সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ব্যাপারে গত সপ্তাহে সম্মত হওয়ার পর এবার ইসরায়েলের সঙ্গে সরাসরি টেলিফোন সংযোগ চালু করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এর ফলে এখন থেকে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি ফোন করা যাবে।
দুই দেশ কথিত শান্তি চুক্তিতে একমত হওয়ার পর উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী টেলিফোনে পরস্পরের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন।
আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ানকে টেলিফোনের পর এ নিয়ে একটি টুইট করেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাবী আশকেনাজি। টুইটে তিনি বলেন, 'দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চুক্তি স্বাক্ষরের আগে উভয় পক্ষই সরাসরি টেলিফোন যোগাযোগ চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
ইসরায়েলের যোগাযোগ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের টেলিফোন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ইসরায়েলের টেলিফোন কোড উন্মুক্ত করে দিয়েছে।
ইসরায়েলের যোগাযোগমন্ত্রী ইয়োয়াজ হেন্ডেল বলেছেন, টেলিফোন কোড উন্মুক্ত করে দেওয়ার জন্য আমি সংযুক্ত আরব আমিরাতকে স্বাগত জানাই।
তিনি বলেন, ‘অনেক অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি হয়েছে এবং দুই দেশের স্বার্থ রক্ষায় এটি আস্থা তৈরির মতো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’
আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে ওয়াশিংটনে দুই পক্ষ আনুষ্ঠানিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ায় এক দেশ আরেক দেশে দূতাবাস চালু করবে।
নতুন ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের অন্যতম নমুনা হিসেবে দুই দেশ শনিবার কোভিড-১৯ বিষয়ে যৌথ গবেষণার ব্যাপারে একটি সমঝোতায় স্বাক্ষর করেছে। এখন পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে ইসরায়েলের প্রকাশ্য কোনও কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। তবে ইরানের বিষয়ে উদ্বেগের কারণে ইসরয়েলের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ তৈরি করে সৌদি-আমিরাত বলয়ের দেশগুলো। এখন ক্রমেই এ সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে।
ট্রাম্পের জামাতা ও তার প্রধান উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনার যুক্তরাষ্ট্রের সিবিএস টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই ইসরায়েল ও আমিরাতের মধ্যে একটি চুক্তি সম্পন্ন করার জন্য তিনি কাজ করে গেছেন। ট্রাম্প নিজেও এ তৎপরতায় যুক্ত ছিলেন।
চুক্তি অনুযায়ী, আগামী কয়েক সপ্তাহে ইসরায়েল ও আমিরাতের প্রতিনিধিরা বিনিয়োগ, পর্যটন, সরাসরি বিমান চলাচল, নিরাপত্তা, টেলিযোগাযোগ, প্রযুক্তি, জ্বালানি, স্বাস্থ্যসেবা, সংস্কৃতি, পরিবেশ এবং দূতাবাস স্থাপন নিয়ে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর করবেন।
ফিলিস্তিনিরা সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের এই চুক্তিকে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ অ্যাখ্যা দিয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি স্বাক্ষরের ক্ষণকে ‘মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির জন্য ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ হিসেবে অভিহিত করেছে। সূত্র: বিবিসি।