কাশ্মীর হামলাকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কেবল বেড়েই চলেছে। তার ধারাবাহিকতায় এবার পাকিস্তানি পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করলো ভারত সরকার। দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য বিভাগ শুক্রবার (২ মে) এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পাকিস্তানে উৎপন্ন বা সেখান থেকে কেবল রফতানিকৃত যে কোনও পণ্যের আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করছে ভারত সরকার। অবাধ আমদানি বা অন্য কোনও শর্তের আওতায় আমদানিযোগ্য হলেও পরবর্তী নির্দেশনা দেওয়ার আগ পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।
এই নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা জড়িত দাবি করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় নিরাপত্তা এবং জননীতির স্বার্থে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ভারত সরকারের অনুমোদন ব্যতীত এই আদেশে কোনও ব্যতিক্রম হবে না।
গত ২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। নিহতদের মধ্যে একজন নেপালি পর্যটক ও একজন স্থানীয় ঘোড়া চালকও ছিলেন। এ হামলার সঙ্গে পাকিস্তানি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর যোগসূত্রের অভিযোগ সামনে আসার পর দুই দেশের মধ্যে তিক্ততা আরও বেড়ে যায়।
হিমালয়ের পাদদেশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরকে নিজেদের দখলে নিতে ভারত ও পাকিস্তান উভয়ই মরিয়া। এ অঞ্চল নিয়ে ইতোমধ্যে একাধিক যুদ্ধ, সশস্ত্র বিদ্রোহ এবং কূটনৈতিক সংঘর্ষ হয়েছে।
ভারত হামলার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করলেও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইসলামাবাদ। তারা বরং পাল্টা দাবি করেছে যে, হামলার পেছনে ভারতের ষড়যন্ত্র রয়েছে। তাদের কাছে পাকিস্তানে ভারতের সম্ভাব্য সামরিক হামলার বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্যও রয়েছে বলে তারা দাবি করছে।
সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে ভারত। ইন্দাস নদীর জলবণ্টন চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়া, পাকিস্তান মিশনের সামরিক পরামর্শকদের দেশত্যাগের আদেশ, বিমান চলাচলে বিধিনিষেধের পর এবার আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করলো দিল্লি।
জবাবে পাকিস্তানও একাধিক পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে। সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ, ভারতীয় বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা, ভারতীয় কূটনীতিক বহিষ্কারসহ আরও পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে। পাশাপাশি ইসলামাবাদ হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, নদীর পানি প্রবাহ বন্ধ করতে ভারতের প্রচেষ্টা যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে গণ্য করা হবে।