কলকাতায় গ্রেফতার হওয়া পাকিস্তানের নাগরিক আজাদ মল্লিকের বিরুদ্ধে পাসপোর্ট জালিয়াতির মামলায় ৮০ পাতার চার্জশিট ও প্রায় চার হাজার পাতার নথিপত্র জমা দিল ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। চার্জশিটে উঠে এসেছে এমন কিছু তথ্য, যা শুধু কলকাতা নয়, গোটা প্রশাসনকে চমকে দিয়েছে।
ইডির দাবি, আজাদের কাছে ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পরিচয়পত্র মিলেছে। তার থেকে উদ্ধার হয়েছে অন্তত ৮টি ভুয়া নথি। যার মধ্যে রয়েছে করাচির ড্রাইভিং লাইসেন্স, বাংলাদেশের পাসপোর্ট ও ড্রাইভিং লাইসেন্স, ভারতের আধার কার্ড, প্যান কার্ড, দুটি ভোটার আইডি ও ভারতীয় পাসপোর্ট।
তদন্তকারীদের মতে, আজাদ দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ভুয়া নথি তৈরি করছিল। শুধু তাই নয়, পাকিস্তানের নাগরিকদের সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগের প্রমাণও পাওয়া গেছে। ইডির হাতে এসেছে একাধিক গ্রুপ চ্যাটের স্ক্রিনশট ও প্রযুক্তিগত তথ্যপ্রমাণ।
আরও গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। আজাদ কেবল ভুয়া পাসপোর্ট নয়, বিভিন্ন দেশের জন্য জাল ভিসা তৈরির কাজেও যুক্ত ছিল। বিশেষ করে দুবাই, কম্বোডিয়া ও মালয়শিয়ার মতো দেশ ছিল এই চক্রের লক্ষ্য।
তদন্তে জানা গেছে, ইউপিআই পদ্ধতিতে বাংলাদেশে অর্থ স্থানান্তরও করত আজাদ। ইডির তথ্য অনুযায়ী, তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অন্তত ৫০ কোটি রুপির আর্থিক লেনদেনের সন্ধান মিলেছে।
প্রাথমিকভাবে পাসপোর্ট জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেফতার হলেও তদন্তে আজাদের পাকিস্তানি পরিচয় প্রকাশ্যে আসতেই নতুন মোড় নেয়। তদন্তকারীদের অনুমান, আজাদ বহুদিন ধরেই ভারতের মাটিতে বসেই একটি আন্তর্জাতিক জাল নথি ও পাচার চক্র চালাচ্ছিল।
বর্তমানে আজাদ ইডির হেফাজতে রয়েছে। জেরা করে চক্রে আর কারা জড়িত তা জানার চেষ্টা চলছে। এটিই এখন তদন্তকারীদের মূল লক্ষ্য।