গাজায় সম্ভাব্য জিম্মি ও যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য রবিবার (৬ জুলাই) কাতারে একটি প্রতিনিধিদল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল। যদিও যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে হামাসের অনুরোধ করা পরিবর্তনগুলো অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে নেতানিয়াহু আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন বলে জানিয়েছে তার কার্যালয়। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
শনিবার রাতে এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানায়, তিনি আলোচকদের নির্দেশ দিয়েছেন- যাতে তারা মধ্যস্থতাকারীদের আলোচনার আমন্ত্রণ গ্রহণ করে।
তবে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও মিসরের দেওয়া যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় হামাস যে পরিবর্তনের শর্ত দিয়েছে, সেটিকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে আখ্যা দিয়েছেন নেতানিয়াহু।
ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠন হামাস শুক্রবার জানিয়েছে যে তারা মার্কিন-সমর্থিত গাজা যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের প্রতি ‘ইতিবাচক মনোভাব’ নিয়ে সাড়া দিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইসরায়েল ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি চূড়ান্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় শর্তে সম্মত হয়েছে।
তবে এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা জানান, হামাস যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে এমন কিছু সংশোধন চেয়েছে যার মধ্যে একটি হলো— স্থায়ী যুদ্ধবিরতি আলোচনা ব্যর্থ হলেও নিশ্চিত করতে হবে যে, নতুন করে কোনও হামলা হবে না।
এছাড়া উভয় পক্ষের সামনে এখনও যেসব সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে, তার ইঙ্গিত হিসেবে হামাসের মিত্র এক সশস্ত্র গোষ্ঠীর এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা জানান, মানবিক সহায়তা, দক্ষিণ ইসরায়েল থেকে মিসরের দিকে রাফাহ ক্রসিং দিয়ে চলাচল এবং ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের নির্দিষ্ট সময়সূচি নিয়ে এখনও উদ্বেগ রয়েছে।
নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানায়, ‘হামাস কাতারি প্রস্তাবনায় যেসব পরিবর্তন আনতে চায়, তা আমাদের কাছে গতরাতে জানানো হয়েছে এবং সেগুলো ইসরায়েলের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।’
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় আরও জানায়, ‘প্রতিনিধিদলটি তবুও কাতারে যাবে—একটি সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য; যাতে ইসরায়েল যে কাতারি প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে, তার ভিত্তিতে আমাদের জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা যায়।’
নেতানিয়াহু সোমবার ওয়াশিংটনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। তিনি বারবার বলেছেন যে হামাসকে নিরস্ত্র করতে হবে। ধারণা করা হয়, হামাস এখনও অন্তত ২০ জন জীবিত জিম্মিকে আটক করে রেখেছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে হামলা চালায় হামাস। এর জবাবে ওইদিন থেকেই গাজায় অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, তখন থেকে এ পর্যন্ত গাজায় অন্তত ৫৭ হাজার ৩৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।