বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে দুই দিন ধরে দফায় দফায় বৈঠকের পর অবশেষে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সংস্কার প্রস্তাবগুলোর ব্যাপারে সম্মতি জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের চুক্তিতে বেশ কয়েকটি সংস্কার আনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ক্যামেরন। শুক্রবার রাতে বেশ কয়েকটি সংস্কারের ব্যাপারে সমঝোতা হয় বলে জানিয়েছেন ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক। এতে সব দেশের সম্মতি পাওয়া গেছে বলে তিনি জানান। আর এ সমঝোতার কারণে যুক্তরাজ্যকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে বিশেষ মর্যাদা পাবে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরনের দাবি, লন্ডন শহরের কল্যাণে ইউনিয়নের নিয়মনীতির বাইরে গিয়েও যেকোনো ব্যবস্থা নিতে পারবে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ।
নতুন সমঝোতার কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি ধারার পরিবর্তন করতে হবে। ইউনিয়নের সদস্যভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ব্যবধান আরো কমিয়ে আনা বা মুক্ত চলাচলের উদ্যোগ নেয়া হলেও, সেটি যুক্তরাজ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।
নতুন সমঝোতা অনুযায়ী, কোন দেশে যদি ইইউ থেকে আসা অভিবাসীদের সংখ্যা অনেক বেশি হয়ে যায়, তাহলে নতুন অভিবাসীদের ক্ষেত্রে প্রথম সাতবছরের জন্যে কল্যাণ ভাতা দেয়া বন্ধ করে দিতে পারবে সব দেশ।
অভিবাসী পরিবারগুলোর শিশুদের কল্যাণ ভাতা আপাতত বহাল থাকলেও, ২০২০ সালের পর এটির কাটছাঁট হবে। তখন সংশ্লিষ্ট দেশের অর্থনীতি অনুযায়ী এই ভাতা দেয়া হবে।
২৮ দেশের ইইউ জোটে যুক্তরাজ্য প্রস্তাবিত এসব সংস্কার লন্ডনকে কিছু ক্ষমতা ফিরিয়ে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শনিবার এই প্রস্তাবটি মন্ত্রিসভায় তুলবেন ক্যামেরন। এই সমঝোতা যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভেতর থাকার জন্য যথেষ্ট বলেই তিনি মনে করেন। জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলও মনে করেন, এসব সংস্কার ইইউতে যুক্তরাজ্যকে রাখার জন্য যথেষ্ট। টাস্ক বলেন, ঐক্য রক্ষার জন্য ইইউভুক্ত দেশগুলো কিছু না কিছু ছাড় দিয়েছে। তিনি বিশ্বাস করেন, যুক্তরাজ্যের ইইউকে প্রয়োজন। ইইউর প্রয়োজন যুক্তরাজ্যকে। তবে শেষ সিদ্ধান্ত যুক্তরাজ্যবাসীদের হাতেই।
তবে যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকবে কি থাকবে না, তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে গণভোটে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে যুক্তরাজ্যের অন্তর্ভূক্ত থাকা না থাকার প্রশ্নে দেশটির জনগণের মধ্যেও মতভেদ রয়েছে। আর তাই সে প্রশ্নে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে ২০১৭ সালের মধ্যে ওই গণভোট হওয়ার কথা থাকলেও সেটি এ বছরের জুনের মধ্যেই হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সূত্র: বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান
/এফইউ/বিএ/