প্রধানমন্ত্রীর উত্তরাঞ্চলীয় বাসভবন নাটোরের উত্তরা গণভবনের পুরোটা জুড়ে এখন ফুল আর মৌসুমি ফলের ঘ্রাণ। এসবের সঙ্গে মিনি চিড়িয়াখানায় হরিণের নতুন শাবক জন্ম নেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে। ফলে গণভবনে দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়ছে প্রতিদিনই। শত শত মানুষ ভিড় করছেন এখানে। কর্তৃপক্ষের দাবি, শীতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দর্শনার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
উত্তরা গণভবনের মূল প্যালেসের পাশের রানীমহল, গ্র্যান্ড মাদার মহলের পাশের অংশ ও ইতালিয়ান গার্ডেনের ভেতরে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের গাছ। এগুলোতে ফুটে আছে নানান রঙ ও বর্ণের দৃষ্টিনন্দন ফুল। এসবের সঙ্গে মিনি চিড়িয়াখানা আর সংগ্রহশালা দেখে মুগ্ধ দর্শনার্থীরা। তাদের চোখে, গণভবন এখন আগের চেয়ে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। যেন চেনাই যায় না!
সরেজমিনে দেখা যায়, উত্তরা গণভবনের মূল ফটক পেরোলেই দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে ভেতরে দু’পাশের সারি সারি ফুলের গাছ। প্রতিটি ফুল গাছেই এসেছে ফুল। কিছুদূর এগোলেই বড় গাছগুলোতে দেখা যাচ্ছে থোকা থোকা ফুল।
গণভবনের তত্ত্বাবধায়ক খায়রুল বাশার জানান, আগে প্রতিদিন ৪০০-৫০০ দর্শনার্থী আসতো এখানে। সেই সংখ্যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০০ থেকে ১০০০। এবারের শীত মৌসুম থেকেই দর্শনার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি তার। তিনি মনে করেন, হরিণ শাবকের জন্মের খবর ছড়িয়ে পড়ায় শিশু-কিশোরদের পদচারণা বেড়েছে। গণভবন পরিদর্শনের পর জেলা প্রশাসক শাহরিয়ার জানান, শাবকটির নাম রাখা হয়েছে শুক্লা।
পশু-পাখির দায়িত্বে থাকা মেহেদি হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, চিড়িয়াখানায় মোট পাঁচটি হরিণ থাকলেও শ্যামা হরিণটি নতুন শাবক জন্ম দিয়েছে। ছোট্ট ফুটফুটে হরিণ শাবক দেখতে ভিড় করছে শিশু-নারীসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ।
দর্শনার্থীদের জন্য টিকিট বিক্রির দায়িত্বে আছেন নয়ন কুমার। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, প্রতিদিনই দর্শনার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে টিকিট বিক্রি বাড়ছে। এর সুবাদে রাজস্ব আয়ও বেড়ে চলেছে।’
তবে নাটোরে নির্ধারিত কোনও পিকনিক স্পট নেই। আবাসিক হোটেলও অপ্রতুল। এসবের সঙ্গে গণভবনের মূল ফটকের সামনের অংশের উন্নয়নসহ শিশুদের রাউটার স্থাপনের পদক্ষেপ নিতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন দর্শনার্থীরা।
জেলা প্রশাসক শাহরিয়ার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে উত্তরা গণভবনের উন্নয়ন প্রকল্পের প্রস্তাবনা কেবিনেটে পাঠানো হয়েছে। এটি এখন পরিকল্পনা কমিশনে রয়েছে। প্রস্তাবনা পাস শেষে বরাদ্দ দেওয়া হলে ব্যাপক উন্নয়ন করা যাবে। সেটি সম্পন্ন হলে গণভবনকে ঘিরে এই জেলাকে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলা সহজ হবে।’