X
বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪
২৫ বৈশাখ ১৪৩১

ক্রাইস্টচার্চে হামলাকারীর সাজার রায়ে ভুক্তভোগী বাংলাদেশিদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া

বিদেশ ডেস্ক
২৭ আগস্ট ২০২০, ১৯:১৬আপডেট : ২৭ আগস্ট ২০২০, ১৯:১৮

গত বছরের মার্চে নিউ জিল্যান্ডে ক্রাইস্টচার্চের দু'টি মসজিদে হামলা চালানো ব্রেন্টন টারান্টকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ওই হামলার ভুক্তভোগী বাংলাদেশি নাগরিক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। রায় ঘোষণার পর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির বাংলা সংস্করণকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় এই বিষয়টি উঠে এসেছে।

ক্রাইস্টচার্চে হামলাকারীর সাজার রায়ে ভুক্তভোগী বাংলাদেশিদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া

গত বছরের ১৫ মার্চ জুমার নামাজের সময় ক্রাইস্টচার্চের দু'টি মসজিদে বন্দুক হামলা চালায় ২৯ বছর বয়সী ব্রেন্টন টারান্ট। ওই হামলায় নিউ জিল্যান্ড প্রবাসী ৫ বাংলাদেশি নাগরিকসহ ৫১ জন মারা যান, আহত হন আরও অনেকে।

হামলার ঘটনায় ব্রেন্টন টারান্টকে নিউ জিল্যান্ডের আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তবে আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হলেও সেদেশের আইনে মৃত্যুদণ্ডের বিধান না থাকায় কেউ কেউ কিছুটা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

বাংলাদেশি বাবুল ও তার স্ত্রী আফসানা আক্তার রিতু হামলার দিন একটি মসজিদের ভেতর ছিলেন। তবে তিনি বেঁচে যান। তিনি বলেন, ‘একটা মানুষ ৫১ জনকে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করার পরও কীভাবে বেঁচে থাকার সুযোগ পায়? আমরা এই রায়ে কিছুটা মনক্ষুণ্ণ।’

তিনি জানান ওই ঘটনার পর এক মাসেরও বেশি সময় তার স্ত্রী ঘর থেকে বের হননি। সবসময় দরজা জানালা বন্ধ করে রাখতেন। তার কথায়, আমার স্ত্রী এখনও পুরোপুরি ওই আতঙ্ক থেকে বের হতে পারেননি। মনে হয় না কখনো পারবেন।

তবে বাবুলের মতো রায়ে অসন্তোষ নেই সব ভুক্তভোগীর। আল নূর মসজিদে বন্দুক হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন ওমর জাহিদ। এখনও শারীরিকভাবে শতভাগ সুস্থ হতে পারেননি তিনি। তার কয়েকজন সহপাঠী এবং পরিচিত ব্যক্তিও সেসময় হামলায় মারা গিয়েছিলেন।

নিউ জিল্যান্ডের আইন অনুযায়ী ব্রেন্টন টারান্টের হওয়া শাস্তির সিদ্ধান্তে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে তিনি বলেন, দোষীকে যদি মৃত্যুদণ্ড দেওয়াও হতো, তাহলেও তো আমার মারা যাওয়া বন্ধুরা, পরিচিতরা ফিরে আসতো না। আমার মতো যারা আহত হয়েছেন, তারা তো আর সুস্থ, স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাবে না।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু নিউ জিল্যান্ডের আইনের সর্বোচ্চ সাজাটাই তাকে দেওয়া হয়েছে, তাই আমি সন্তুষ্ট। আমার মনে হয় যে সুবিচারই হয়েছে।

রায়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন ওই হামলায় প্রাণ হারানো হোসনে আরা ফরিদের স্বামী ফরিদ উদ্দীন আহমেদ। হামলার কয়েকদিন পরই ফরীদ উদ্দীন আহমেদ সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন যে, হামলাকারী ব্রেন্টন টারান্টকে তিনি এবং তার পরিবার মন থেকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। সেই মন্তব্যের পুনরাবৃত্তি তিনি করেছেন হামলাকারী টারান্টের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সিদ্ধান্ত হওয়ার পরও। তিনি বলেন, হামলাকারীকে আমি এবং আমার মেয়ে ক্ষমা করতে পেরেছি বলেই এখন আমরা মানসিকভাবে শান্তিতে রয়েছি বলে আমার বিশ্বাস। এখন হামলাকারীকে শাস্তি দেওয়া হলেও আমার মানসিক পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি।

উল্লেখ্য, নিউ জিল্যান্ডের বিচার ব্যবস্থায় মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। এই প্রথমবারের মতো নিউ জিল্যান্ডে প্যারোল ছাড়া আমৃত্যু কারাদণ্ডের শাস্তি দেওয়া হলো। হামলাকারী ব্রেন্টন টারান্টকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কারাগারে থাকতে হবে।

 

/এএ/
সম্পর্কিত
অস্ট্রেলিয়ার সৈকতে আটকা পড়েছে শতাধিক পাইলট তিমি
বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ
অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক প্রবেশ নিষিদ্ধ করলো রাশিয়া
সর্বশেষ খবর
কদমতলীতে গলায় ফাঁস লেগে দশ বছরের শিশুর মৃত্যু
কদমতলীতে গলায় ফাঁস লেগে দশ বছরের শিশুর মৃত্যু
জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত উৎসব শুরু আজ থেকে
জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত উৎসব শুরু আজ থেকে
আজিজ মোহাম্মদসহ ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড চায় রাষ্ট্রপক্ষ, খালাসের দাবি আসামিপক্ষের
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যাআজিজ মোহাম্মদসহ ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড চায় রাষ্ট্রপক্ষ, খালাসের দাবি আসামিপক্ষের
প্রথম জেলা শাখা হিসেবে নোয়াখালীতে উন্মুক্ত লাইব্রেরির যাত্রা শুরু
প্রথম জেলা শাখা হিসেবে নোয়াখালীতে উন্মুক্ত লাইব্রেরির যাত্রা শুরু
সর্বাধিক পঠিত
শনিবারে স্কুল খোলা: আন্দোলন করলে বাতিল হতে পারে এমপিও
শনিবারে স্কুল খোলা: আন্দোলন করলে বাতিল হতে পারে এমপিও
‘চুন্নু স্বৈরাচারের দোসর’, বললেন ব্যারিস্টার সুমন
‘চুন্নু স্বৈরাচারের দোসর’, বললেন ব্যারিস্টার সুমন
এক লাফে ডলারের দাম বাড়লো ৭ টাকা
এক লাফে ডলারের দাম বাড়লো ৭ টাকা
ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর ইস্যুতে ন্যাটোকে রাশিয়ার সতর্কতা
ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর ইস্যুতে ন্যাটোকে রাশিয়ার সতর্কতা
ইউক্রেনে পাঠালে ফরাসি সেনাদের নিশানা করার হুমকি রাশিয়ার
ইউক্রেনে পাঠালে ফরাসি সেনাদের নিশানা করার হুমকি রাশিয়ার