X
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪
১৭ বৈশাখ ১৪৩১

নারীর হাতেই ফিলিস্তিনি জাতিমুক্তি আন্দোলনের ভবিষ্যৎ?

বাধন অধিকারী
২২ এপ্রিল ২০১৮, ১১:৩৯আপডেট : ০৮ মার্চ ২০২২, ১৮:১৪

পৃথিবীর বৃহত্তম উন্মুক্ত কারাগার গাজা উপত্যকার সীমান্ত অঞ্চল। বেড়ার একদিকে স্তূপীকৃত বালিতে স্নাইপার তাক করে রেখেছেন শত শত ইসরায়েলি সেনা। বেড়ার অপর প্রান্তে ফিলিস্তিনি তরুণীরা। কাঁদানে গ্যাসের কবল থেকে বাঁচতে ঐতিহ্যগত হিজাবে চুল আর মুখ ঢেকে নিয়েছেন তারা। পেছনে তরুণদের রেখে তারাই রয়েছেন লড়াইয়ের অগ্রভাগে। চলমান ‘গ্রেট রিটার্ন মার্চ’ কর্মসূচিতে খোলা হয়েছে নারীদের পৃথক ফ্রন্ট। বিক্ষোভের পাশাপাশি ইসরায়েলি রাষ্ট্রের বর্ণবাদী ও পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের বুদ্ধিবৃত্তিক মোকাবিলা এবং তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির মধ্য দিয়ে ফিলিস্তিনি জাতিমুক্তির লড়াইকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন তারা। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সাম্প্রতিক গবেষণাতে দেখা গেছে, সশস্ত্র লড়াইয়ের চেয়ে অহিংস আন্দোলন গণতন্ত্র ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজের পথে এগিয়ে যেতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। আর নারীর উপস্থিতি আন্দোলনকে অহিংস পথে তাড়িত করে। ফিলিস্তিনের ‘গ্রেট রিটার্ন মার্চ’ কর্মসূচিতেও নারীর অংশগ্রহণ জাতিমুক্তির আন্দোলনকে এরইমধ্যে নতুন মাত্রা দিয়েছে। অর্জিত হতে শুরু করেছে কৌশলগত সফলতা। হামাস-ফাতাহ দূরত্ব অতিক্রম করে নারীর অংশগ্রহণ ঐক্যবদ্ধ জাতিমুক্তির আন্দোলনের তাড়নাকে সামনে এনেছে।

নারীর হাতেই ফিলিস্তিনি জাতিমুক্তি আন্দোলনের ভবিষ্যৎ?

১৯৭৬ সালের ৩০ মার্চ ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ফিলিস্তিনের ভূমি দখল করে ইহুদি বসতি নির্মাণের প্রতিবাদ করায় ছয় ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়। পরের বছর থেকেই ৩০ মার্চ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত পরবর্তী ছয় সপ্তাহকে ভূমি দিবস হিসেবে পালন করে আসছে ফিলিস্তিনিরা। আল জাজিরার খবর অনুযায়ী, ৩০ মার্চ শুরু হওয়া ভূমি দিবসের কর্মসূচি শুরু হওয়ার দিন থেকে ২০ এপ্রিল শুক্রবার পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর স্নাইপারে ৩০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ১৬০০জন। নিহতদের মধ্যে শিশু থাকলেও কোনও নারী নেই। আহত নারীর সংখ্যা ১৬০। তাদের অংশগ্রহণের ব্যাপকতা এবারের ভূমি দিবসের কর্মসূচিকে করে তুলেছে স্বতন্ত্র। তাই শুক্রবারের (২০ এপ্রিল) বিক্ষোভকে ‘উইম্যানস মার্চ অব গাজা’ শিরোনামে ডাকা হয়েছিল।

ছোট বোন আর কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে ২৬ বছর বয়সী তরুণী তাগরেদ আল বাওয়ারি ছিলেন শুক্রবারের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে। আল জাজিরাকে তিনি বলেছেন, ‘নারীদের গুলি করতে খানিকটা দ্বিধা করে ইসরায়েলি সেনারা। একটা পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় আমাদের বসবাস। গাজাবাসীর একাংশের কাছে প্রতিরোধ যুদ্ধের সামনের কাতারে নারীদের অবস্থানকে অদ্ভূত মনে হতে পারে।’ তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই মনোভাবের বদল ঘটেছে বলে মনে করছেন তিনি। জানিয়েছেন, বিক্ষোভে নারীদের অংশগ্রহণকে মেনে নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। এমনকী তাদেরকে উৎসাহিতও করা হচ্ছে। তার কথায়, ‘অবস্থাটা হলো, শেষপর্যন্ত তারা বুঝতে পেরেছে, প্রতিরোধ কেবল পুরুষের নয়, আদতে সমগ্র গাজাবাসীর। নারীদেরও সেখানে অংশগ্রহণ থাকা উচিত’। 

নারীর হাতেই ফিলিস্তিনি জাতিমুক্তি আন্দোলনের ভবিষ্যৎ?

প্রতিরোধ যুদ্ধে যোগ দেওয়ার পর থেকে বাওয়ারি বহুবার ইসরায়েলি বাহিনীর কাঁদানে গ্যাসের কবলে পড়েছেন। মাঝে মাঝে তার মনে হয়েছে, যেন মরেই যাচ্ছেন এইবার। তবে কিছুতেই বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে সরে আসার কথা মনে হয়নি তার। অঙ্গীকার ধরে রেখেছেন তিনি। বলেছেন, ‘জানি না কী কারণে, মন থেকেই এক অদ্ভূত সাহস পাচ্ছি আমি, যতোই সীমান্তের দিকে এগিয়ে যাই, আরও সামনে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আমার মনোবল আর সাহস ততোই বাড়তে থাকে। সম্ভবত আমাদের বাড়ির কাছাকাছি আসার কারণেই এমন হচ্ছিলো।’ বাড়ির কাছাকাছি অঞ্চল বলতে বাওয়ারি ১৯৪৮ সালে দখলীকৃত ফিলিস্তিনি ভূমির কথা বলেছেন। সেখানেই তার পূর্ব প্রজন্মের বাড়ি ছিল। বাওয়ারি বলেছেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি আহেদ তামিমি আর ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে তার সাহসী অবস্থান থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েছি।’

বিক্ষোভের জন্য বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বিক্ষোভকারীরা তাঁবু গেড়েছেন মার্চের শেষ থেকেই। ওই তাঁবুতে থাকা অস্থায়ী মেডিক্যাল শিবিরে বহু নারী সেবিকার ভূমিকা পালন করছেন। প্রত্যেক দিন বারো ঘণ্টা করে তারা শ্রম দিচ্ছেন আহতদের সেবায়। শুধু তাই নয়, স্বতঃপ্রণোদিতভাবে বহু নারী খাবার বানানো থেকে শুরু করে তথ্য আদান-প্রদানের কাজও করছেন। এমনই একজন ২০ বছর বয়সী তরুণী রাজন আল নাজ্জার। ১৩ এপ্রিল ইসরায়েলি সেনাদের ছোড়া গ্যাস হামলায় আহত ভাঙা হাত নিয়েও তিনি বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। যদিও অন্য সঙ্গীরা তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে বলেছিলেন। বিক্ষোভরত নাজ্জার বলেন, ‘ইসরায়েলিরা যতজনকে ইচ্ছে গুলি করছে। এমন অবস্থায় আমি মানুষের পাশে থাকতে না পারলে আমার লজ্জা লাগবে। আহতদের সেবা দেওয়া আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য।’

নারীর হাতেই ফিলিস্তিনি জাতিমুক্তি আন্দোলনের ভবিষ্যৎ?

নিহত এক বিক্ষোভকারীর শেষ বক্তব্য আজো মনে পড়ে নাজ্জারের। মৃত্যুর আগে নাজ্জারকে নিজের মা আর ভাইকে দেখার জন্য অনুরোধ করেছিলেন ওই ব্যক্তি। ইসরাইলি সেনাদের স্নাইপারের গুলিতে নিহত হন তিনি। ওই ঘটনা নাজ্জারকে আমূলে নাড়িয়ে দেয়।

ইসরায়েলি সেনাকে চড় মেরে জাতিমুক্তি আন্দোলনের প্রতীকে পরিণত হয়েছিলেন আহেদ তামিমি। তার মতো করেই ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের আরেক প্রতীকে রূপান্তরিত হয়েছেন আবু ওলা। খুজা অঞ্চলের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অনন্য ভূমিকা রেখেছেন তিনি। কাঁদানে গ্যাসের কবলে পড়া ৪ বিক্ষোভকারীকে রক্ষা করেছেন আবু ওলা। বলেন, ‘আমি ওই ৪ ব্যক্তিকে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় পাই। আমি বাড়ি থেকে আনা পেঁয়াজ ও পারফিউমের ব্যাগটি হাতে তুলে নিই।  তাদের উদ্ধার করি। এরপরই ইসরায়েলি স্নাইপার থেকে গুলি বর্ষিত হতে থাকে আমাদের দিকে’। তবে ততোক্ষণে ওই ৪ তরুণ আবু ওলাকে ঘিরে মানববর্ম রচনা করেন। ফিলিস্তিনি সাংবাদিক আশরাফ ওমরা এই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করেছেন। সামাজিক মাধ্যমে ছবিটি ভাইরাল হয়েছে। এ বিষয়ে তার কথা, ‘ছবিটি নিয়ে আমি ভীত ছিলাম। আমার পরিবারের কেমন প্রতিক্রিয়া হয় তা নিয়ে শঙ্কা কাজ করছিল। তবে আমার পরিবার খুবই খুশি। তারা আমার ভূমিকায় গর্বিত’।

নারীর হাতেই ফিলিস্তিনি জাতিমুক্তি আন্দোলনের ভবিষ্যৎ?

 

চলমান কর্মসূচিতে নারীর অংশগ্রহণের ব্যাপকতা ঐতিহাসিকতার মর্যাদা পেয়েছে এরইমধ্যে। ২০ এপ্রিলের বিক্ষোভ মিছিলটি ‘উইম্যানস মার্চ অব গাজা’ আখ্যা পেয়েছে।  আন্দোলনকারীদের মধ্যে ফাত্তাহ এবং হামাস কেন্দ্রিক একটা দ্বিধা-বিভক্তি আছে। কিন্তু ফিলিস্তিনি নারীদের ক্ষেত্রে এই দ্বন্দ্ব একেবারেই নেই। বাওয়ারি আল জজিরার সাংবাদিকের কাছে জানান, নারীদের অংশগ্রহণ হামাস-ফাত্তাহ দূরত্ব মোচনের প্রচেষ্টায় সফল হচ্ছে। বলেন, ‘আমার মনে হয়, নারীদের লড়াইয়ের এই ধারা হামাস আর ফাতাহর মনেও দাগ কেটেছে। ফিলিস্তিনি স্বাধীনতার লড়াইয়ে আত্মাহুতি দেওয়া হামাস আর ফাত্তাহর সদস্যের মধ্যে কোনও ভেদ নেই। দুই অংশের শহীদের জন্যই আমাদের একই রকমের শোক হয়। হৃদয়ে জায়গা করে একই ধরনের সমবেদনা। উইমেন প্রটেস্ট মার্চ মানুষের নজরে সাড়া ফেলেছে। কেননা, এখানে হামাস-ফাতাহ আলাদা আলাদা পতাকা নেই। এখানকার সব পতাকা ফিলিস্তিনের।’

নারীর হাতেই ফিলিস্তিনি জাতিমুক্তি আন্দোলনের ভবিষ্যৎ?

সীমান্তে লড়াইয়ের পাশপাশি ফিলিস্তিনি নারীরা ইন্টারনেটেও ইসরায়েলি সেনা বাহিনীকে মোকাবিলা করছেন। ইসরায়েলি সেনা মুখপাত্র সম্প্রতি বিক্ষোভকারী নারীদের ঘরে ফেরার পরামর্শ দিয়েছেন। ফিলিস্তিনি প্রতিরোধে যুক্ত নারীদের নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘সেইসব ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিতদের মধ্যে নারীত্বের বৈশিষ্ট্য কোথায়?’ এর প্রতিবাদে সরব হয়েছেন ফিলিস্তিনি নারীরা। একজন ফিলিস্তিনি নারী লিখেছেন, ‘না, অ্যাভিচ্যা আদ্রেয়ি, বাড়ির রান্নাঘরই কেবল নারীর আশ্রয় নয়। ফিলিস্তিনি নারীরা সবসময়ই জাতিমুক্তি আর ভূমির অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের অগ্রভাবে ছিল।’  সাংবাদিক খালেদ দিয়াব আদ্রেয়ির পোস্টকে ‘পুরুষতন্ত্র ও বর্ণবাদের একটি কুৎসিত মিশ্রণ’ আখ্যা দিয়েছেন। নারী বিক্ষোভকারী মুনা আবু সামে মিডলইস্ট আইকে বলেছেন, ‘আমি তাকে বলবো, তিনি ভুল। আমরা সঠিক অবস্থানে রয়েছি আর পুরুষরা আমাদের পেছনে রয়েছে। আর আমরা আমাদের দেশে ফিরে যাওয়ার অধিকারের দাবি করছি’। তুকা আল গালবান নামের ১৫ বছরের কিশোরী বলেছেন, ‘ঘরই নারীর একমাত্র গন্তব্য নয়। পুরুষের পাশাপাশি প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশ নেওয়াও নারীর দায়িত্ব। নিজ ভূমির অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার লড়াইয়ে সব মানুষের সমর্থন দরকার।’

উইম্যান’স কমিটি অব মার্চ’র প্রধান ইকতিমাল হামাদ বলেছেন, নারীরা ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠী আর তাদের জাতিমুক্তির আন্দোলনের অবিচ্ছেদ্য স্তম্ভ। প্রতিরোধী মাতা, অগ্রজ সহোদরা কিংবা ছোট্ট কন্যা হোক না কেন;  নারী মাত্রই তাদের প্রতিরোধে থাকে উদারতা ও ধৈর্য্যশীলতার শক্তি। ফিলিস্তিনের প্রতিরোধী নারীরা বিশ্বকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিচ্ছে, তাদের প্রতিরোধ অহিংস ও শান্তিপূর্ণ’।

নারীর হাতেই ফিলিস্তিনি জাতিমুক্তি আন্দোলনের ভবিষ্যৎ?

কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশিত মার্কিন অধ্যাপক ও রাজনীতি বিশ্লেষক এরিকা চ্যানোওয়েচ এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের কৌশল প্রণেতা মারিয়া ডে স্টিফেন তাদের যৌথ গবেষণামূলক গ্রন্থে ‘বেসামরিক প্রতিরোধে কেন ফল পাওয়া যায়’ (হোয়াই সিভিল রেজিসট্যান্স ওয়ার্ক) দেখিয়েছেন, অন্য আরও অনেক প্রতিরোধ যুদ্ধের মতো করেই ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের ক্ষেত্রেও সহিংসতার চেয়ে অহিংস বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে অপেক্ষাকৃত তাৎপর্যপূর্ণ ফলাফল পাওয়া সম্ভব। এগিয়ে যাওয়া সম্ভব একটি ন্যায়ভিত্তিক ও অপেক্ষাকৃত গণতান্ত্রিক সমাজের পথে।

নারীর হাতেই ফিলিস্তিনি জাতিমুক্তি আন্দোলনের ভবিষ্যৎ?

ইসরায়েলি বাহিনী স্বাধীনতাকামী তরুণ ফিলিস্তিনিদের সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে থাকে। তাদের পাথর আর গুলতির লড়াইকে তারা সন্ত্রাসবাদ নামে হাজির করে। কৌশলগত কারণেই তাই নারীদের লড়াইয়ের অগ্রভাগে রেখে স্বাধীনতা আন্দোলন বেগবান করার পথে হাঁটছে ফিলিস্তিনিরা। তবে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধযুদ্ধে নারীর অংশগ্রহণ আজকের নয়। অতীতেও বহুবার তারা শান্তিপূর্ণ সফল বিক্ষোভ কর্মসূচির নেত্বত্ব দিয়েছেন।  প্রথম ইন্তিফাদাতেই এর সূচনা হয়েছিল। নায়লা অ্যান্ড দ্য আপরাইজিং নামের সাম্প্রতিক এক চলচ্চিত্রে পরিচালক জুলিয়া বাছা দেখিয়েছেন, নারীরাই ছিলেন প্রথম ইন্তিফাদার প্রাণ। ‘গবেষণাতে দেখা গেছে প্রতিরোধ আন্দোলনে নারীরা যোগ দিলে তখন শ্রেয়তর ও গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণের লড়াইয়ে সফলতা আসে,’ ফেব্রুয়ারিতে মিডল ইস্ট আইকে বলেছিলেন বাছা। তার মন্তব্য, ‘আন্দোলনে যখন লৈঙ্গিক সমতার প্রশ্ন ওঠে, তখন সেই আন্দোলন ক্রমাগত অহিংস চরিত্র অর্জন করতে থাকে, যা স্থিতিশীল, গণতান্ত্রিক ও বৈচিত্র্যময় সমাজ বিনির্মাণে সফলতা আনতে শুরু করে।’ ফিলিস্তিনি জাতিমুক্তি আন্দোলন সম্প্রতি এই পথেই ধাবিত হচ্ছে।

নারীর হাতেই ফিলিস্তিনি জাতিমুক্তি আন্দোলনের ভবিষ্যৎ?

১৩ এপ্রিল মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক আল মনিটরের খবর থেকে জানা গিয়েছিল, গাজা উপত্যকার পূর্বাঞ্চলজুড়ে অহিংস বিক্ষোভের উত্তাপ ছড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন গ্রেট রিটার্ন মার্চ সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের জাতীয় কমিশনের নারী পরিষদ। ‌ওই সময় পরিষদের প্রধান হামাদ জানিয়েছেন, ‘ফিলিস্তিনি জাতিমুক্তির লড়াইয়ে পুরুষদের সঙ্গে নারীরাও সামিল হয়েছে। সে কারণে কমিশন বিক্ষোভ কর্মসূচি সফল করতে নারীদের ৫টি উপকমিটি গঠন করেছে। এই উপকমিটির প্রতিটিতে ৫ থেকে ১১ জন নারী সদস্য রয়েছে।  উত্তাঞ্চলীয় গাজা উপত্যকা, গাজা শহর, মধ্য গাজা উপত্যকা খান ইউনুস আর রাফায় বিক্ষোভ কর্মসূচি সফল করতে এই ৫টি উপকমিটি সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

১৩ এপ্রিল আল মনিটরের প্রতিবেদনে উঠে এসেছিল ইবতিবাম নাসার নামের ৫২ বছর বয়সী এক নারীর কথা। আল মনিটরকে তিনি বলেছিলেন, জাতিমুক্তির আন্দোলনে অংশ নিয়ে নতুন প্রজন্মকে আমরা সচেতন করে তোলার চেষ্টা করছি। বলছি ১৯৪৮ সালে দখল হয়ে যাওয়া গ্রাম আর আমাদের পূর্বপ্রজন্মের  অতীত ইতিহাস-ঐতিহ্যের কথা। ২০ এপ্রিল হামাদ আল জাজিরাকে বলেন, আমরা তরুণ প্রজন্মের নারীদের মধ্যে ফিলিস্তিনি জাতিমুক্তির আন্দোলন নিয়ে সজাগ হয়ে ওঠার বীজ বপন করতে চাই।

 

 

 

/এএ/
সম্পর্কিত
চুক্তি হোক বা না হোক রাফাহতে ইসরায়েলি অভিযান চলবে: নেতানিয়াহু
হামাসকে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব মেনে নেওয়ার আহ্বান ব্লিঙ্কেনের
গাজায় যুদ্ধবিরতি নাকি রাফাহতে হামলারাজনৈতিক সংশয়ের মুখোমুখি নেতানিয়াহু
সর্বশেষ খবর
অফিস টাইমে চিকিৎসক প্রাইভেট প্র্যাকটিসে থাকলে ব্যবস্থা
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারিঅফিস টাইমে চিকিৎসক প্রাইভেট প্র্যাকটিসে থাকলে ব্যবস্থা
চুক্তি হোক বা না হোক রাফাহতে ইসরায়েলি অভিযান চলবে: নেতানিয়াহু
চুক্তি হোক বা না হোক রাফাহতে ইসরায়েলি অভিযান চলবে: নেতানিয়াহু
 ক্রীড়া পরিষদে আগের মতোই অফিস করছেন সচিব
 ক্রীড়া পরিষদে আগের মতোই অফিস করছেন সচিব
‘অতি বাম অতি ডান সবই এক হয়ে গেছে, কীভাবে হলো জানি না’
‘অতি বাম অতি ডান সবই এক হয়ে গেছে, কীভাবে হলো জানি না’
সর্বাধিক পঠিত
এসি কেনার আগে মনে রাখতে হবে এই ৭ বিষয়
এসি কেনার আগে মনে রাখতে হবে এই ৭ বিষয়
ট্রাকের চাকায় পিষে দেওয়া হলো ৬ হাজার কেজি আম
ট্রাকের চাকায় পিষে দেওয়া হলো ৬ হাজার কেজি আম
বেতন বৈষম্যে উচ্চশিক্ষার মান হারাচ্ছে বেসরকারি কলেজগুলো
বেতন বৈষম্যে উচ্চশিক্ষার মান হারাচ্ছে বেসরকারি কলেজগুলো
সিএনজির রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু করতে বিআরটিএ অফিস ঘেরাও
সিএনজির রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু করতে বিআরটিএ অফিস ঘেরাও
সিস্টেম লস কমাতে সার্বক্ষণিক ম্যাজিস্ট্রেট চায় পেট্রোবাংলা
সিস্টেম লস কমাতে সার্বক্ষণিক ম্যাজিস্ট্রেট চায় পেট্রোবাংলা