ইরানের বিপ্লবী গার্ডস (আইআরজিসি) যেকোনও হামলার বিরুদ্ধে ‘নির্ণায়ক’ জবাব দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। রবিবার (১৬ মার্চ) ইরানের গার্ডস প্রধান হোসেইন সালামি টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে ট্রাম্পের হুমকির নিন্দা জানিয়ে এই হুমকি দেন। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানোর নির্দেশ দেন এবং তেহরানকে এই গোষ্ঠীকে সমর্থন বন্ধ করতে সতর্ক করেন। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
শনিবার ট্রাম্প বলেছিলেন, লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচলের জন্য হুথিদের হুমকি শেষ করতে যুক্তরাষ্ট্র নির্ণায়ক ও শক্তিশালী সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছে। তিনি ইরানকে সতর্ক করে বলেন, বিদ্রোহীদের সমর্থন অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। হুথিদের একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেছেন, এই হামলায় ৩১ জন নিহত হয়েছে।
ইরানের গার্ডস প্রধান হোসেইন সালামি টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষায় ট্রাম্পের হুমকির নিন্দা জানান। তিনি বলেন, ইরান যুদ্ধ চায় না, কিন্তু কেউ যদি হুমকি দেয়, তাহলে উপযুক্ত, নির্ণায়ক ও চূড়ান্ত জবাব দেওয়া হবে। তিনি হুথিদের ইয়েমেনিদের প্রতিনিধি বলে অভিহিত করে বলেন, এই গোষ্ঠী তাদের কৌশলগত ও কার্যক্রমগত সিদ্ধান্ত স্বাধীনভাবে নেয়।
২০২০ সালের জানুয়ারিতে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে বাগদাদে ড্রোন হামলায় আইআরজিসির বৈদেশিক অপারেশন শাখার কমান্ডার কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্র। এর কয়েক দিন পর ইরান ইরাকে অবস্থিত মার্কিন ও অন্যান্য জোট সেনাদের ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে প্রতিশোধ নেয়। এতে কোনও আমেরিকান সেনা নিহত না হলেও ওয়াশিংটন বলেছে, কয়েক ডজন সেনা মস্তিষ্কে আঘাতজনিত জটিলতায় ভুগছে।
রবিবার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এসমাইল বাকায়ি এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ‘বর্বর বিমান হামলার’ তীব্র নিন্দা জানান। তিনি এটিকে ‘জাতিসংঘ সনদের নীতির লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেন।
ইরানের শীর্ষ কূটনীতিক আব্বাস আরাঘচি পরে বলেন, ওয়াশিংটনের ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণের কোনও অধিকার নেই। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক্স-এ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ইরানের পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণের কোনও অধিকার নেই। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘ইয়েমেনি জনগণকে হত্যা বন্ধ করার’ আহ্বান জানান।
আরাঘচি বলেন, ১৯৭৯ সালে ইসলামিক বিপ্লবের মাধ্যমে পশ্চিমা সমর্থিত শাহকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর ওয়াশিংটনের তেহরানের পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণের সময় শেষ হয়েছে।
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ইয়েমেনের বেশিরভাগ অংশ নিয়ন্ত্রণকারী হুথিরা ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধী ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর ‘প্রতিরোধ অক্ষের’ অংশ। গাজা যুদ্ধের সময় ইসরায়েল ও লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচলে হুথিরা হামলা চালিয়েছে, যা তারা ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতির লক্ষ্যে করেছে বলে দাবি করে।