ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, দোহায় চলমান আলোচনায় জিম্মি মুক্তি নিয়ে একটি চুক্তির সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে ইসরায়েলি দল। আলোচনায় যুদ্ধ শেষ করার সম্ভাবনাও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। যা দেশটির পূর্বের অবস্থান থেকে এক ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এর আগে হামাসকে নির্মূল করা ছাড়া যুদ্ধ বন্ধের আলোচনা করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিল ইসরায়েল। টাইমস অব ইসরায়েল এ খবর জানিয়েছে।
রবিবার নেতানিয়াহুর কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায়, এই মুহূর্তেও দোহায় আমাদের আলোচক দল একটি চুক্তির সব সম্ভাবনা যাচাই করে দেখছে। এর মধ্যে রয়েছে মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাব অনুযায়ী স্বল্পমেয়াদি যুদ্ধবিরতি ও সীমিত জিম্মি বিনিময় বা সব জিম্মির মুক্তি, হামাস যোদ্ধাদের দেশত্যাগ ও গাজার নিরস্ত্রীকরণের মাধ্যমে যুদ্ধের অবসান।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নেতানিয়াহুর সামরিক ও কূটনৈতিক চাপের নীতির কারণে এখন পর্যন্ত ১৯৭ জন জিম্মিকে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। বাকি ৫৮ জনের ক্ষেত্রেও সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এ পর্যন্ত ইসরায়েল জানিয়ে এসেছে, হামাসকে সামরিক ও রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে ধ্বংস না করা পর্যন্ত যুদ্ধ শেষ হবে না। তবে নেতানিয়াহু আগে ৪৫ দিনের একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতির কথা বলেছিলেন, যার শর্ত ছিল হামাসকে প্রায় ১০ জন জিম্মি মুক্তি দিতে হবে।
বিবৃতির শুরুতেই সমালোচনা করা হয়েছে সাবেক প্রধান জিম্মি আলোচক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ওরেন সেটারের। তিনি গত অক্টোবরে দল থেকে পদত্যাগ করেন এবং ফেব্রুয়ারিতে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, গত বছর ইসরায়েল দুটি বড় চুক্তির সুযোগ হারিয়েছে নেতানিয়াহুর কারণে।
রবিবার সকালে ইসরায়েলি সম্প্রচারমাধ্যমে কেএএনের সঙ্গে হিব্রু ভাষার সাক্ষাৎকারে সেটার বলেন, বর্তমান সামরিক ও কূটনৈতিক চাপের প্রেক্ষাপটে একটি পূর্ণাঙ্গ চুক্তির সুযোগ তৈরি হয়েছে। তবে আমি আশঙ্কা করছি, আবারও হয়তো আমরা শুধু আংশিক চুক্তিতেই আটকে যাব।
এদিকে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইসরায়েলের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন যে, আলোচনায় এখনো উল্লেখযোগ্য কোনও অগ্রগতি হয়নি।
দোহায় কাতারের মধ্যস্থতায় এই আলোচনা চলছে। এতে আলোচ্য সূচির মধ্যে রয়েছে যুদ্ধবিরতি, ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি ও ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিনিময় বিষয়ক প্রস্তাবও। গত অক্টোবর থেকে চলমান যুদ্ধের অবসান নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে নতুন করে আলোচনায় বসেছে দুই পক্ষ।