ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। শুক্রবার এক সপ্তাহব্যাপী অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর শুরু হওয়া বোমাবর্ষণে শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। গাজার অনেকে বোমা থেকে রক্ষা পেতে হাসপাতাল ও রাস্তায় ছুটে গেছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে চালানো ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১০৯ জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। আহত হয়েছেন আরও অনেক ফিলিস্তিনি। অন্তত আটটি বাড়িতে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান থেকে ফেলা বোমা আঘাত হেনেছে।
সরেজমিন থেকে রয়টার্সের প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ভোরের দিকেই দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের পূর্ব দিকের এলাকায় তীব্র বোমাবর্ষণ শুরু হয়। লোকজন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটতে থাকেন।
উত্তর গাজায় বিভিন্ন ধ্বংসাবশেষ থেকে উড়তে থাকা ধোঁয়া ইসরায়েল থেকে দৃশ্যমান ছিল। কুকুরের ডাকের সঙ্গে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছিল।
গাজা থেকে ছোড়া রকেটের কারণে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে সতর্ক সংকেত বাজানো হয়।
গাজার চিকিৎসাকর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজন বলেছেন, বোমাবর্ষণের তীব্রতা বেশি ছিল খান ইউনিস ও রাফাহ এলাকায়। উত্তর গাজা থেকে পালিয়ে হাজারো মানুষ এই দুটি এলাকায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। মধ্য ও উত্তরের এলাকাতেও হামলা হয়েছে।
গাজার বাসিন্দারা বলছেন, দক্ষিণাংশে বোমাবর্ষণের ফলে উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলের হামলা বিস্তৃত হতে পারে। এর আগে দক্ষিণাঞ্চলকে তুলনামূলকভাবে নিরাপদ বলে মনে করা হচ্ছিল।
শুক্রবার দক্ষিণ গাজার কিছু অঞ্চল ছাড়তে ফিলিস্তিনিদের বলেছে ইসরায়েল। খান ইউনিস শরণার্থী শিবিরের কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় উড়োজাহাজ থেকে লিফলেট ফেলে বেসামরিক নাগরিকদেরকে সতর্ক করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। বাসিন্দাদেরকে গাজার দক্ষিণে গাজা-মিসর সীমান্ত ক্রসিং রাফাহর দিকে সরে যেতে বলেছে ইসরায়েল।
এছাড়া শতাধিক জেলায় বিভক্ত করে গাজার একটি মানচিত্র প্রকাশ করেছে ইসরায়েল। দেশটি দাবি করেছে, ভবিষ্যতে কোন এলাকা নিরাপদ তা চিহ্নিত করতে এই মানচিত্র ব্যবহার করা হবে।
জাতিসংঘ বলেছে, যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার কারণে চরম জরুরি মানবিক পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে। জেনেভায় সংস্থাটির মানবিক কার্যালয়ের মুখপাত্র জেন্স লায়েরকে বলেছেন, পৃথিবীর নরক ফিরেছে গাজায়।
অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির আগে গাজায় টানা ৫১ দিন আগ্রাসন চালিয়ে প্রায় ১৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে ইসরায়েল। নিহতদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু। নিখোঁজ রয়েছেন আরও কয়েক হাজার।