X
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪
২৩ বৈশাখ ১৪৩১

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কি এরদোয়ানের শেষের শুরু?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৭ এপ্রিল ২০২৩, ১৩:১৫আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২৩, ১৬:৪৬

তুরস্কের আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ১৪ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ানকে নির্বাচনে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হবে। দুই দশক ক্ষমতায় থাকার পর এবারই তিনি সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে নির্বাচনে লড়াই করবেন।

তুর্কি রাজধানীর একটি নির্বাচনি জেলার এক তরুণ ভোটার বলেন, তুরস্কের জন্য এরদোয়ান পিতৃতুল্য ব্যক্তি। ২০ বছর ধরে তিনি দেশ পরিচালনা করছেন। আমি মনে করি না যে তাকে দেশ পরিচালনা থেকে সরানো অসম্ভব। কিন্তু তার বিরোধীদের মধ্যে এমন কোনও নেতা নেই যিনি তার স্থান নেবেন।

অপর এক তরুণ ভোটার দীর্ঘদিন ধরে তুরস্কের বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপল’স পার্টি (সিএইচপি)-এর সমর্থক। কান নামের এই ভোটার বলেছেন, এরদোয়ান খুব ভালো দেশ পরিচালনা করেছেন বলে আমার মনে হয়। আমি চাই ক্ষমতায় যারা আছেন তারা মানুষের কথা শুনুন। আমি আসলেই মনে করি এবার এরদোয়ানের পতন হতে পারে অথবা অন্তত আমি এমনটি আশা করি।

জনমত জরিপে দেখা গেছে, এবারের নির্বাচনে এরদোয়ানকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। তার সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল কিলিকদারোগলু। সাবেক হিসাবরক্ষক এই আমলা জরিপে কিছুটা এগিয়ে রয়েছেন। 

তুরস্কের বিরোধিরা ছয়টি দলের একটি জোট। এর নেতৃত্বে রয়েছে কিলিকদারোগলু। তাদের মূল লক্ষ্য হলো এরদোয়ানকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা। তারা মনে করছেন, দেশ যে সংকটের মধ্যে রয়েছে তাতে করে এরদোয়ানকে পরাজিত করা তাদের জন্য সহজ হবে। অর্থনৈতিক সংকট ও বিপর্যয়কর ভূমিকম্পে দেশটির পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। যা এরদোয়ানের জন্য ইতিবাচক নয়।

রাজধানী আঙ্কারার এক বয়স্ক ভোটার হাসান বলেছেন, জীবনে প্রথমবারের মতো তিনি একেপি বা এরদোয়ানকে ভোট দেবেন না। কারণ তারা আমার সব টাকা-পয়সা কেড়ে নিয়েছে। এখানে আমরা যে কাপড় বিক্রি করছি তা পাইকারি দামে কিনতে আমাদের আগের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। আমার ভাড়া বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি।

ডেমোক্র্যাসি অ্যান্ড প্রগ্রেস পার্টির নেতা ইব্রাহিম জানাকসি মনে করেন, অর্থনীতির পরিস্থিতি স্পষ্ট, মূল্যস্ফীতি, দারিদ্র। প্রেসিডেন্ট শাসিত ব্যবস্থায় এগুলোর অবনতি হয়েছে। এরদোয়ান মন্ত্রীদের এবং বিদেশি সংস্থাকে দায়ী করে আসছেন। কিন্তু মানুষ এখন স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে এটি একজনের শাসিত ব্যবস্থা। ফলে এই ফলাফলের জন্য শুধু এক ব্যক্তি দায়ী।

দুই দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা এরদোয়ান ও তার একেপি পার্টিকে নির্বাচনে পরাজিত করা সহজ কাজ হবে না বিরোধীদের। অনেক জরিপে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, এরদোয়ানবিরোধীরা পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারে। তবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনে জয়ী না হলে প্রতিশ্রুতি মোতাবেক সংবিধান সংশোধন করতে পারবে না বিরোধীরা। এক্ষেত্রে পার্লামেন্টে একেপি পার্টি জয়ী না হলেও এরদোয়ান যদি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তাহলে তিনি ক্ষমতা আরও নিজের কুক্ষিগত করতে পারেন। এতে করে বিরোধীরা কোনও সুফল পাবে না।

তবে কিলিকদারোগলুর এক সহকারী ও এক নিষ্ঠ সমর্থক ওনুরসাল আদিগুজেল বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি আমাদের জন্য পার্লামেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার চেয়ে এরদোয়ানকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারানো সহজ হতে পারে। দুই বছর আগে কিলিকদারোগলুকে এরদোয়ানের কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচনা করা হতো না। কিন্তু এখন তিনি জরিপে শীর্ষস্থানে রয়েছেন। সর্বোপরি তিনি হলেন এমন ব্যক্তি যিনি তুরস্কে শান্তি স্থাপন করতে পারবেন। তিনি এরদোয়ানের মতো বিভাজনের ভাষা ব্যবহার করছেন না।

পরিবর্তনের জন্য এরদোয়ানের বিকল্প হিসেবে কিলিকদারোগলুকে সামনে আনছেন দল ও সমর্থকরা। ইব্রাহিম জানাকসি বলেন, এরদোয়ান হারবেন এবং কিলিকদারোগলু নির্বাচনে জয়ী হবেন­–এই বিষয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী। প্রার্থী ইতোমধ্যে বেছে নেওয়া হয়েছে। কিলিকদারোগলু কতটা যোগ্য তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নাই। আমরা মনে করি তিনি উপযুক্ত।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

 

/এএ/
সম্পর্কিত
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি?রাফাহ শহরের একাংশ থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যেতে বললো ইসরায়েল
কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্রের মহড়া চালাবে রাশিয়া
সর্বশেষ খবর
ঝিনাইদহ-১ আসনের উপনির্বাচন স্থগিত
ঝিনাইদহ-১ আসনের উপনির্বাচন স্থগিত
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
মিল্টনের আশ্রমের দায়িত্ব যার হাতে গেলো
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
চাসিভ ইয়ার ঘিরে হাজার হাজার সেনা জড়ো করছে রাশিয়া
ওপারের গোলার বিকট শব্দে কেঁপে উঠছে টেকনাফ
ওপারের গোলার বিকট শব্দে কেঁপে উঠছে টেকনাফ
সর্বাধিক পঠিত
অভিযোগের শেষ নেই মাদ্রাসায়, চলছে শুদ্ধি অভিযান
অভিযোগের শেষ নেই মাদ্রাসায়, চলছে শুদ্ধি অভিযান
নিজেদের তৈরি ভেহিকেল পেরুকে উপহার দিলো সেনাবাহিনী
নিজেদের তৈরি ভেহিকেল পেরুকে উপহার দিলো সেনাবাহিনী
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
কোন পথে এগোচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ?
কোন পথে এগোচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ?
এই ৬ বীজ নিয়মিত খেলে সুস্থ থাকতে পারবেন দীর্ঘদিন
এই ৬ বীজ নিয়মিত খেলে সুস্থ থাকতে পারবেন দীর্ঘদিন