ক্যাম্পাসে ধর্ষণের অভিযোগে পাকিস্তানের পূর্ব পাঞ্জাব প্রদেশের ব্যাপক বিক্ষোভে নেমেছে শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) দুই দিনের জন্য প্রদেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এক প্রতিবেদনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ এই খবর জানিয়েছে।
পাকিস্তানের সবচেয়ে জনবহুল এই প্রদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় আনুমানিক এক কোটি ৮০ লাখ শিক্ষার্থী প্রভাবিত হবে।
পূর্বাঞ্চলীয় লাহোর শহরে কথিত ধর্ষণের খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে কলেজ ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বাড়ে এবং চারটি শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পাঞ্জাবের গুজরাটে বুধবার বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে এক নিরাপত্তারক্ষী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় একজনকে আটকও করেছে পুলিশ।
পাঞ্জাবের রাজধানী লাহোরে বেসরকারি পাঞ্জাব গ্রুপ অব কলেজের ক্যাম্পাসে ধর্ষণের কোনও ঘটনা ঘটেছে বলে অস্বীকার করেছে সরকার ও পুলিশ। বেশ কয়েকজন সাংবাদিকসহ প্রায় তিন ডজন মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়িয়েছিল যা বিক্ষোভের সূত্রপাত করেছে।
শিক্ষার্থীরা অবশ্য শুক্রবার সন্ধ্যায় আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী উত্তর-পশ্চিম খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে কথিত অভিযুক্তের বিচারের দাবিতে একটি সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে।
রাওয়ালপিন্ডির গ্যারিসন শহরে কয়েকশ শিক্ষার্থী একটি কলেজ ভবন লুটপাট করার একদিন পর, পাঞ্জাবের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তখন পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে এবং ছাত্রদের ওপর লাটিচার্জ করে। এসময় আড়াইশোর বেশি মানুষকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বিক্ষোভটি স্বতঃস্ফূর্তভাবে শুরু হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। কেননা, ১০৯৮৪ সাল থেকে পাকিস্তানে ছাত্র ইউনিয়ন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর যুব শাখা থাকলেও ছাত্রদের প্রতিনিধিত্বকারী কোনও সংগঠন নেই।
পৃথকভাবে কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পিটিআই ঘোষণা দেয়, দলটি দেশের সংবিধানের যেকোনও সংশোধনীর বিরোধিতা করতে শুক্রবার সারাদেশে বিক্ষোভ করবে।
ইমরানের সমর্থকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ ২০২২ সালে সংসদে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ইমরানকে স্থলাভিষিক্ত করেন। তিনি নিজের পছন্দের বিচারক নিয়োগ দিকে চান এবং সুপ্রিম কোর্টের সমান্তরালে একটি নতুন সাংবিধানিক আদালত গঠন করতে চান। তবে এমন অভিযোগ অভিযোগ অস্বীকার করেছে সরকার।
পাকিস্তানে নারীদের বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতা একটি সাধারণ ঘটনা। তবে রক্ষণশীল এই দেশে কলঙ্কের ভয়ে এসব ঘটনা কম রিপোর্ট করা হয়। তাই দেশটিতে এ নিয়ে প্রতিবাদের ঘটনাও বিরল।