সংযুক্ত আরব আমিরাতে এক সপ্তাহের মধ্যে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের একাধিক হামলার ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে আমিরাতি কর্তৃপক্ষ। এ ইস্যুতে মিত্র সৌদি আরবকে সঙ্গে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে দেশটি। মার্কিন প্রেসিডেন্টের দফতর হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে ত্রিপাক্ষিক এই বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ইয়াহু নিউজ।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, এক সপ্তাহের মধ্যে ইরান-সমর্থিত যোদ্ধারা সংযুক্ত আরব আমিরাতে দ্বিতীয় বারের মতো হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র এবং তার উপসাগরীয় মিত্ররা ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছে।
সোমবার হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুগুলোতে চলমান হুথি হামলা নিয়ে আলোচনার জন্য এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব হামলার ফলে উভয় দেশেই বেসামরিক মানুষের হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
তিন দেশ কিভাবে হুথি বিদ্রোহীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে চায়, সে ব্যাপারে অবশ্য বিস্তারিত কিছু জানায়নি হোয়াইট হাউস।
সংযুক্ত আরব আমিরাত সৌদি আরবের নেতৃত্বে একটি সামরিক জোটের অংশ যারা ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী এই বিদ্রোহীরা গত সপ্তাহে আবু ধাবির বিমানবন্দর এবং একটি জ্বালানি ডিপোতে ড্রোন হামলা চালায়। এতে তিন জন নিহত হয়। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই সোমবার হুথি বিদ্রোহীদের দুইটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহতের দাবি করে সংযুক্ত আরব আমিরাত। বিদ্রোহীদের তরফে মধ্যপ্রাচ্যের আর্থিক ও পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত আমিরাতে হামলার অঙ্গীকার করা হয়েছে। এমন বাস্তবতায় উপসাগরীয় অঞ্চলের দুই ঘনিষ্ঠ মিত্রের সঙ্গে বৈঠকে বসে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এপি জানিয়েছে, সোমবার আবু ধাবিতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘটনা পারস্য উপসাগরজুড়ে বিদ্যমান উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। আগে যেখানে আমিরাতি ভূখণ্ডের কাছাকাছি এলাকাকে হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হতো এখন সেখানে খোদ দেশটির রাজধানীকে টার্গেটে পরিণত করা হচ্ছে। সোমবারের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সময় আবু ধাবির আল-ধাফরা বিমান ঘাঁটিতে থাকা মার্কিন সেনারা বাংকারে আশ্রয় নিয়ে তাদের নিজস্ব প্যাট্রিয়ট মিসাইল দিয়ে পাল্টা হামলা চালায়।
বছরের পর বছর ধরে বিপজ্জনক প্রতিবেশীদের মধ্যেও নিজেকে একটি নিরাপদ বাঁক হিসেবে তুলে ধরেছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। তবে এ ধরনের হামলা নিঃসন্দেহে দেশটির ব্যবসাবান্ধব, পর্যটনকেন্দ্রিক ইমেজকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।