X
শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
১৩ আষাঢ় ১৪৩২

ক্রাইস্টচার্চে হামলাকারীর সাজার রায়ে ভুক্তভোগী বাংলাদেশিদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া

বিদেশ ডেস্ক
২৭ আগস্ট ২০২০, ১৯:১৬আপডেট : ২৭ আগস্ট ২০২০, ১৯:১৮

গত বছরের মার্চে নিউ জিল্যান্ডে ক্রাইস্টচার্চের দু'টি মসজিদে হামলা চালানো ব্রেন্টন টারান্টকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ওই হামলার ভুক্তভোগী বাংলাদেশি নাগরিক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। রায় ঘোষণার পর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির বাংলা সংস্করণকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় এই বিষয়টি উঠে এসেছে।

ক্রাইস্টচার্চে হামলাকারীর সাজার রায়ে ভুক্তভোগী বাংলাদেশিদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া

গত বছরের ১৫ মার্চ জুমার নামাজের সময় ক্রাইস্টচার্চের দু'টি মসজিদে বন্দুক হামলা চালায় ২৯ বছর বয়সী ব্রেন্টন টারান্ট। ওই হামলায় নিউ জিল্যান্ড প্রবাসী ৫ বাংলাদেশি নাগরিকসহ ৫১ জন মারা যান, আহত হন আরও অনেকে।

হামলার ঘটনায় ব্রেন্টন টারান্টকে নিউ জিল্যান্ডের আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তবে আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হলেও সেদেশের আইনে মৃত্যুদণ্ডের বিধান না থাকায় কেউ কেউ কিছুটা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

বাংলাদেশি বাবুল ও তার স্ত্রী আফসানা আক্তার রিতু হামলার দিন একটি মসজিদের ভেতর ছিলেন। তবে তিনি বেঁচে যান। তিনি বলেন, ‘একটা মানুষ ৫১ জনকে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করার পরও কীভাবে বেঁচে থাকার সুযোগ পায়? আমরা এই রায়ে কিছুটা মনক্ষুণ্ণ।’

তিনি জানান ওই ঘটনার পর এক মাসেরও বেশি সময় তার স্ত্রী ঘর থেকে বের হননি। সবসময় দরজা জানালা বন্ধ করে রাখতেন। তার কথায়, আমার স্ত্রী এখনও পুরোপুরি ওই আতঙ্ক থেকে বের হতে পারেননি। মনে হয় না কখনো পারবেন।

তবে বাবুলের মতো রায়ে অসন্তোষ নেই সব ভুক্তভোগীর। আল নূর মসজিদে বন্দুক হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন ওমর জাহিদ। এখনও শারীরিকভাবে শতভাগ সুস্থ হতে পারেননি তিনি। তার কয়েকজন সহপাঠী এবং পরিচিত ব্যক্তিও সেসময় হামলায় মারা গিয়েছিলেন।

নিউ জিল্যান্ডের আইন অনুযায়ী ব্রেন্টন টারান্টের হওয়া শাস্তির সিদ্ধান্তে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে তিনি বলেন, দোষীকে যদি মৃত্যুদণ্ড দেওয়াও হতো, তাহলেও তো আমার মারা যাওয়া বন্ধুরা, পরিচিতরা ফিরে আসতো না। আমার মতো যারা আহত হয়েছেন, তারা তো আর সুস্থ, স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাবে না।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু নিউ জিল্যান্ডের আইনের সর্বোচ্চ সাজাটাই তাকে দেওয়া হয়েছে, তাই আমি সন্তুষ্ট। আমার মনে হয় যে সুবিচারই হয়েছে।

রায়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন ওই হামলায় প্রাণ হারানো হোসনে আরা ফরিদের স্বামী ফরিদ উদ্দীন আহমেদ। হামলার কয়েকদিন পরই ফরীদ উদ্দীন আহমেদ সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন যে, হামলাকারী ব্রেন্টন টারান্টকে তিনি এবং তার পরিবার মন থেকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। সেই মন্তব্যের পুনরাবৃত্তি তিনি করেছেন হামলাকারী টারান্টের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সিদ্ধান্ত হওয়ার পরও। তিনি বলেন, হামলাকারীকে আমি এবং আমার মেয়ে ক্ষমা করতে পেরেছি বলেই এখন আমরা মানসিকভাবে শান্তিতে রয়েছি বলে আমার বিশ্বাস। এখন হামলাকারীকে শাস্তি দেওয়া হলেও আমার মানসিক পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি।

উল্লেখ্য, নিউ জিল্যান্ডের বিচার ব্যবস্থায় মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। এই প্রথমবারের মতো নিউ জিল্যান্ডে প্যারোল ছাড়া আমৃত্যু কারাদণ্ডের শাস্তি দেওয়া হলো। হামলাকারী ব্রেন্টন টারান্টকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কারাগারে থাকতে হবে।

 

/এএ/
সম্পর্কিত
আইইপি বৈশ্বিক শান্তি সূচকে ৩৩ ধাপ পেছালো বাংলাদেশ
আইজিপির সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ান হাই কমিশনারের সাক্ষাৎ
ঢাকায় ভিসা কার্যক্রম ফের চালু করায় অস্ট্রেলিয়াকে ধন্যবাদ জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
সর্বশেষ খবর
ওয়াকফ মামলা শুনানির জন্য হাইকোর্টে পৃথক বেঞ্চ গঠিত
ওয়াকফ মামলা শুনানির জন্য হাইকোর্টে পৃথক বেঞ্চ গঠিত
খিলক্ষেতে মণ্ডপ উচ্ছেদ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য
খিলক্ষেতে মণ্ডপ উচ্ছেদ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য
কলেজ সরকারি, চলে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়!
কলেজ সরকারি, চলে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়!
এনসিপির মিডিয়া সেল গঠন
এনসিপির মিডিয়া সেল গঠন
সর্বাধিক পঠিত
বিরোধীদের নিষিদ্ধ করা বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথ নয়: দ্য ইকোনমিস্ট
বিরোধীদের নিষিদ্ধ করা বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথ নয়: দ্য ইকোনমিস্ট
ভাঙা হলো বিজয় সরণির ‘মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ’, হবে জুলাই স্মরণে ‘গণমিনার’
ভাঙা হলো বিজয় সরণির ‘মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ’, হবে জুলাই স্মরণে ‘গণমিনার’
যমুনা সেতু থেকে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে রেলপথ
যমুনা সেতু থেকে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে রেলপথ
মিরপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজকে উঠে গেলো বাস, একজন নিহত
মিরপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজকে উঠে গেলো বাস, একজন নিহত
এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ দফতরে উপস্থিতি ও সেবা নিশ্চিতের নির্দেশ
এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ দফতরে উপস্থিতি ও সেবা নিশ্চিতের নির্দেশ