বছরের অধিকাংশ সময় ঘূর্ণাবর্তে আটকে থাকা বিশ্বের সবচেয়ে বড় হিমবাহটি আবারও সরে যাচ্ছে। এবার এটি উত্তর দিকে সরে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তারা মনে করছেন, হিমবাহটি দক্ষিণ মহাসাগর ছেড়ে আটলান্টিক মহাসাগরে প্রবেশ করবে। এমনটি হলে সেখানে উষ্ণ পানির কারণে এটি গলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এই খবর জানিয়েছে।
এ২৩এ নামের এ হিমবাহটি আয়তনে ৩ হাজার ৮০০ বর্গকিলোমিটার (১ হাজার ৫০০ বর্গমাইল), যা আকারে ইংল্যান্ডের গ্রেটার লন্ডনের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। এর ঘনত্ব ৪০০ মিটার (১ হাজার ৩১২ ফুট)।
১৯৮৬ সালে এটি অ্যান্টার্কটিকা মহাসাগর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং পরবর্তীতে এই মহাসাগরের উপকূলেই আটকে যায়।
হিমবাহটির পুরুত্ব এতটাই বেশি যে এর নিম্নভাগ দক্ষিণ মহাসাগরের অংশ ওয়েডেল সাগরের তলদেশ স্পর্শ করেছিল। আর সেখানেই ৩০ বছরের বেশি সময় স্থির ছিল এটি।
তবে হিমবাহটি ২০২০ সাল থেকে নতুন করে উত্তর দিকে সরে যেতে শুরু করেছে বলে জানান বিজ্ঞানীরা। এর আগে, এটি সাউথ অর্কনে দ্বীপপুঞ্জের কাছে এক বিশাল পানির ঘূর্ণাবর্তে ঘুরছিল।
শুক্রবার ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভে (বিএএস) বলেছে, হিমবাহটি এখন আরও উত্তর দিকে প্রবাহিত হচ্ছে।
বিএএস-এর একজন সমুদ্রবিজ্ঞানী ড. অ্যান্ড্রু মেইজার্স বলেছেন, ‘এ২৩এ আটকে থাকার পর আবারও চলতে শুরু করেছে এমনটি দেখতে পাওয়া রোমাঞ্চকর। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখতে আগ্রহী, অ্যান্টার্কটিকা থেকে সরে যাওয়া অন্যান্য বড় বড় হিমবাহগুলো যে পথে সরে গেছে এটিও একই পথে যায় কি-না।’
বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, এ২৩এ অ্যান্টার্কটিকা মহাসাগর থেকে সরে আটলান্টিক মহাসাগরে যাবে যেখানে এটিকে উষ্ণ পানির মোকাবিলা করতে হবে। এরফলে একপর্যায়ে সেটি ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গলে যাবে।
যেসব অঞ্চলে ঘেষে হিমবাহটি সরে গেছে সেখানকার বাস্তুতন্ত্রের ওপর এর প্রভাব পরীক্ষা করছেন ড. মেইজার্স ও বিএএস। এক বছর আগে, আরআরএস স্যার ডেভিড অ্যাটেনবরো জাহাজে থাকা গবেষকরা এ২৩এ–এর চারপাশের পানি থেকে তথ্য–উপাত্ত সংগ্রহ করেছেন।