মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘নো কিংস’ নামের একটি সংগঠনের আয়োজনে এই বিক্ষোভগুলো করা হয়। ওয়াশিংটন ডিসিতে ট্রাম্পের আয়োজিত একটি বিরল সামরিক কুচকাওয়াজকে কেন্দ্র করে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শনিবার (১৪ জুন) সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন ডিসিতে একটি সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নিচ্ছিলেন ট্রাম্প। এসময় নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস, ফিলাডেলফিয়া, হিউস্টনসহ বড় বড় শহরের মানুষ রাস্তায় নামেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তার ক্ষমতার সীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ এবং নাগরিক অধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে।
এর আগে লস অ্যাঞ্জেলেসসহ বিভিন্ন শহরে তার অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ চলছিল।
শনিবার সন্ধ্যায় মার্কিন সেনাবাহিনীর ২৫০ বছর পূর্তি উদযাপনের অংশ হিসেবে আয়োজন করা হয় সামরিক কুচকাওয়াজটি। ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন, কুচকাওয়াজ ঘিরে কোনও বিক্ষোভ হলে ‘কঠোর শক্তি’ প্রয়োগ করা হবে।
তারপরও নিউইয়র্ক, ফিলাডেলফিয়া ও হিউস্টনের মতো বড় শহরগুলোতে আইনপ্রণেতা, শ্রমিক ইউনিয়ন নেতারা ও অধিকারকর্মীরা আমেরিকার পতাকা ও ট্রাম্পবিরোধী পোস্টার হাতে জনতার উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন।
আয়োজকদের দাবি, সারা দেশে শত শত স্থানে এসব বিক্ষোভ হয়েছে। এতে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল কয়েক মিলিয়ন।
ফিলাডেলফিয়ার লাভ পার্কে জড়ো হয় বহু মানুষ। ‘আমার মনে হয় আমাদের গণতন্ত্র রক্ষার জন্য রাস্তায় নামা জরুরি’ বলেন ৬১ বছর বয়সী নার্স ক্যারেন ভ্যান ট্রিয়েস্তে, যিনি অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানান ট্রাম্প প্রশাসনের জনস্বাস্থ্য বিভাগে কর্মীছাঁটাই তাকে প্রতিবাদে নামতে বাধ্য করেছে।
লস অ্যাঞ্জেলেসে ছিল সবচেয়ে বড় জনসমাগম। অভিবাসনবিরোধী অভিযানের প্রতিবাদে সেখানে টানা কয়েকদিন ধরেই বিক্ষোভ চলছে। মেয়র গ্যাভিন নিউসমের আপত্তি এবং স্থানীয় কর্মকর্তাদের ক্ষোভ সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক সপ্তাহ আগে ক্যালিফোর্নিয়ায় ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করেন।
লস অ্যাঞ্জেলেসে ফেডারেল বিল্ডিংয়ের কাছে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের সংঘর্ষ হয় এবং ভিড় ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস ছোড়া হয়। তবে তার এক-দুই ব্লক দূরে শত শত মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল চালিয়ে যান।
ট্রাম্প পুনঃনির্বাচিত হওয়ার পর এটি ছিল সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ বিক্ষোভ। যদিও জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে, অভিবাসন ইস্যুতে তার নীতিগুলো এখনও জনপ্রিয়।
সিবিএস/ইউগভ পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, ৫৪ শতাংশ আমেরিকান যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে থাকা অভিবাসীদের বহিষ্কারের পক্ষে। ৪৬ শতাংশ বিপক্ষে।