স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, সামনে নির্বাচন আছে। স্বাস্থ্য বিভাগ যে কাজ করেছে, স্বাস্থ্য বিভাগের সুনাম আমাদের দেশের মানুষের মুখে মুখে আছে। বিনামূল্যে করোনার টিকা পেয়েছে, চিকিৎসা পেয়েছে। লোকে এটা মনে রাখে। ১০-১৫ হাজার টাকা একটি টিকার মূল্য, সেটি আপনারা বিনামূল্যে পেয়েছেন। কাজেই জনগণ সঙ্গে আছেন, আমাদের পাশে আছে, শেখ হাসিনার পাশে আছে।
তিনি বলেন, জ্বালাও পোড়াও করে, ভাঙচুর করে, মানুষকে হত্যা করে কখনও অর্জন করা যায় না। কোনও যুদ্ধ মানুষের মঙ্গল ডেকে আনে না, মানুষের ক্ষতি হয়। কাজেই আমরা আশা করি ইনশাআল্লাহ আগামীতে আবার শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসবেন, প্রধানমন্ত্রী হবেন এবং আমাদের উন্নয়নের যাত্রা অব্যাহত থাকবে।
বুধবার (৮ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে কালাজ্বর ও ফাইলেরিয়া নির্মূল উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
জাহিদ মালেক বলেন, ভ্যাকসিনে বাংলাদেশের বিরাট অর্জন আছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আমরা সবার আগে করোনার ভ্যাকসিন এদেশে নিয়ে এসেছি। সবার আগে ভ্যাকসিন দিতে সক্ষম হয়েছি। আমরা ২৭ কোটি ভ্যাকসিন দিয়েছি এবং একটি ক্ষেত্রেও কেউ বলতে পারবে না কোনও সমস্যা হয়েছে। এটা বিরাট অর্জন বলে আমি মনে করি। আমাদের সব পর্যায়ে যারা ভ্যাকসিনের ব্যবস্থাপনায় ছিল তাদের সবার জন্য এটি বিরাট ঘটনা। আমেরিকাও পারে নাই, তাদের ভ্যাকসিন কাভারেজ হলো ৫০-৬০ শতাংশ। আমাদের হচ্ছে ৯০ শতাংশ।
তিনি বলেন, আমরা যখন ইউরোপ আমেরিকায় যাই তারা আমাদের কাছে জানতে চায় কীভাবে আমরা সম্ভব করেছি। এর পেছনে রহস্য কী? আমি বলি আমাদের চেষ্টা, আমাদের যথাসময়ে কার্যক্রম। আমাদের রিসোর্স কম ছিল, কিন্তু চেষ্টা উদ্যোগ কম ছিল না। আমাদের চিকিৎসক-নার্সরা কেউ কাজ ছেড়ে চলে যায়নি। সবাই জীবনের রিস্ক নিয়ে কাজ করে আজ করোনা নিয়ন্ত্রণে ভ্যাকসিন দিতে সক্ষম হয়েছে। কাজেই আমাদের অর্জন অনেক।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, অসংক্রামক রোগ বাড়ছে বাংলাদেশে। নতুন ৮টি হাসপাতাল তৈরি হচ্ছে। প্রতি জেলায় ১০ বেড আইসিইউ এবং ১০ বেড ডায়ালাইসিসের ব্যবস্থা হচ্ছে। এগুলা আগে ছিল না। প্রায় প্রতিটি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন করা হয়েছে, যেটা আগে ছিল না।
জাহিদ মালেক বলেন, সর্বকালের সবচেয়ে বেশি চিকিৎসক পদোন্নতি হয়েছে গত পাঁচ বছরে। অন্তত ৩-৪ হাজার চিকিৎসকের প্রমোশন হয়েছে। আমরা চাই আমাদের কাজগুলো ধরে রাখা হোক। অর্জনগুলো একদিনে আসে নাই। আগের সবাই কাজ করেছে এবং আমরা সেই ধারাবাহিকতায় এগিয়ে যাচ্ছি। আগামীতেও একই ধারাবাহিকতায় এগিয়ে যেতে হবে। অনবরত এই কাজ আমাদের চালিয়ে যেতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ফাইলেরিয়া এবং কালাজ্বর নির্মূল হয়েছে। আমরা ভালো কাজ করছি বলেই নির্মূল হয়েছে। আমাদের জেলা-উপজেলা পর্যায়ে অনেক উন্নতি হয়েছে। আপনাদের প্রতি অনুরোধ থাকবে আপনারা যেন উপস্থিত থেকে কাজগুলো করেন। যাতে যন্ত্র চালু থাকে, হাসপাতাল পরিষ্কার থাকে, উপস্থিতি যেন নিশ্চিত হয় , তাহলে অনেক সুনাম পাবেন। আমাদের উন্নয়নের যাত্রা অব্যাহত থাকুক। আমরা চাই না বিনা চিকিৎসায় একটি মৃত্যু বাংলাদেশে হোক। আমরা সবাই মিলে কাজ করছি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মো. খুরশিদ আলম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।