ইমরান খানকে গ্রেফতারের পর দেশজুড়ে ছড়িয়ে সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, ‘দেশের শত্রুদের’ বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বুধবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এই হুঁশিয়ারি জানান। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য ডন এ খবর জানিয়েছে।
মঙ্গলবার নাটকীয়ভাবে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ইমরান খানকে গ্রেফতার করা হয়। এতে পাকিস্তানজুড়ে পিটিআই কর্মীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ হয়ে ওঠে সহিংস। বুধবার একটি বিশেষ আদালতে হাজির করার পর ৮ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে তাকে।
ভাষণে পিটিআই কর্মীদের কঠোর ভাষায় সমালোচনা করে বলেছেন, তাদের কর্মকাণ্ড ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। সন্ত্রাসী ও দেশের শত্রুদের অবিলম্বে তাদের রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে হবে।
তিনি সতর্ক করে বলেছেন, অন্যথায় তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক সাজার মুখোমুখি হতে হবে। আমাদের জীবনের চেয়ে রাষ্ট্র ও পাকিস্তানের আদর্শ বেশি মূল্যবান। আমরা এর বিরুদ্ধে কাউকে ষড়যন্ত্র করতে দেব না। তাদের জঘন্য ষড়যন্ত্রকে সফল হতেও দেব না আমরা। সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করা সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড এবং রাষ্ট্রের প্রতি শত্রুতা।
শাহবাজ শরিফ বলেছেন, রাজনৈতিক নেতাদের প্রকৃত ভূমিকা ও দায়িত্ব হলো তাদের কর্মীদের আইনের বাইরে যেতে না দেওয়া। রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমরা যেকোনও গ্রেফতারে খুশি হতে পারি না। এটি আমাদের জীবনের তিক্ত মুহূর্ত যা আমাদের অতিক্রম করে আসতে হয়েছে।
তিনি বলেছেন, পিটিআই চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আল-কাদির ট্রাস্ট মামরায় সব প্রমাণ হাজির রয়েছে। প্রমাণের ভিত্তিতে তদন্ত পরিচালনা করছে দুর্নীতি দমন সংস্থা।
শাহবাজ শরিফ ভাষণের শুরুতে বলেছেন পাকিস্তানের রাজনৈতিক ইতিহাস খুব তিক্ততায় ভরা। রাজনীতিতে প্রতিশোধ পরায়ণতা কখনও ভালো ফল নিয়ে আসেনি।
পিটিআই-এর শাসনামলে রাজনৈতিক বিরোধীদের পরিবার ও আত্মীয়রা রেহাই পায়নি বলে অভিযোগ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে বিক্ষোভকারীদের সতর্ক করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার বিভিন্ন সামরিক অবকাঠামোতে হামলার কথা উল্লেখ করে আইএসপিআর দিনটিকে অন্ধকার অধ্যায় হিসেবে উল্লেখ করেছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আইন নিজের হাতে তুলে নিলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সেনাবাহিনীর ওপর যদি কোনও হামলা হয় এবং পাকিস্তানে যারা গৃহযুদ্ধ ঘটানোর পাঁয়তারা করবে তাদেরকে ছাড় দেওয়া হবে না।