সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে সফরে গিয়ে পরিস্থিতিকে উসকে দিয়েছেন তাইওয়ানের ভাইস প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম লাই। তার সফরের জবাবে শনিবার আকাশ ও সাগর পথে বড় ধরনের সামরিক মহড়ায় নেমে ওয়াশিংটন ও তাইপ'কে ‘কঠোর বার্তা’ দিয়েছে চীন।
তাইওয়ান প্রণালী ঘিরে ফের মহড়া চালিয়ে নিজেদের শক্তির জানান দিলো চীন। আধুনিক যুদ্ধবিমান ও সাগরে জাহাজ নিয়ে রণ কৌশল দেখিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী। তাদের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে তাইওয়ানের ভাইস প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্র সফরের প্রতিবাদে এই মহড়া।
ভাইস প্রেসিডেন্ট লাই সম্প্রতি প্যারাগুয়ে সফরে যাওয়ার পথে যাত্রা বিরতিতে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করেন। বাইডেন প্রশাসনের কয়েকজন প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় তার। নিউ ইয়র্ক সিটিতে গত রবিবার সমর্থকদের উদ্দেশে লাই বলেন, ‘যদি তাইওয়ান নিরাপদে থাকে, তাহলে বিশ্ব নিরাপদ, তাইওয়ান প্রণালীতে শান্তি বজায় থাকলে, বিশ্বে শান্তি থাকবে। কোনও কর্তৃত্ববাদীর হুমকির মুখে তার দেশ কখনও পিছপা হবে না।’
শনিবারের প্রতিক্রিয়ায় তাইওয়ান জানিয়েছে, এমন মহড়া শুরু করে বেইজিং নিজেদের ‘সামরিক মানসিকতা’ তুলে ধরেছে।
চীনের পিপল’স লিবারেশন আর্মির ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে জানায়, তাইওয়ানের আশপাশে যৌথ নৌ ও বিমান মহড়া শুরু করেছে। এর উদ্দেশ্য পিএলএ’র আকাশ ও সমুদ্রপথে নিয়ন্ত্রণ দখল করা এবং বাস্তব যুদ্ধের পরিস্থিতিতে লড়াইয়ের সক্ষমতা যাচাই করা।
এ বিষয়ে পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের একজন মুখপাত্র চীনের সিনহুয়া নিউজকে বলেছেন, টহল ও মহড়া তাইওয়ানের স্বাধীনতা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জন্য একটা কঠোর সতর্কবার্তা।
সিসিটিভির প্রতিবেদনে জানা গেছে, ক্ষেপণাস্ত্র সজ্জিত জাহাজ ও যুদ্ধবিমান অংশ নিয়েছে। যেগুলো তাইওয়ানকে কীভাবে ঘিরে ধরা হবে তার মহড়া দিচ্ছে।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিক নিন্দা জানিয়ে বলেছে, ‘বেইজিংয়ের এ ধরনের মহড়ায় নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে বাহিনী মোতায়েন করেছে। সামরিক মহড়া তাইওয়ান উপকূলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বয়ে আনতে পারে না। এতে নিজেদের (চীন) সামরিক মানসিকতার চিত্র তুলে ধরেছে।’
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এদিন চীনের ৪২টি যুদ্ধবিমান ও আটটি জাহাজ অংশ নেয়। এর মধ্যে ২৬টি ফাইটার মধ্যরেখা অতিক্রম। এই মধ্যরেখা চীন ও তাইওয়ানকে আলাদা করেছে।
তাইওয়ান নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্র দাবি করে আসলেও হাতেগোনা কয়েকটি দেশ ছাড়া স্বীকৃতি দেয়নি। তবে তাইওয়ান নিজেদের বিচ্ছিন্ন একটি ভূখণ্ড হিসেবে বিবেচনা করে। দ্বীপটিকে শিগগিরই বেইজিংয়ের সঙ্গে একীভূত করার ঘোষণাও দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
সূত্র: আল জাজিরা