X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

সিপিএম চাঁদা কোম্পানি, ত্রিপুরায় তোপ মোদির

রক্তিম দাশ
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২২:১৯আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২২:১৯

ত্রিপুরায় সিংহাসন ধরে রাখতে মরিয়া বিজেপি প্রচারে ব্যবহার করলো তাদের সবচেয়ে বড় তুরুপের তাস। ৬০ আসনের ত্রিপুরা বিধানসভায় দলকে জেতাতে এবার আসরে নামলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিধানসভার নির্বাচনি প্রচারে গিয়ে সিপিএমকে চাঁদা কোম্পানি বলে তোপ দাগলেন তিনি। সিপিএমের আমলে ক্যাডার রাজ চলত বলে দাবি করে শনিবার মোদি বলেন, ‘ত্রিপুরার মানুষকে চাঁদাবাজদের হাত থেকে মুক্ত করেছে বিজেপি।’

আমবাসায় বিজেপি প্রার্থীদের সমর্থনে বিশাল জনসভায় বাম-কংগ্রেস জোটকে নিশানা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘কংগ্রেস বা বামেরা মানুষের সেবা করতে পারে না। ওরা শুধু জনকল্যাণমুখী প্রকল্পগুলো বন্ধ করে দিতে জানে। একটা সময় ত্রিপুরায় চাঁদার রাজত্ব ছিল। এখানে একটাই শব্দ ছিল, চাঁদা। বাড়ি করতে চাঁদা, রাস্তা করতে চাঁদা, কোনও কাজ করলেই চাঁদা দিতে হত। যে কোনও কাজে কমিউনিস্টদের চাঁদা দিতে হত। থানায় যেতে হলেও চাঁদা দিতে হত। কারণ থানাও সিপিএম ক্যাডারদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। বামপন্থীরা সব কব্জা করে রেখেছিল। কোনও আইনের শাসন ছিল না। আমাদের কর্মীদের ওপর অত্যাচার হয়েছে। এখন আর চাঁদা দিতে হয় না, আগে সব কাজের টাকা দিতে হত। অন্য কোনও রাজনৈতিক দল তাদের পতাকা লাগাতে পারত না। এখন আর তা হয় না। আমাদের সরকার ক্ষমতায় এসে সেই চাঁদা বন্ধ করে দিয়েছে। আজ এখানে আমার মাথায় পাগড়ি পড়ানো হলো। আসলে এটা পাগড়ি নয়। এটা আমার কাছে মায়ের আশীর্বাদ। মা আমার মাথায় হাত রাখলেন। বর্তমান সরকার রাজ্যে ভয়, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজির পরিবেশ শেষ করেছে। মুক্ত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। নারীরা সিপিএম শাসনে অত্যাচারের শিকার হতেন। আজ ত্রিপুরায় নারীর সশক্তিকরণ চলছে। একসময় ত্রিপুরায় ধলাই জেলা সারা দেশের পিছিয়ে পড়া জেলা ছিল। বিজেপি শাসনে ধলাই জেলা ১১০টি প্রত্যাশি জেলার একটি। এই জেলার সঙ্গে গোটা রাজ্যেই উন্নয়ন নতুন মাত্রা পেয়েছে। বিজেপির মানুষের বাস্তব চাহিদার দিকে লক্ষ্যে রেখে সংকল্পপত্র প্রকাশ করেছে। এই প্রতিশ্রুতির প্রত্যেকটি পালন করা হবে। এই পরিস্থিতির দিকে লক্ষ্য রেখে ১৬ ফেব্রুয়ারি আপনার ভোট বিজেপি ও সহযোগী দলগুলোকে দিন। আপনার একটি ভোটেই ত্রিপুরা বাম অপশাসন থেকে মুক্ত হয়েছিল। আপনার ভোটেই ত্রিপুরায় ডাবল ইঞ্জিন সরকার উন্নয়নের গতিকে আরও শক্তিশালী করবে।’

এদিনের সমাবেশে আক্ষরিক অর্থেই জনপ্লাবন দেখে আপ্লুত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী মোদি। তিনি বলেন, ‘ডাবল ইঞ্জিন সরকারের দৌলতে ত্রিপুরায় দ্বিগুণ গতিতে উন্নয়ন হচ্ছে। আবাস, আরোগ্য ও আয়-এই ত্রিশক্তি ত্রিপুরার মানুষের জীবন সহজতর করেছে। গত পাঁচ বছরে রাজ্যের প্রত্যেক মানুষের জীবনে উন্নয়ন পৌঁছে দিয়েছে রাজ্য সরকার। গত পাঁচ বছরে রাজ্যের বিজেপি সরকার তিন লাখ পরিবারকে পাকা ঘর করে দিয়েছে। ডাবল ইঞ্জিনের এটাই গতিবেগ। এটাই বিজেপি সরকারের কাজের পদ্ধতি। যারা মিথ্যা বলে বিজেপি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার স্বপ্ন দেখছেন তাদের যোগ্য জবাব দেবে জনতা। এরাই সরকারের সুরক্ষাকবচ। ত্রিপুরার প্রায় ২ লাখ মানুষ আয়ুষ্মান যোজনার সাহায্য পেয়েছেন। যদি বিজেপির সরকার না থাকত, তাহলে এই সুবিধা কি পেতেন মানুষ? কংগ্রেস ও সিপিএম শুধু গরীবদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে জানে।’

সিপিএম চাঁদা কোম্পানি, ত্রিপুরায় তোপ মোদির

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “আপনারা যা চান, আমরাও সেটাই চাই। আমরা আপনাদের কথাই তুলে ধরেছি। আপনাদের মুখ্যমন্ত্রী মাণিক সাহা আপনাদের মনের কথা শুনেই কাজ করছেন। আমি আগেই বলেছিলাম আমরা ‘হিরা’ নিয়ে এগোচ্ছি। হাইওয়ে, ইন্টারনেট, রেল, এয়ারওয়েজ। চেয়ে দেখুন নয়া রাস্তা হচ্ছে। যারা বিমানবন্দরে আসেন তারা দেখে অবাক হয়ে যান। গ্রামে গ্রামে অপটিক্যাল ফাইবার ও মোবাইল টাওয়ার বসিয়ে কাজ করা হচ্ছে। তিন গুণ কাজ হয়ে গেছে এই সংযোগে। সরকারি প্রকল্পের সার্থক রূপায়ণের মাধ্যমে ত্রিপুরা ধীরে ধীরে গ্লোবাল বা বৈশ্বিক হয়ে ওঠছে। বাংলাদেশের বন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে ত্রিপুরায় অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জিত হবে। বিজেপি আপনাদের জীবনকে সুস্থ ও সুন্দর করার জন্য কাজ করছে। বাড়ি বাড়ি পানীয় জল, উজ্জ্বলা যোজনাসহ প্রকল্পের মাধ্যমে আপনাদের সমস্যা দূর করার কাজ করছে বিজেপি। কংগ্রেস ও বাম দলগুলো কখনও আপনাদের সেবা করতে পারবে না বরং এই জনকল্যাণমূখী প্রকল্পগুলোকে বন্ধ করে দিতে চাইছে। জনজাতি সমাজ আবাস, আরোগ্য ও আয়ের ত্রিশক্তির সহচেয়ে বড় লাভ পাচ্ছেন জনজাতি সমাজ। নব্বইটিরও বেশি বনজ সামগ্রীর ওপর সহায়ক মূল্য নিশ্চিত করেছে বিজেপি সরকার। এটাই ডাবল ইঞ্জিনের উন্নয়ন। এই গতিতে লাভবান হয়েছেন সরকারি কর্মচারীরাও। এখানে সরকারি কর্মচারীদের সুবিধা ছিল না। এখন তাদের বেতন বা অন্যান্য সুবিধা বাড়ানো হয়েছে।  আগামী দিনে বিজেপি সরকার উন্নয়নকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করবে আপনাদের আশীর্বাদে। কংগ্রেস-বাম ছলচাতুরী করেছে। এরা কুশাসন করতে চাইছে। এদের পেছন থেকে বেশ কিছু দল সমর্থন করছে। এদের কথায় ফাঁদে পা দেবেন না। ১৬ ফেব্রুয়ারি পদ্ম চিহ্নের বোতাম টিপবেন। সবার ঘরে ঘরে যান, আর বলবেন-আমাদের মোদিজি এসেছিলেন, আর উনি আপনাদের প্রণাম জানিয়েছেন। আমার এই কথা সবার কাছে পৌঁছে দিন।’”

 

/এএ/
সম্পর্কিত
তাইওয়ান প্রণালিতে আবারও চীনা সামরিক বিমান শনাক্ত
সিরিয়ায় ইসরায়েলি হামলায় ৮ সেনা আহত
রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারে ইউক্রেন: গোয়েন্দা কর্মকর্তা
সর্বশেষ খবর
রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ২৯
রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ২৯
২৫ জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা শনিবার বন্ধ
২৫ জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা শনিবার বন্ধ
তিন মাঠে সাকিব, মোসাদ্দেক, জাকিরের তাণ্ডব
তিন মাঠে সাকিব, মোসাদ্দেক, জাকিরের তাণ্ডব
খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান প্রধান বিচারপতির
খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান প্রধান বিচারপতির
সর্বাধিক পঠিত
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কুমিল্লায় বজ্রাঘাতে ৪ জনের মৃত্যু
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
কামরাঙ্গীরচরে নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি দিলো ডিএসসিসি
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম