বসবাসের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহরের তালিকায় যৌথভাবে শীর্ষে আছে সিঙ্গাপুর, ওসাকা ও হংকং। নতুন এক সমীক্ষায় এই তথ্য উঠে এসেছে। এসব জায়গায় ভ্রমণে স্বাভাবিকভাবেই টাকা-পয়সা বেশি খরচ হবে।
এক নম্বরে থাকা তিনটি শহরই এশিয়ায় অবস্থিত। গবেষণায় দেখা গেছে, এই মহাদেশ ছাড়াও বসবাসের জন্য ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে শহরগুলো বেশি ব্যয়বহুল।
বিশ্বব্যাপী বসবাসের ব্যয় জরিপ হিসেবে র্যাংকিংটি করেছে ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ)। এটি হলো লন্ডনের ইকোনমিস্ট গ্রুপের গবেষণা ও বিশ্লেষণ শাখা। বিভিন্ন দেশের অর্থনীতির পূর্বাভাস ও পরামর্শ দিয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানটি।
ইআইইউ’র রিস্ক ব্রিফিং ডিরেক্টর ও জরিপের সম্পাদক নিকোলাস ফিৎজরয় জানান, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ১৩৩টি শহরের ১৬০টি উপকরণের মূল্য অনুযায়ী ব্যয়বহুল ও সাশ্রয়ী শহরের তালিকা তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে খাবার, পোশাক, পরিবহন, ইউটিলিটি বিল ইত্যাদি।
গত বছর শীর্ষে ছিল সিঙ্গাপুর, প্যারিস ও হংকং চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকং। তবে পাঁচ থেকে এক লাফে এক নম্বরে উঠে এসেছে জাপানের ওসাকা। ফলে এবারের র্যাংকিংয়ে শীর্ষে শুধু এশিয়ার শহর।
দুই থেকে পাঁচ নম্বরে ছিটকে গেছে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। এর সঙ্গে যৌথভাবে পাঁচে আছে গতবার চারে থাকা সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জুরিখ।
২০১৯ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনের সঙ্গে যৌথভাবে সাত নম্বরে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটি উঠে এসেছে চারে। কোপেনহেগেন এবার শীর্ষ দশেই নেই। গতবার সাত নম্বরে থাকা দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল মুদ্রার অবমূল্যায়ন হওয়ায় জায়গা পায়নি শীর্ষ দশে।
গতবার ইসরায়েলের তেল আবিবের সঙ্গে যৌথভাবে ১০ নম্বরে থাকা আমেরিকার আরেক শহর লস অ্যাঞ্জেলেস উঠে এসেছে ৮ নম্বরে। শীর্ষ দশে মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র শহর তেল আবিব আছে সাতে। ইআইইউ’র মতে, পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় তিন ধাপ উপরে উঠেছে শহরটি। এছাড়া রফতানি বৃদ্ধির ফলে ইসরায়েলি শেকেল এখন বিশ্বের শক্তিশালী মুদ্রাগুলোর মধ্যে অন্যতম।
লস অ্যাঞ্জেলেসের সঙ্গে যৌথভাবে আট নম্বরে আছে জাপানের টোকিও। গত বছর শীর্ষ দশেই ছিল না শহরটি। গতবার পাঁচ নম্বরে থাকা সুইজারল্যান্ডের জেনেভা নতুন র্যাংকিংয়ে নেমে গেছে দশে।
করোনাভাইরাসের কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতির অবয়ব স্বাভাবিকভাবেই ব্যতিক্রম হবে। এর মধ্যে ইআইইউ জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী বসবাসের ব্যয় ইতোমধ্যে ৪ শতাংশ কমেছে।
জরিপে ছিল ইউরোপের ৩৭টি শহর। এর মধ্যে ৩১টিতেই ব্যয় কমেছে। যদিও শীর্ষ দশে ইউরোপের তিনটি শহর রয়েছে। ইংল্যান্ডের রাজধানী লন্ডন ২২ থেকে নেমে গেছে ২৩ নম্বরে। আর ম্যানচেস্টার গতবারের মতোই আছে ৫১ নম্বরে।
কর বৃদ্ধির সুবাদে রাশিয়ার দুই শহর সেন্ট পিটার্সবার্গ ১১২ থেকে ১০৬ নম্বরে ও মস্কো ১০২ থেকে ৮৬ নম্বরে উঠেছে।
ইউরোপে বসবাসের ব্যয় কমলেও যুক্তরাষ্ট্রে বেড়েছে। দেশটির বিভিন্ন শহরের মধ্যে সান ফ্রান্সিসকো ১৫ নম্বরে, বোস্টন ৩৩ নম্বরে ও আটলান্টা ৬৬ নম্বরে আছে।
বিশ্বের সবচেয়ে সাশ্রয়ী দেশের তালিকায় এক নম্বরে আছে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত সিরিয়ার দামেস্ক। দুই নম্বরে উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দ এবং তিনে আছে কাজাখস্তানের আলমাটি। চারে জায়গা পেয়েছে যৌথভাবে আর্জেন্টিনার রাজধানীর বুয়েন্স আয়ারস ও পাকিস্তানের করাচি। ছয় থেকে ১০ নম্বরে আছে যথাক্রমে ভেনেজুয়েলার রাজধানী ক্যারাকাস, জাম্বিয়ার রাজধানী লুসাকা, ভারতের চেন্নাই, বেঙ্গালুরু ও নয়াদিল্লি।
২০২০ সালে বসবাসের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহর
১. সিঙ্গাপুর (সিঙ্গাপুর)
২ (১). ওসাকা (জাপান)
৩ (১). হংকং (চীন)
৪. নিউ ইয়র্ক সিটি (যুক্তরাষ্ট্র)
৫. প্যারিস (ফ্রান্স)
৬ (৫). জুরিখ (সুইজারল্যান্ড)
৭. তেল আবিব (ইসরায়েল)
৮. লস অ্যাঞ্জেলেস (যুক্তরাষ্ট্র)
৯ (৮). টোকিও (জাপান)
১০. জেনেভা (সুইজারল্যান্ড)
সূত্র: ডেইলি মেইল