মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, শতাধিক দেশের পণ্যে বাড়তি শুল্ক আরোপের সময়সীমা আর পেছানো হবে না। মঙ্গলবার ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেছেন, ১ আগস্ট থেকেই শুল্ক কার্যকর হবে। কোনও সময়সীমা বাড়ানো হবে না। এর আগে সোমবার তিনি এই সময়সীমার বিষয়ে নমনীয়তার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
সোমবার এক নৈশভোজে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেছিলেন, এই সময়সীমা কঠোর। তবে শতভাগ নয়। তখন অনেকেই ভেবেছিলেন, হয়তো যুক্তরাষ্ট্র আবারও নমনীয় হবে।
এপ্রিল মাসে ট্রাম্প প্রশাসন প্রায় সব বাণিজ্য অংশীদারের ওপর ১০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করে। তবে কয়েক ডজন দেশের জন্য আলাদা করে নির্ধারিত শুল্ক হার জুলাই ৯ পর্যন্ত স্থগিত ছিল। এরপর তা আবার পিছিয়ে ১ আগস্ট করা হয়।
মঙ্গলবার ট্রাম্প বলেছেন, যেসব দেশকে চিঠি পাঠানো হয়েছে, তারা যেন বুঝে নেয়—এটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। শুল্ক আরোপের বিষয়ে নতুন করে কোনও ছাড় বা সময় দেওয়া হবে না।
চিঠিগুলোর মধ্যে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার নেতাদের কাছে পাঠানো বার্তায় ট্রাম্প বলেছেন, দুই দেশের পণ্যে ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হবে। এছাড়া ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও মালয়েশিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশকে ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কের আওতায় আনা হয়েছে।
বাংলাদেশসহ এসব দেশের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের অভিযোগ, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যে যথেষ্ট পারস্পরিক সুবিধা দিচ্ছে না। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যেসব দেশ প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেবে, তাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তবে কিছু দেশের ক্ষেত্রে শুল্কহার কমানো হয়েছে। লাওস ও কম্বোডিয়ার মতো দেশের ক্ষেত্রে পূর্ব ঘোষণা থেকে কিছুটা নমনীয়তা দেখা গেছে।
এই চিঠিতে ট্রাম্প আরও বলেছেন, যদি কোনও দেশ তাদের বাণিজ্যনীতি পরিবর্তনের প্রস্তুতি দেখায়, তবে আমরাও এই চিঠির বিষয়বস্তু পর্যালোচনার কথা ভাবতে পারি। আমাদের সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে এই শুল্ক বাড়তেও পারে, কমতেও পারে।
ট্রাম্প প্রশাসন বর্তমানে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রয়েছে। কারণ এপ্রিলের শুল্ক হুমকির পর উল্লেখযোগ্য চুক্তির সংখ্যা খুবই সীমিত। এখন পর্যন্ত যুক্তরাজ্য ও ভিয়েতনামের সঙ্গে দুটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং চীনের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি শুল্ক ব্যবস্থা কিছুটা শিথিল করা হয়েছে।
ট্রাম্পের এই সর্বশেষ ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য অংশীদারদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। তবে হোয়াইট হাউজ বলছে, শুল্ক কার্যকর করে ট্রাম্প বিশ্বের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য আরও লাভজনক বাণিজ্য কাঠামো তৈরি করতে চান।