটির প্রতিবেশী ছয় দেশের নেতা। তারা বলেছেন, সুদানের বিবদমান পক্ষগুলো অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিতে না এলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে। মিসরের রাজধানী কায়রোতে বৃহস্পতিবার বৈঠকের পর এসব জানান তারা ।
মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি আয়োজিত বৈঠকে ইথিওপিয়া, দক্ষিণ সুদান, চাদ, ইরিত্রিয়া, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র এবং লিবিয়ার নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ক্ষমতার ভাগাভাগি নিয়ে গত ১৫ এপ্রিল থেকে সুদানের দুই জেনারেলের মধ্যে শুরু হয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। রাজধানী খার্তুম পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। সামরিক এবং আধাসামরিক বাহিনীর তুমুল লড়াইয়ের মুখে লাখ লাখ মানুষ প্রতিবেশী দেশগুলোকে পালিয়ে গেছে। নিহত হন অন্তত ৩ হাজার মানুষ।
বৈঠকে নেতারা সামগ্রিকভাবে এই অঞ্চলের জন্য সংঘাতের হুমকির কথা স্বীকার করেন। তারা যুদ্ধরত পক্ষগুলোকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
পরে বৈঠক থেকে সিদ্ধান্ত আসে যে প্রতিবেশী দেশগুলোর মাধ্যমে মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুবিধার্থে এবং সুদানের বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে সংকট সমাধানের জন্য একটি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হবে।
সিসি বলেন, ‘সুদানের সার্বভৌমত্ব ও ঐক্যের প্রতি শ্রদ্ধার পাশাপাশি দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করে অন্তর্ভুক্তিমূলক সংলাপের মাধ্যমে সংকট সমাধান করতে হবে।’
আরব লীগের মহাসচিব আহমেদ আবুল গীত সুদানের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, ‘আরব লীগ সংঘাতের অবসান ঘটাতে জাতিসংঘ ও আফ্রিকান ইউনিয়নের সঙ্গে সমন্বয় ও সহযোগিতা করতে আগ্রহী।’
লিবিয়ার প্রেসিডেন্সিয়াল কাউন্সিলের প্রধান মোহাম্মদ আল-মানফি বলেন, ‘বিরোধের অবসানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে সুদানি দলগুলোকে এক হতে হবে।’
অন্যদিকে ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ বলেন, ‘যুদ্ধরত পক্ষগুলো যদি শান্তি প্রচেষ্টায় সাড়া দিতে ব্যর্থ হয়, তবে সুদানের প্রতিবেশীরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে।’
সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের প্রেসিডেন্ট ফস্টিন আর্চেঞ্জ তোয়াদেরা দুর্বল সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের কারণে অস্ত্রের বিস্তার সম্পর্কে সতর্ক করেছেন।
যুদ্ধরত পক্ষগুলোকে সংলাপের টেবিলে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সুদানে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা অর্জনের জন্য প্রতিবেশী দেশগুলোকে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিতে হবে।’
সূত্র: আরব নিউজ