নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনার দাবিতে জড়ো হওয়া হাজারো বিক্ষোভকারীকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করেছে। এ ঘটনার পর স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ওই এলাকায় কারফিউ জারি করেছে। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
২০০৮ সালে সংসদে রাজতন্ত্র বিলুপ্তির পর নেপালে ফেডারেল ও রিপাবলিকান শাসন ব্যবস্থা চালু হয়। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্নীতি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধীরগতির কারণে রাজতন্ত্র ও হিন্দু রাষ্ট্রধর্ম ফিরিয়ে আনার দাবি জোরালো হচ্ছে।
বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্টের কাছে জড়ো হয়ে ‘রাজা ও দেশ জীবন থেকেও প্রিয়’ স্লোগান দিতে থাকেন। ৫৫ বছর বয়সী বিক্ষোভকারী মিনা সুবেদি এএফপিকে বলেন, দেশের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল। মানুষের ভালো চাকরি, শান্তি ও সুশাসন পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরিস্থিতি শুধু খারাপের দিকেই গেছে।
পুলিশ মুখপাত্র দিনেশ কুমার আচার্য জানান, বিক্ষোভকারীরা নিষিদ্ধ এলাকায় ঢুকে ভবনে ভাঙচুর শুরু করায় তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করা হয়।
বিরোধী দলগুলো রাজধানীর অন্য স্থানে ‘প্রজাতান্ত্রিক ব্যবস্থা রক্ষা’ করতে হাজারো মানুষ জড়ো করেছে। সাবেক গেরিলা নেতা ও তিনবারের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহল বলেন, নেপালিরা অতীতে ফিরে যাবে না। তারা হয়তো সাহস পেয়েছে কারণ আমরা প্রজাতন্ত্র সমর্থকরা জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারিনি।
৭৭ বছর বয়সী সাবেক রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহ সম্প্রতি সমর্থকদের সঙ্গে কয়েকটি জনসভায় অংশ নিয়েছেন। ২০০১ সালে তার ভাই রাজা বীরেন্দ্র ও রাজপরিবারের বেশিরভাগ সদস্য প্রাসাদে নিহত হওয়ার পর তিনি সিংহাসনে বসেন। ২০০৫ সালে তিনি সংবিধান স্থগিত ও সংসদ ভেঙে দিলে গণআন্দোলন শুরু হয়। ২০০৮ সালে সংসদ নেপালের ২৪০ বছরের রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এই দাবি আসলে বর্তমান শাসন ব্যবস্থায় জনগণের হতাশারই প্রতিফলন। তবে প্রজাতন্ত্র ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা কম বলেই মনে করছেন তারা।