সময় তাহলে, বড়ো সচেতন পাখি
সময় তাহলে, বড়ো সচেতন পাখি…
ছায়াচ্ছন্ন ভোরবেলা এই দৃশ্য রাখি—
যাতে রাস্তা ঢুকে গেল সাদার ভেতর,
মৃত গাছ আঁকড়ে ধরে কুয়াশার ঘোর…
এখানে নামে না মেঘ। পাগল ঘটে না।
কোটরে কোটরে পাখি…পাখিদের মা…
এখানে জলের দাগ সবুজ রঙের
এখানেই কাঠে তৈরি বাড়ি ও ঘরের
পয়ারে লিখেছি শোনো, বড়ো রাস্তা যায়
যেতে গিয়ে মাঝেমাঝে ছায়াকে ছাড়ায়।
তখন ঘাতক মুখ ঈগলের মতো
তাকাল আমার দিকে—ঈষৎ আনত…
দেখি, তার চোখেমুখে সাম্প্রতিক ক্ষয়;
এইভাবে চাষযোগ্য ভূমি তৈরি হয়!
আমার বেড়ালগুলো
আমার বেড়ালগুলো আপাতত লেখার উপরে শুয়ে আছে। আমি তাদের ভারের নিচ থেকে বের করে আনছি কাব্যগ্রন্থ—এই সম্ভাব্য ঘটনা মুছে দিতে ভালো লাগে।
মানে, যদি, হঠাৎ পা পিছলে কিংবা মাথায় বিমান ভেঙে পড়ে অথবা তোমার কবিতা সাজাতে গিয়ে মন অন্য দিকে চলে যায়; আর এই কাব্যগ্রন্থ বের করে আনা নাও ঘটতে পারে। শেষ অব্দি কী হতে চলেছে, আমি জানি না।
দেখতে পাচ্ছি, সাদা মথ উড়ে যাচ্ছে চোখের আলোটি ভেঙে। দেয়ালের দিকে যাচ্ছে। এটা দেখল বেড়ালেরা। ওরা হয়ত উঠেই যাবে। এই সম্ভাবনাই এখন প্রবল হয়ে উঠেছে। মানে, এটাও বাস্তবতা—ওরা শিকারের কাছে গেলে আমি পেয়ে যাব কবিতার বই।
আজ সারারাত ইদ গাইতে ইচ্ছে করছে। এটা ঘটবে বলেই ইদের সুর বারবার মনে করতে চেষ্টা করছি। অথচ ধরতে পারছি না। নিজের উচ্চবাচ্যতাকেই বুঝি না, তাও শোল মাছের মতন কেন যে দেখতে যাই তোমার পরিব্রাজিকা!
এখনও ভেবে উঠতে পারিনি বলেই
এখনও ভেবে উঠতে পারিনি বলেই যে লিখব না
এমন কিছুতে নয়।
হয়তো লিখে দিলাম,
তোমাকে শোল মাছের চোখে দেখতে কেমন হবে!
এমন একটা শোল, যে জল ছাড়া বাতাস টানছে আর অতি আলোয় আমাকে ভাবল… হয়ত, সহসা…
সেরকম, একটা মাছের চোখে তোমাকে কেমন দেখতে—এ কথা লিখতে লিখতেই বুঝলাম,
যে দিক থেকে আলো আসে.
সেদিকের স্তন হয় না…
ছেঁড়া ছেঁড়া ভাবি
ছেঁড়া ছেঁড়া ভাবি, এই যেমন বুদ্ধ পূর্ণিমা;
কাঠের প্যালেট থেকে রঙ ফেলে ফেলে দেখছ জ্যোৎস্না।
হিন্দোল বর্ণের চামেলী ও বিপাশা দেখেছ।
দেখছ, শরণাগত ঘণ্টার ধ্বনি কেঁপে কেঁপে যাচ্ছে কদম গাছের সংকীর্ণ নৈঋতে।
তোমার ফেরানো মুখের যে পাশে
যমক বর্ণের ছায়া পড়ে আছে,
তাকে আমি সম্ভাবনা বলি
প্যাঁচাকে বলি চন্দ্রকোষ
তারপর শব্দের ভেতর দিয়ে শব্দ ভেসে যায়
ছেঁড়া ছেঁড়া ভাবি,
আজ পূর্ণিমার শেষ হবে
তবু গ্রামে গঞ্জে অশান্তি ফুরুবে না
আমারও কি ছিল না প্রজ্ঞা?
আমারও কি ছিল না প্রজ্ঞা? অনুভূতি? কিংবা,
রৌদ্রকল্পিত মাঠ!
তবুও আমি কী লিখতে চলেছি—জানি না।
আর বুঝি কাটাকুটি বাড়ছে কবিতায়।
আমি প্রথাগত লিখি, চৈত্র ও কালবৈশাখী।
লিখেছি বেলগন্ধ বাগান।
লিখি…বৃষ্টির পর গলির মধ্যে দাঁড়িয়ে লিখতে ইচ্ছে করাকে…
যেটুকু অস্বস্তিতে বলিনি আরোগ্যের কাছে,
যেটুকু লুকিয়ে রেখেছি শস্য সঞ্চারের কাছ থেকে,
সেটুকু এইবেলা চুপি চুপি খেয়ে নাও।
কে, কখন দেখে ফেলবে আমি সেসব লিখে ফেলছি
আর
পোষা গাছেদের মাথার ওপর এসে নামছে আগুন
আগুন রেণু রেণু ভেঙে পড়ছে আমাদের মাথার ওপর
তবুও এখনও জানি না কী লিখতে চলেছি
কেবল দেখতে পাচ্ছি
ছাইয়ের ওপাশ থেকে উঠে আসছে
জমির হাঙর…