যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রহণযোগ্য প্রস্তাবের জবাবে ইরান শিগগিরই একটি বিকল্প পারমাণবিক চুক্তির প্রস্তাব ওমানের মাধ্যমে ওয়াশিংটনকে দেবে বলে জানিয়েছে তেহরান। সোমবার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘায়ি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। এটি আগের আলোচনার ভিত্তিতে নয়। আমরা নিজেদের একটি যুক্তিসঙ্গত, যৌক্তিক ও ভারসাম্যপূর্ণ প্রস্তাব তৈরি করছি, যা ওমানের মাধ্যমে অন্য পক্ষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ইসমাইল বাঘায়ি বলেন, অবরোধ তুলে নেওয়ার আগে নিশ্চিত হতে হবে, ইরান অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবে এবং আন্তর্জাতিক ব্যাংক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে।
এর আগে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, মে মাসের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্র যে প্রস্তাব দিয়েছে, তেহরান সেটির বিরুদ্ধে নেতিবাচক জবাব প্রস্তুত করছে। ইরানি কূটনীতিকরা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব ইরানে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ, মজুত ইউরেনিয়াম বিদেশে পাঠানো ও অবরোধ তুলে নেওয়ার কার্যকর পদ্ধতি নিয়ে চলমান মতপার্থক্যের সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বাঘায়ি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইসরায়েলকে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের দাবিও জানান। তিনি বলেন, যেসব পক্ষ ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্ন তোলে, তারাই ইসরায়েলের সামরিক পারমাণবিক কর্মসূচিকে শক্তিশালী করতে সক্রিয়ভাবে সহায়তা করছে।
ইরান দাবি করে আসছে, ইসরায়েল তাদের পারমাণবিক আলোচনার প্রচেষ্টাকে ভণ্ডুল করতে চায়। ইসরায়েল নিজের পারমাণবিক অস্ত্রধারী হওয়ার বিষয়টি স্বীকার বা অস্বীকার করে না।
গত সপ্তাহে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবকে দেশের স্বার্থবিরোধী বলে মন্তব্য করেন এবং ইরানে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। পশ্চিমা দেশগুলো একে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সম্ভাব্য পথ বলে মনে করে। যদিও ইরান দাবি করে, তাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ।
২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৫ সালের ছয় জাতির পারমাণবিক চুক্তি বাতিল করে ইরানের ওপর অবরোধ পুনর্বহাল করলে আলোচনার পথ ভেঙে পড়ে। এর জবাবে ইরান চুক্তির সীমা ছাড়িয়ে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বৃদ্ধি করে।
বাঘায়ি বলেন, ষষ্ঠ দফা পরমাণু আলোচনা কবে শুরু হবে, সে বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।