ধর্ষণ মামলার শুনানিতে অংশ নিতে আদালতে যাওয়ার পথে নির্যাতনের শিকার এক নারীর (২৩) গায়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ওই নারী এখন লক্ষ্ণৌর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার শরীরের ৯০ শতাংশই পুড়ে গেছে। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) ভারতের উত্তরপ্রদেশের উন্নাওতে তাকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা হয়।
ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছে, উন্নাও জেলার ওই নারী চলতি বছরের মার্চে তার গ্রামের দুই পুরুষের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেছিলেন। ওই মামলার শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার আদালতের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। বাড়ি থেকে বের হয়ে একটি ট্রেন স্টেশনে পৌঁছালে একদল লোক তাকে আক্রমণ করে এবং একটি মাঠে নিয়ে যায়। সেখানেই তারা তার গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করায়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে লক্ষ্ণৌয়ের ট্রমা সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই নারীর শরীরে আগুন দেয় পাঁচ ব্যক্তি। এদের মধ্যে ধর্ষণ মামলার দুই আসামিও রয়েছে। শরীরে আগুন দেওয়ার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ভারতের সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধর্ষণের মামলা দায়ের পরে মূল অভিযুক্তদের মধ্যে একজনকে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ গ্রেফতার করলেও পরে জামিন পেয়ে যায় সে। অন্য অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তাদের দাবি, ওই পলাতক অভিযুক্তের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে এবং তার বিরুদ্ধে একটি লুকআউট নোটিস জারি করেছে।
এর আগে ২০১২ সালে চলন্ত বাসে নির্ভয়া নামে এক তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় ভারতজুড়ে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়েছিল। তবে এ ঘটনার সাত বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও রায় ঘোষণা হয়নি। সম্প্রতি ফের এ ধরনের ঘটনাগুলোতে সরকারের সমালোচনা করছেন অনেকেই।
সরকারি এক হিসেবেই, শুধু ২০১৭ সালেই ধর্ষণের অভিযোগে ৩৩ হাজার ৬৮৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যে হিসাবে ভারতে প্রতিদিন প্রায় ৯২টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।