ইউরোপের ঊর্ধ্বতন সামরিক নেতাদের নিয়ে একটি বৈঠকের আয়োজন করেছে যুক্তরাজ্য। ইউক্রেনের জন্য প্রস্তাবিত শান্তিরক্ষা বাহিনী গঠনের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করতে বৃহস্পতিবার বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ২০টির বেশি দেশ এই জোটে অংশ নিচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমার বৃহস্পতিবার দুপুরে বারোতে একটি পরিদর্শন শেষে এই বৈঠকে অংশ নেবেন। বারোতে তিনি যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রজন্মের পারমাণবিক সাবমেরিনগুলোর মধ্যে একটি ‘এইচএমএস ড্রেডনট’-এর কীল স্থাপন করবেন।
পশ্চিমা নেতৃত্বাধীন ইউক্রেনের জন্য শান্তিরক্ষা বাহিনী গঠনের পরিকল্পনা এখন অপারেশনাল পর্যায়ে এগোচ্ছে বলে জানা গেছে। ব্রিটেন ও ফ্রান্সের নেতৃত্বে ‘ইচ্ছুক জোট’-এর সদস্য দেশগুলোর ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারা নর্থউডে যুক্তরাজ্যের পার্মানেন্ট জয়েন্ট হেডকোয়ার্টারে একত্রিত হয়ে এই বাহিনী কীভাবে কাজ করবে তা নিয়ে আলোচনা করবেন।
সশস্ত্র বাহিনী মন্ত্রী লুক পোলার্ড বলেছেন, তারা চান এই জোট একটি ‘বিশ্বাসযোগ্য বাহিনী’ হোক, যা ইউক্রেনকে ‘স্থায়ী শান্তি’ উপভোগ করতে এবং ‘পুনর্গঠন ও পুনরায় সশস্ত্র’ হতে সাহায্য করবে। তিনি বিবিসি ব্রেকফাস্টকে বলেন, ‘পুতিন ইউক্রেনে জয়ী হলে থামবেন না। যদি তিনি সমগ্র ইউক্রেনকে অধীনস্থ করেন—যা তার পরিকল্পনা এবং বহু বছর ধরে রয়েছে—তবে তিনি কেবল পুনরায় সশস্ত্র হবেন এবং তার প্রভাব ও আধিপত্য কোথায় বিস্তৃত করা যায় তা খুঁজবেন। এটি আমাদের দেশের জন্য, নিশ্চিতভাবে আমাদের ইউরোপীয় বন্ধুদের জন্য, সুবিধাজনক নয়।’
পোলার্ড বলেন, ইউক্রেনে শান্তি নিশ্চিত করতে ‘কিছু সেনা মোতায়েন’ করা প্রয়োজন হতে পারে, তবে এই বাহিনীতে ‘বিমান ও নৌবাহিনীর শক্তিশালী উপস্থিতি’ও থাকবে।
তবে এখনও কিছু বড় বাধা রয়ে গেছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, মস্কো ইউক্রেনে ন্যাটো সদস্য দেশগুলোর কোনও সেনা উপস্থিতি সহ্য করবে না, তাদের ভূমিকা যাই হোক না কেন। যুক্তরাষ্ট্রও প্রয়োজনীয় বিমান সহযোগিতা দেওয়ার ক্ষেত্রে অনিচ্ছুক বলে জানা গেছে। সম্ভাব্য সদস্য দেশগুলো মার্কিন আকাশ প্রতিরক্ষার দাবি জানিয়েছে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, ক্রেমলিন যুক্তরাজ্যের পারমাণবিক অস্ত্রাগারকে সম্মান করে, কারণ ‘আমাদের নিজস্ব স্বাধীন প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে এবং আমরা ন্যাটোর প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’। তিনি বলেন, ‘এটি স্পষ্ট যে তারা এটিকে একটি বিশ্বাসযোগ্য সামর্থ্য হিসেবে মূল্যায়ন করে। এবং এটি নিঃসন্দেহে তাই।’
প্রতিরক্ষা সচিব জন হিলি যুক্তরাজ্যের পারমাণবিক প্রতিরোধ ক্ষমতার প্রতি সরকারের ‘অটল’ প্রতিশ্রুতির ওপর জোর দেন, যাকে তিনি ‘আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা এবং আমাদের ন্যাটো মিত্রদের নিরাপত্তার চূড়ান্ত গ্যারান্টি’ বলে অভিহিত করেন।