X
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪
৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

শিশুর জন্য ডে কেয়ার সেন্টার কেন জরুরি?

জিনিয়া জেসমিন করিম
১০ অক্টোবর ২০২৩, ২১:৪৫আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০২৩, ২১:৫০

নারীরা অফিসে কাজ করা শুরু করার পর থেকেই তার শিশুটি কার হেফাজতে থাকবে সেটি সবার আগে চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। এখন আর আগের মতো একান্নবর্তী পরিবার খুব একটা দেখা যায় না। শহরের ছোট পরিবারগুলোতে দাদা-দাদী, নানা-নানীর কাছে শিশুকে নিশ্চিন্তে রেখে আসার সুযোগ আর তেমন নাই। আর নির্ভরযোগ্য গৃহকর্মী পাওয়া এখন সোনার হরিণের মতোই দুষ্প্রাপ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। চাকরিজীবী মায়েদের তাই মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষে কাজের ফেরার সময় সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা হয়ে দাঁড়ায় তার কোলের শিশুটির যত্ন ও নিরাপত্তা। তাই বিশেষ করে তাদের কথা চিন্তা করেই জগতে আধুনিক ডে কেয়ার সেন্টার কিংবা দিবাযত্ন কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। এ কেন্দ্র দিন দিন বাংলাদেশেও বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে।

আমরা কেন আমাদের এত আদরের সন্তানকে নিজের বাসায় না রেখে ডে কেয়ার সেন্টারে রাখব তার কারণগুলো তুলে ধরলেই বোঝা যাবে কেন্দ্রের প্রয়োজনীয়তা আজকাল কতটুকু জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেখা গেছে দেশের যেকোনো আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ডে কেয়ার সেন্টারে শিশুদের যত্ন ও নিরাপত্তা দিতে নিয়োজিত থাকে
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিশুপ্রতিপালক। তারা সারাদিন ডে-কেয়ারের প্রতিটি শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও যত্নের প্রতি দৃষ্টি রাখে। তাদের খাবার, গোসল, ঘুম, খেলা, লেখাপড়া, আচার-ব্যবহার এবং তাদের সার্বিক বিকাশের জন্য যেসব কার্যক্রমগুলো প্রয়োজন হয়, সেগুলো তারা খুব সুশৃঙ্খলভাবে করে থাকে। আর এই শিশু পরিচারিকাদের পরিচালনা ও তত্ত্বাবধানের জন্য থাকে শিক্ষিকা বা সুপারভাইজার। যাদের কাজ হচ্ছে শিশুদের বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা অর্জন করতে সাহায্য করা ও শিক্ষাগ্রহণের উপযুক্ত গড়ে তোলা। এই
সুপারভাইজার বা শিক্ষকরা শিশুদের মানসিক বিকাশের জন্য কাজ করে যায়। এই বিকাশের দিকগুলো হচ্ছে ভাষার বিকাশ, শারীরিক বিকাশ, সামাজিক বিকাশ, আবেগজনিত বিকাশ এবং বুদ্ধির বিকাশ।

ডে-কেয়ার শুধু খাবার আর ঘুমানোর জায়গা নয়। বরং এখানে শিশুরা নির্দেশ মেনে চলতে শেখে, অনেকে একসাথে খেলাধুলা, গ্রুপওয়ার্ক করে, ছবি আঁকে এবং সবাই মিলে ছড়া পড়ে, গল্প শোনে। আবার নিজের গল্প অন্যদের কাছে বলতেও শেখে। বলা যায়, কালারিং, রিডিং রাইটিং এসব বিষয়ে শিশুরা যথেষ্ট পারদর্শী হয়ে ওঠে। ফলে তাদের স্কুলে যাবার একটা সুন্দর প্রস্তুতি এখানে থেকে হয়ে যায়। তাই দেখা গেছে যেসব শিশু ডে কেয়ারে থেকে পরে স্কুলে যায়, তাদের পারফরমেন্স অনেক ভালো হয়।

আমাদের বুঝতে হবে যে, শিশুদের সার্বিক বিকাশের জন্য বাবা-মায়ের শুধু সময় দেওয়াই যথেষ্ট নয়। দরকার হচ্ছে কোয়ালিটি টাইম দেওয়া, মানে তাদের সাথে গুণগতমানসম্পন্ন সময় কাটানো। শিশুদের সাথে সম্পর্ক বাড়ানোর জন্য তাদের প্রত্যেকের প্রতি আলাদা আলাদাভাবে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে শিশুদের সাথে কথা বলা। সারাদিনের পর একজন শিশু যখন বাবা-মাকে কাছে পায় তখন সে আশা করে কিছু সুন্দর সময়, কিছু সুন্দর কথা।

শুধুমাত্র কর্মজীবী বাবা-মা নয়, বরং যে বাবা-মায়েরা বাসায় থাকেন তাদের সন্তানেরও ডে- কেয়ারে যাওয়া দরকার। তাদের সার্বিক বিকাশের জন্য এবং স্কুলে যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য বাবা-মা, নানা-নানী, দাদা-দাদী বাড়িতে থাকলেও তারা আসলে কতটা সময় শিশুদের দিতে পারেন এবং তারা শিশুর একাকিত্বে
কতটা সঙ্গী হতে পারেন সেটা প্রশ্ন সাপেক্ষ বিষয়। । তাছাড়া তারা সময় দিলেও দেখা গেছে, শিশু যখন তার সমবয়সী বন্ধুদের সঙ্গে থাকে তখন তার মানসিক বিকাশও দ্রুত হয় এবং শিশু অনেক দ্রুত সবকিছু শিখতে পারে।

লেখক: প্রারম্ভিক শিশু বিকাশ বিশেষজ্ঞ ও রেইনবোভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান

/এনএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘জার্মানির তৃতীয় বিভাগের ক্লাবের সঙ্গেও বাংলাদেশকে মেলানো যায় না’
‘জার্মানির তৃতীয় বিভাগের ক্লাবের সঙ্গেও বাংলাদেশকে মেলানো যায় না’
তোরণ ও ব্যানার টানিয়ে জরিমানা গুনলেন তিন প্রার্থী
তোরণ ও ব্যানার টানিয়ে জরিমানা গুনলেন তিন প্রার্থী
ভারতীয় পেঁয়াজে রফতানি মূল্য নির্ধারণ, বিপাকে আমদানিকারকরা
ভারতীয় পেঁয়াজে রফতানি মূল্য নির্ধারণ, বিপাকে আমদানিকারকরা
টিভিতে আজকের খেলা (১৯ মে, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (১৯ মে, ২০২৪)
সর্বাধিক পঠিত
মামুনুল হক ডিবিতে
মামুনুল হক ডিবিতে
৩০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের
৩০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের
আমেরিকা যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি
আমেরিকা যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি
নীরবে মামুনুল হক,  শাপলা চত্বরের ঘটনা বিশ্লেষণের সিদ্ধান্ত
নীরবে মামুনুল হক, শাপলা চত্বরের ঘটনা বিশ্লেষণের সিদ্ধান্ত
মোবাইল আনতে ডিবি কার্যালয়ে মামুনুল হক
মোবাইল আনতে ডিবি কার্যালয়ে মামুনুল হক