লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ’য় যোগ দিতে প্রস্তুত মধ্যপ্রাচ্যের ইরান-সমর্থিত হাজার হাজার যোদ্ধা। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিতে চান তারা। ইরান-সমর্থিত দলগুলোর কর্মকর্তা ও বিশ্লেষকরা বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে বর্তমান সংঘাত পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে রূপ নিতে পারে আশঙ্কায় এমন প্রস্তাব দিয়েছেন তারা। রবিবার (২৩ জুন) এক প্রতিবেদনে মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি এ খবর জানিয়েছে।
কর্মকর্তারা আরও বলছেন, গত এক দশকে সিরিয়ার ১৩ বছরের সংঘাতে একত্রে যুদ্ধ করেছেন লেবানন, ইরাক, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের ইরান-সমর্থিত যোদ্ধারা। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পক্ষে তারা ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করেছেন। তারা আবারও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একজোট হতে পারেন।
গত ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই উত্তর ইসরায়েলের লেবানন সীমান্তে হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনীর সংঘর্ষ বেড়েছে।
চলতি মাসে দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় হিজবুল্লাহ সামরিক কমান্ডার নিহত হওয়ার পর উত্তরের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। অবশ্য হিজবুল্লাহও উত্তর ইসরায়েলে শত শত রকেট ও ড্রোন হামলা চালিয়ে প্রতিশোধ নিয়েছে।
বুধবার এক বক্তৃতায় হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ বলেছেন, ইরান, ইরাক, সিরিয়া, ইয়েমেন এবং অন্যান্য দেশের নেতারা এর আগে হিজবুল্লাহকে সাহায্য করার জন্য কয়েক হাজার যোদ্ধা পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তবে তিনি বলেছিলেন, এই গোষ্ঠীর এরইমধ্যে এক লাখ যোদ্ধা রয়েছে।
তিনি আরও বলেছেন, হিজবুল্লাহ'র জনশক্তির একটা অংশ শুধু ইসরায়েলি সেনাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছে। বিশেষ করে যারা ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পারদর্শী। কিন্তু সর্বাত্মক যুদ্ধের ক্ষেত্রে তা পরিবর্তন হতে পারে।
ইরান সমর্থিত লেবানিজ এবং ইরাকি গোষ্ঠীর কর্মকর্তারা বলছেন, লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে যুদ্ধ শুরু হলে আশপাশের অঞ্চল থেকে ইরান-সমর্থিত যোদ্ধারা যোগ দেবেন।
ইরাকের ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীর এক কর্মকর্তাও একই কথা উল্লেখ করে বলেছেন, যদি সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হয়, আমরা হিজবুল্লাহর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করবো।
লেবাননের ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীর এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ইরাকের পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্স, আফগানিস্তানের ফাতিমিয়ুন, পাকিস্তান জেইনাবিয়ুন এবং ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত বিদ্রোহী গোষ্ঠীর যোদ্ধারা যুদ্ধে অংশ নিতে লেবাননে আসতে পারেন।
তবে হিজবুল্লাহ কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা ইসরায়েলের সঙ্গে সর্বাত্মক যুদ্ধ চান না। তবে যুদ্ধ শুরু হলে লড়াইয়ের জন্য তারা প্রস্তুত।