গাজায় আগ্রাসনের সময়ে যেসব ফিলিস্তিনিকে আটক করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তাদের বন্দি অবস্থায় নির্যাতনের তথ্য ফাঁস করেছে এক ইসরায়েলি। শুক্রবার (১০ মে) মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ খবর জানিয়েছে।
সিএনএনকে ওই ব্যক্তি বলেছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ফিলিস্তিনি বন্দিদের চোখ বেঁধে রাখা এবং ডায়াপার পরতে বাধ্য করার মতো নির্যাতন করা হয়েছে। তিনি এমন নির্যাতনের প্রত্যক্ষদর্শী।
ইসরায়েলি তথ্য ফাঁসকারী বলেছেন, ফিলিস্তিনি বন্দিদের নড়াচড়া করতে দেওয়া হয়নি। তাদেরকে সোজা বসিয়ে রাখা হতো। কথা বলতে দেওয়া হতো না। এমনকি চোখ বাঁধা অবস্থাতেও উঁকি দেওয়ার অনুমতি নেই বন্দিদের।
সূত্র মতে, বন্দিদের পাহারায় নিয়োজিতদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে চিৎকার করে নীরবতা বজায় রাখতে। এছাড়া যারা নির্দেশ মানছে না তাদের চিহ্নিত করার দায়িত্বও প্রহরীদের দেওয়া হয়েছিল।
তথ্য ফাঁসকারী বলেছেন, এই বন্দি শিবিরটি গাজা থেকে ১৮ মাইল দূরে। এটি দুই অংশে বিভক্ত। এখানে একটি ৭০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে রাখা হয়েছে কঠোরভাবে, যাদের নড়াচড়ার সুযোগ একেবারে কম। এছাড়া একটি হাসপাতাল রয়েছে। এখানে নড়তে চড়তে অক্ষম বন্দিদের ডায়াপার পরিয়ে রাখা হয়েছে এবং পাইপ দিয়ে খাওয়ানো হচ্ছে।
তার মতে, তথ্য আদায়ের জন্য নয়, প্রতিশোধমূলক অভিপ্রায় থেকে বন্দিদের মারধর করা হয়। নিয়মিত তল্লাশিতে রক্ষীরা ঘুমন্ত বন্দিদের ওপর কুকুর ছেড়ে দিনে। কখনও কখনও সেনারা কক্ষে প্রবেশের সময় সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়া হয়।
৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাস যোদ্ধাদের হামলার পর গাজায় আগ্রাসন শুরু করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। গাজা বন্দি করা ফিলিস্তিনিদের রাখার জন্য তিনটি সামরিক স্থাপনাকে বন্দি শিবিরে পরিণত করা হয়েছে।
ফিলিস্তিনি বন্দিদের নির্যাতনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। এক বিবৃতিতে তারা সিএনএনকে বলেছে, জিম্মিদের প্রতি উপযুক্ত আচরণ নিশ্চিত করা হয়। কোনও অভিযোগ থাকলে তা খতিয়ে দেখা হবে এবং সে অনুসারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।