X
রবিবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩
১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
কবির জন্মদিনে

পাখি ডাইকা যায়

জাহিদ সোহাগ
০৭ মার্চ ২০১৮, ২৩:১২আপডেট : ০৭ মার্চ ২০১৮, ২৩:২২

পাখি ডাইকা যায়
বাংলা কবিতা কি জীর্ণ? শ্লথ নদী হয়ে হয়ে ঠেকেছে চরায়? পুনরাবৃত্তির চক্রে আমাদের জীবনের মতো ক্লিশে?—এই প্রশ্ন হাতে নিয়ে, বল বানিয়ে, ছুড়ে দিই। সব পাখি ডাকলেও কোনো কোনো পাখির ডাক যেমন সঙ্গীতের, বা সুমধুর; এই বাংলার ত্রস্ত নীলিমায় সবাই কবি; তবু কেউ কেউ একাকী নিজের স্বর ছিঁড়ে খুড়ে নেয়, গায় নিজের মতো, বলে, ‘এই আমার গান। আর সব অন্ধ।’ এই স্পর্ধা কেউ কেউ নিজের ভেতর, শৈলীর ভেতর বুনে বুনে একদিন হয়ে ওঠেন শামীম রেজা, কবি। যাকে আর চিহ্নিত করতে হয় না; নিজেই চিহ্নিত। নিজেই চিহ্ন। যিনি কারো পায়ের উপর দাঁড়ান না। বা কেউ তার পায়ের ছাপে পা রাখবে না ভুলেও। অগ্রজের কাছে যিনি অজ্ঞেয়, অনুজের কাছে অজেয়। এমন নিঃসঙ্গ নিশঙ্ক যার কাব্যযাত্রা। যেন আদিঅন্ত জেনে গেছেন। তিনি একমেবাদ্বিতীয়ম।


তিনি কি মহৎ কিছু লিখেছেন—রামায়ণ, মহাভারত বা প্যারাডাইস লস্ট? বলি, তিনি মহত্বকে পুরাতন বলে লাফিয়ে এসেছেন; ব্রিজ না ভেঙে, এই ব্রিজটুকুই আমরা ধরে ধরে তাকে অনুসরণ করছি—তার পথের ব্যঞ্জন। ব্যঞ্জন এ কারণে যে, তাতে নানান মশলার স্বাদ ও সুগন্ধি আছে, যা আবার আড়াল করে না কাব্যশরীরের আস্বাদ; এইটুকুই। ওই কবিতার হাড়-মজ্জার দিকে ভাবিকালে তাকানোর অবকাশ মিলবে, মিলুক। কারণ পাঠকেরও প্রস্তুতি চাই। পাঠকেরও রক্তে চাই বাসি সিগারেট জ্বালাবার ঠোঁট।
বোর্হেস যেমন স্থানিকতা আমলে না রেখে, শামীম রেজা তত বেশি স্থানিক, পাথরচিত্রে কোনো নদীর ছাপ নিয়ে, পুরাকাল থেকে হেঁটে হেঁটে, কোনো এক দূরবিশ্বের মেয়ের ইশারায়, ওই ওই পুরাকালের টালির হৃদয় ভেঙে, ওই ওই পুরাকালের রমণীর কেশবিন্যাসের হাওয়ায় ও কাঠালচাঁপার বিষে, বিষভাণ্ড হয়ে সূবর্ণনগরে; আদতে যা এক মায়াহরিণ, নদীস্বভাবি, কুহক; শিল্পের চেনা সিল্ক ছিঁড়ে ছিঁড়ে কী এক অসীম সাহসে বাংলার কাব্যশরীরে আরো এক সুষমা—এই কবি কোথায় যাবেন? পায়ের তলায় যে মাটি তা যেমন বাংলার, তেমনি পৃথিবীর; বিভেদ বলতে বিভাজন বলতে ওই ওই কাঁটাতার, হাস্যকর রাষ্ট্র ও রাজনীতির পুঁতিগন্ধময় ক্ষমতার আন্ডারপ্যান্ট; তাকে কে রাখে, কে রাখে, আমলে? এরপর এক লাফে মন মোর মোর মেঘের সঙ্গী হয়ে, কসমোসেন্ট্রিক, ব্রহ্মাণ্ডের ইসকুল; যা ঔপনিবেশিক ক্ষতের আঙিনায় নিজেদের চোখ খুলে মার্বেল খেলার; শেষে হৃদয়লিপিতে তার প্রেম-চৈতন্যের ব্যাপ্তি ও বাঙ্মময়তা; এ প্রেমিক কাম ও প্রেমের দার্শনিকতা, দেহাত্মা ও পরমাত্মা প্রশান্তির বাইরে খুড়েছেন নিজেকে : প্রেমিক তার হৃদয় পাতলে শুনতে পায় পুরাকাল তুলে আনার শাবল চালানোর শব্দ। যে শব্দ কবরের মাটি হয়ে ঝরে পরে শান্তি শান্তি...
কবি শামীম রেজার জন্মদিনে আমাদের পোষা ডাহুকের গলা সন্ধ্যাকে আরো উন্মাতাল করে দেয় নিজেরই ডিমে রক্ত দিয়ে। আমরা অদূরে দাঁড়িয়ে, জলে কাঁপছে একটি সাঁকো...
এমন গাভীন রাত্তির ভাঙা পাটাতনও নাই, কীভাবে ঢেউয়ের উপর ঘর
সাজাই। মনকড়ালি পাখি ডাইকা যায় প্রাচীন গুহায়।

//জেড-এস//
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের বাংলাদেশ দল ঘোষণা
অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের বাংলাদেশ দল ঘোষণা
বিদেশে বসে স্যোশাল মিডিয়ায় ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে: তথ্যমন্ত্রী
বিদেশে বসে স্যোশাল মিডিয়ায় ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে: তথ্যমন্ত্রী
যশোরের ছয় আসনে ১৮ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল
যশোরের ছয় আসনে ১৮ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল
মেজর আখতারুজ্জামানের মনোনয়নপত্র বাতিল
মেজর আখতারুজ্জামানের মনোনয়নপত্র বাতিল
সর্বাধিক পঠিত
হঠাৎ নড়েচড়ে বসেছে ইসি
হঠাৎ নড়েচড়ে বসেছে ইসি
একবছরে এক শিক্ষকের ১০২টি গবেষণাপত্র, প্রতিটি তৈরিতে লেগেছে তিন দিন!
একবছরে এক শিক্ষকের ১০২টি গবেষণাপত্র, প্রতিটি তৈরিতে লেগেছে তিন দিন!
আওয়ামী লীগ নেতা মায়া চৌধুরীর ছেলে দিপু মারা গেছেন
আওয়ামী লীগ নেতা মায়া চৌধুরীর ছেলে দিপু মারা গেছেন
আজকের আবহাওয়া: গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউমে’ পরিণত
আজকের আবহাওয়া: গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউমে’ পরিণত
ক্রেডিট কার্ডের টাকা না দেওয়ায় ডলি সায়ন্তনীর মনোনয়নপত্র বাতিল
ক্রেডিট কার্ডের টাকা না দেওয়ায় ডলি সায়ন্তনীর মনোনয়নপত্র বাতিল