ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ ‘নতুন ধাপে’ উপনীত হয়েছে বলে জানিয়েছেন হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ। বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বৈরুতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হিজবুল্লাহর সিনিয়র কমান্ডার ফুয়াদ শুকুরের শেষকৃত্যানুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এই খবর জানিয়েছে।
উপস্থিত জনতার সম্মুখে নাসরাল্লাহ বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতীকী নয়, বরং পরিকল্পিত উত্তর দিবে হিজবুল্লাহ। তিনি আরও জানান, বেশ কিছু রাষ্ট্র প্রতিশোধ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
ইসরায়েল ‘সীমা লঙ্ঘন’ করেছে এবং এর ফল ‘অবশ্যম্ভাবী’ উল্লেখ করে নাসরাল্লাহ বলেন, আসন্ন হামলায় ইসরায়েল কী প্রতিক্রিয়া দেখাবে তার ওপর আঞ্চলিক পরিস্থিতি নির্ভর করছে।
এদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, ইরান ও তার মিত্রদের যে কোনও প্রতিশোধমূলক হামলা প্রতিহত করতে তারা প্রস্তুত।
নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইসরায়েল রক্ষণাত্মক ও আক্রমণাত্মক উভয়ভাবেই প্রস্তুত এবং যে কোনও আগ্রাসনের যথাযথ জবাব দেবে তারা।
লেবাননের জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত শনিবার (২৭ জুলাই) বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলীয় দানিয়েহ এর ঘনবসতিপূর্ণ হারেক হ্রেইক এলাকায় অভিযান চালায় ইসরায়েল। এ অভিযানে শুকুরসহ তিন নারী ও দুই শিশু নিহত এবং আরও অনেকে আহত হন।
এ ঘটনার পর বুধবার (৩১ জুলাই) তেহরানে করা আরেকটি হামলায় হামাসের রাজনৈতিক নেতা ইসমাইল হানিয়েহ নিহত হন। এ হত্যাকাণ্ডের পর ইরান ও তার মিত্রদের একটি যৌথ প্রতিক্রিয়া দেখানোর শঙ্কা এবং এই অঞ্চলে সর্বাত্মক যুদ্ধের ঝুঁকি বেড়ে গেছে।
তবে হানিয়েহ এর মৃত্যুর বিষয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি ইসরায়েল। এ হত্যার দায়ও স্বীকার করেনি তারা।
শনিবার সিরিয়া অধিকৃত গোলান মালভূমির মাজদাল শামস এলাকায় একটি হামলায় ১২ শিশু নিহত হয়। এসময় তারা ফুটবল খেলছিল। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ফুয়াদ শুকুরকে লক্ষ্য করে পাল্টা হামলা চালিয়েছে সেনারা। তাদের মতে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অসংখ্য লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছিল শুকুর। এমনকি মাজদাল শামসে হামলার জন্য তাকেই দায়ী করেছে ইসরায়েল।
তবে মাজদালে হওয়া হামলার দায় অস্বীকার করেছে হিজবুল্লাহ। বৃহস্পতিবার পুনরায় এই অভিযোগ এ অস্বীকার করে নাসরাল্লাহ বলেন, ভুল করেও কোনও রকেট নিক্ষেপ করা হলে তা স্বীকার করতো হিজবুল্লাহ।
গত ৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই সীমান্তে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় সামরিক ঘাঁটিগুলোতে হামলা করে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েল। হিজবুল্লাহর দাবি, ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর প্রতি সংহতি প্রকাশ করে এই হামলা করছে তারা।
উল্লেখ্য, চলতি বছর দ্বিতীয়বারের মতো ইসরায়েলি হামলার শিকার হলো বৈরুত। এর আগে, জানুয়ারিতে দানিয়েহ শহরে ইসরায়েলের বিমান হামলায় হামাস কর্মকর্তা সালেহ আল আরুনি নিহত হন।