X
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪
১৬ বৈশাখ ১৪৩১

একজোড়া গোলাপি রঙের জুতা

আঞ্জুমানআরা আনছারী
২৮ জুলাই ২০২৩, ০০:০০আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২৩, ০০:০০

সিএনজি চালিয়ে যাত্রাবাড়ি যাওয়ার সময় দ্রুত চলে গেছে বলে এদিক সেদিক তাকানোর সুযোগ পায়নি সাদেক আলি। ফেরার সময় দেখতে পেলো বঙ্গবাজারে পুড়ে যাওয়া কাপড়ের মার্কেটের স্তূপ থেকে আধা-পোড়া কাপড়, লোহা-লক্কড়, পোড়া টিন, নাট-বোল্ট হাতড়ে বস্তা ভরে নিয়ে যাচ্ছে অনেকেই। দুএকটা টিভি চ্যানেল সাক্ষাৎকারও নিচ্ছে মানুষের। রাস্তার পাশে সিএনজি থামিয়ে দাঁড়াতেই সে শুনতে পেলো, একজনকে জিজ্ঞেস করা হচ্ছে, ‘কেনো এসব নিয়ে যাচ্ছেন? আপনার দোকান ছিল এখানে?’ তার উত্তর এলো, ‘এইগলা কার মাল তার কী নিশ্চয়তা আছে, সবাই নিচ্ছে তাই আমিও নিচ্ছি।’ সাদেক আলি দাঁড়িয়ে দেখল কিছুক্ষণ। হয়ত তারও ইচ্ছা হচ্ছিলো দুএকটা আধা-পোড়া কাপড় নিয়ে যাওয়া যায়, করোনা শুরুর পর থেকে নতুন কাপড় কিনতে পারে নাই সে। কিন্তু কঠোরভাবে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করল। মাথাটা ঝাঁকুনি দিয়ে নিজেকে বোঝাল রোজা রেখে সে কীসব ভাবছে! এরপর সিএনজি চালু করে একটানে বঙ্গবাজার পার হয়ে শান্তিনগর আসতেই আজান শুনতে পেলো। স্টার্টিংয়ের নিচে রাখা পানির বোতল বের করে এক ঢোক পানি গিলে নিয়ে হালকা সবুজ রঙের পলিথিনটা খুলে ঘরে বানানো ছোলা-বুন্দিয়া-মুড়ি কলা দিয়ে মেখে নাকের কাছে নিয়ে ঘ্রাণ নিতেই চোখে ভেসে উঠল বউয়ের ঘোমটাটানা কালচে মুখটা। সাদেক আলি পলিথিনেই খেতে শুরু করল। দ্রব্যমূল্য যে হারে বাড়ছে দুবেলা দুমুঠো খাবার জুটবে কি না কপালে তাই ভাবে সে। এইতো কদিন আগেই চাল-ডালের স্বাধীনতার কথা বলায় কী লঙ্কাকাণ্ডই না ঘটে গেলো দেশে! সাদেক আলির মতো মানুষের কীই বা করার থাকে এমন পরিস্থিতিতে! যেখানে তারা সিএনজি মালিকের কাছে সংখ্যা মাত্র, বাবা-মায়ের দেয়া সাদিকুল ইসলাম নামটাও হয়ে যায় সাদেক আলি! রিকশা চালক, সিএনজি চালকদের নামে নাকি বাহার থাকতে নেই, সিএনজি মালিকের এই কথাটা কারণে অকারণেই মনে পড়ে তার।

অথচ সাদেক আলি এসময়ের এইচএসসি পাশ। গ্রামের ডিগ্রি কলেজে প্রথম বর্ষের পরীক্ষাও দিয়েছিল সে। হঠাৎ বাবা মারা যাওয়ার পর মা অসুস্থ হওয়ায় শেষ সম্বল ভিটেবাড়িটুকুও বিক্রি করে দেয়। কিন্তু মা আর সুস্থ হয়নি। কয়েক বছর স্ত্রী-পুত্র নিয়ে শ্বশুরালয়ে কাটিয়ে শেষমেশ ঢাকায় পাড়ি জমায়। সে সময় বন্যার পানিতে ডুবে মারা যাওয়া ছেলের মুখটা তার মধ্যে গ্রাম ছাড়ার তাড়না তৈরি করেছিল।

তবে মাঝেমাঝে এখন তার মনে হয় ঢাকায় না এসে তিস্তার চরে পেঁয়াজ-মরিচের চাষবাস করেই সে জীবিকা নির্বাহ করতে পারত। ঢাকায় এসে প্রথমদিকে সাভারে একটা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে কাজ নেয়। হয়ত শিক্ষিত ছেলের সোশ্যাল স্ট্যাটাস বা আইডেন্টিটি পাওয়ার বাসনা। হয়ত এ কারণেই গ্রামের ছেলেমেয়েরা হাঁস-মুরগি পালন কিংবা শাক-সবজি চাষ করে জীবিকা নির্বাহের চেয়ে ‘শহুরে চাকরিজীবী’ স্বীকৃতির আশায় গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিগুলোতে বিপর্যস্ত অবস্থায় ওভার টাইম কাজ করে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলেমেয়েরাও কল সেন্টারগুলোতে কণ্ঠটাকে ‘পণ্য’ করে তোলে। পুঁজিবাদী এ সমাজে কৃষকের হাসি থেকে শুরু করে দাম্পত্যপ্রেমও বিক্রি হয়। আধুনিক মানুষের জীবন অনিশ্চয়তার দোলায় দুলছে অবিরত। একজন ফ্রিল্যান্সার টাকা উপার্জন করছে কিন্তু তার কোনো নির্দিষ্ট আইডেন্টিটি নাই, এটাকে কী বলব? ব্যক্তিহীন সর্বনাশের প্রয়াস নাকি ব্যক্তির সর্বোচ্চ সম্ভাবনার প্রয়াস? সোশ্যাল স্ট্যাটাস বা আইডেন্টিটি না থাকলে কি চলবে না? হয়ত চলবে। কিন্তু যতই ভাবি আইডেন্টিটির প্রয়োজন নাই, ততই এর প্রয়োজন হচ্ছে। তবে কি আইডেন্টিটি পেতেই মানুষ মরিয়া হয়ে শহরে ছুটছে? হয়ত তাই। কেন না শিক্ষিত কল সেন্টারের কর্মী কিংবা গার্মেন্টস কর্মীকে সমাজ যে গুরুত্ব দেয় শিক্ষিত খামার মালিক বা চাষিকে সে গুরুত্ব দেয় না। হয়ত এমন গুরুত্ব পেতেই সাদেক আলি স্ত্রীসহ ঢাকায় এস গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে যোগ দেয়। এর নমাস পরে গর্ভবতী স্ত্রী রুমানা চাকরি ছেড়ে দেয়। তখন থেকে সাদেক আলি একাই চাকরিটা চালায়। খাওয়া পরা ছাড়াও হাতে কিছু টাকাও জমে। বেশ ভালোই চলছিল তাদের সংসার। এর মধ্যে করোনার প্রকোপ বেড়ে গেলে ২০২০ সালের মার্চ মাসের শেষদিকে সারা দেশব্যাপী সরকারি বিধি-নিষেধ জারি করা হয়। করোনাকালে শ্রমিক ছাঁটাই করা হলে তার চাকরিটা চলে যায়। বসে খেলে নাকি রাজার রাজ্যও একসময় ফুরিয়ে যায়। পরিবারে নতুন সদস্য আসায় বেশ কিছু ঋণ হয়ে যায় সাদেক আলির। ঋণের চিন্তায় রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারে না সে। বাধ্য হয়ে একদিন ‘হাতের পাঁচ’-স্বরূপ স্ত্রীর স্বর্ণের নাকফুল বিক্রি করে ছমাস বয়সী ছেলের জন্য কাপড়, আর স্ত্রীর জন্য দুইটা আপেল আর আর একটা কমলা কিনে আনে। একেবারই নিরুপায় হয়ে গ্রামের এক বন্ধুর সহায়তায় মোহাম্মদপুরে আলতাফ হোসনের সিএনজি ভাড়ায় চালানো শুরু করে।

গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে কাজ করার সময়ও তাকে সবাই সাদিকুল ইসলাম নামেই ডাকতো। হাজার হলেও একটা অফিসিয়াল আইডেন্টিটিতো ছিল। যতই শিক্ষিত হোক, এখনতো সে সিএনজি চালক। তাকে এখন সাদেক আলি, সাদেইক্যা, সাদু নামেই ভালো মানায়। ছোলা-মুড়ি খেতে খেতে কীসব আকাশ-পাতাল ভাবতে শুরু করেছিল সে। হালকা নীল রঙের শার্টের ছেঁড়া আস্তিন গুটিয়ে আরেক লোকমা মুখে পুরে দেবে সেই মুহূর্তেই দুটো বাটন খুলে যাওয়া রাবারে প্যাঁচানো ফোনটা বেজে উঠল। ওপার থেকে ছেলের কণ্ঠ থেকে আধো আধো বুলি ভেসে আসছে, ‘আব্বা, আমাল দুতা কিনতো?’ ছেলে এখন বড়ো হয়েছে। আধো আধো বুলিতে আবদার করা শিখেছে। সাদেক আলির খুব আনন্দ হয়। শত কষ্টের মাঝেও ছোট্ট ছেলেটার মুখ তাকে শান্তি দেয়। বড়ো ছেলেটা বেঁচে থাকলে এতদিনে স্কুল যাওয়া শুরু করতো।

‘কিনব বাবা।’ বলেই কথা না বাড়িয়ে ফোনটা রেখে দিয়ে আনমনে ভাবতে থাকে গত ছয় মাস ধরে ছেলের জন্য একজোড়া রাবারের জুতা কিনতে গিয়ে কতবার যে ফিরে এসেছে সে! পাশের বাসার ছোটো ছেলেটা যখন বাবার হাত ধরে নতুন রাবারের জুতা পরে বাইরে যাওয়া-আসা করে সাদেক আলির ছেলে রুম্মন তখন কতবার যে মা-বাবাকে সেই জুতা দেখতে ডেকেছে, তা মনে করে সাদেক আলির নিজের জীবনটাকে খুবই ব্যর্থ মনে হয়। একদিনতো জুতা কিনতে গিয়ে, চাল-ডাল-সবজি কেনার পর আর পঞ্চাশ টাকাও পকেটে না থাকায় অগত্যা জুতার প্যাকেট রেখে আসতে হয়েছে তাকে। সেই রাতে সাদেক আলি ঘুমাতেই পারেনি। একটু পরপর স্বপ্নে জুতা কিনতে গিয়ে খালি হতে ফিরে এসেছে। সিএনজি নিয়ে আসা-যাওয়ার সময় প্রতিদিন দোকানের শোকেসে জুতাগুলো সাজানো দেখে কতবার যে সাদেক আলির মনে হয়েছে কোনোভাবে একজোড়া জুতা নিয়ে দৌড় দিয়ে সে ছেলের কাছে যেতে পারে না কেনো! এইতো পহেলা বৈশাখের দিনেও ছেলেকে নিয়ে বাইরে বের হওয়ার সময় তারা দুজনেই বেশ কিছুক্ষণ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল দোকানে সাজিয়ে রাখা জুতার দিকে! ছেলেকে তো কিছুতেই দোকানের সামনে থেকে সরাতে পারছিল না। শেষে রাগে-দুঃখে ছেলের গালে থাপ্পড় মেরেছিল। সেই দৃশ্য মনে পড়ায় সাদেক আলির দুচোখে পানি জমে যায়।  

আজ জুতা কিনবেই, প্রয়োজনে উপোস করবে, তারপরও সে আজ জুতা নিয়েই বাসায় ফিরবে... দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে দ্রুত সিএনজি টান দেয় সে, যাতে গ্যারেজে গাড়ি জমা দিয়ে নামাজটা পড়ে নিতে পারে। আজকে আর গাড়ি নিয়ে বের হবে না। শরীরটা খারাপ লাগছে তার। অন্যান্য দিন ইফতারের পরে আবার সুবিধা অনুযায়ী খ্যাপ নিয়ে আসা-যাওয়া করে। ঢাকা শহরে রমজান মাসে সবকিছুর দাম বাড়ে, সাথে বাড়ে চাহিদাও। দোকানগুলো ইফতারের পর নতুন করে যেন জেগে ওঠে। তাই এসময় খ্যাপ ভালো পাওয়া যায়। কিন্তু সাদেক আলি মন স্থির করেছে আজকে আর বের হবে না।  

রাস্তা ফাঁকা পেয়ে শান্তিনগর থেকে একটানে সংসদ ভবনের কাছে আসতেই মনে পড়ে তিন মাসের বাসা ভাড়া এখনো দেওয়া হয় নাই, সাথে ঋণের টাকা ফেরত দেয়ার চিন্তা তো আছেই। ছয় মাস আগে মা-ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে ঋণের বোঝাটাও বেড়েছে। সাদেক আলি ভেবেছিল ছেলের জুতার সাথে স্ত্রীর জন্যও একজোড়া জুতা কিনবে। তা আর হবে কী করে! সম্বিত ফিরে পায় সাদেক আলি। না, তাকে আবারও সিএনজি নিয়ে বের হতে হবে। মালিক অবশ্য তাকে বেশ খানিকটা বিশ্বাস করে। প্রথম যেদিন তার সাথে সিএনজি ভাড়ার চুক্তিপত্রে সই করেছিল তার তিন মাস পরেই তাকে গ্যারেজের চাবি দিয়ে দেয় যাতে সুবিধামতো সে সিএনজি রাখতে ও বের করতে পারে। গ্যারেজে প্রায় বিশটা সিএনজি আর ছয়টা মাইক্রোবাস। দূরপাল্লার বাসও আছে আলতাফ  হোসেনের। সাদেক আলির খুব ইচ্ছা সে সিএনজি বাদ দিয়ে যদি মাইক্রোবাস নিতে পারতো! এভাবে সাতসতেরো চিন্তা করতে করতে মোহাম্মদপুর চলে আসে। পকেটের টাকা গুণে দেখে বউয়ের জন্য না হলেও ছেলের জন্য কিনতে পারবে গোলাপি রঙের জুতাজোড়া। ক্যাম্পের বাজারে ঢুকে সাড়ে তিন বছর বয়সী ছেলের জন্য পাঁচ শ’ পঁচাত্তর টাকা দিয়ে তার পছন্দের সেই জুতাজোড়া কিনে নেয়। ক্যাম্পের বাজারের কাছেই তার সিএনজি মালিকের চারতলা বিল্ডিংয়ের সাথে লাগোয়া টিনশেডের এক রুমে তার সংসার। বাজারে ঢোকার মুখের গলিতে সিএনজি রেখে সে বিস্কুট রঙের কাগজের ব্যাগ থেকে জুতাজোড়া বের করে পরম মমতায় হাত বোলায়। গোলাপি রঙের জুতাজোড়ায় রাস্তার পাশের সোডিয়াম বাতির আলো পড়ায় এক অপরূপ অনুভূতি তৈরি হয় তার মনে। একমাত্র জীবিত সন্তানের কতদিনের চাওয়া আজ পূরণ করতে যাচ্ছে সে।

বাসার সামনে যেতেই একটা লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়ির সামনে জটলা দেখে সে থামে। উঁকি মেরে এর ওর কাছে জানতে চায়, কার লাশ? কোথা থেকে এসেছে? জানতে পারে তার সিএনজির মালিক আলতাফ হোসেনের বড় ছেলে আত্মহত্যা করেছে। নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না সে। গত মাসেই তার সাথে অনেকক্ষণ কথা হয়েছিল। ছেলেটা ঢাকার বাইরে একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তো।

সাদেক আলির ভিতরটা দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে। তন্দ্রাচ্ছন্নের মতো সে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। তার চোখে একইসাথে ভেসে ওঠে মৃত ছেলেটার মুখ, রুম্মনের নিষ্পাপ চাহনি আর একজোড়া গোলাপি রঙের জুতা।  

/জেড-এস/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘“সুলতান পদক” পেয়ে আমি গর্বিত ও ধন্য’
‘“সুলতান পদক” পেয়ে আমি গর্বিত ও ধন্য’
বুয়েটকে হিজবুত তাহরীর-মুক্ত করতে ৬ শিক্ষার্থীর স্মারকলিপি
বুয়েটকে হিজবুত তাহরীর-মুক্ত করতে ৬ শিক্ষার্থীর স্মারকলিপি
বরুণের স্পিনের পর সল্ট ঝড়ে দিল্লিকে হারালো কলকাতা
বরুণের স্পিনের পর সল্ট ঝড়ে দিল্লিকে হারালো কলকাতা
বেতন বৈষম্যে উচ্চশিক্ষার মান হারাচ্ছে বেসরকারি কলেজগুলো
বেতন বৈষম্যে উচ্চশিক্ষার মান হারাচ্ছে বেসরকারি কলেজগুলো
সর্বাধিক পঠিত
‘পুলিশ’ স্টিকার লাগানো গাড়িতে অভিযান চালাবে পুলিশ
‘পুলিশ’ স্টিকার লাগানো গাড়িতে অভিযান চালাবে পুলিশ
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
শরীরের তাপ কমায় এই ৮ খাবার
আজ কি বৃষ্টি হবে?
আজ কি বৃষ্টি হবে?
জালিয়াতির মামলায় সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার ২৬ বছরের কারাদণ্ড
জালিয়াতির মামলায় সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার ২৬ বছরের কারাদণ্ড
মঙ্গলবার দুই বিভাগের সব, তিন বিভাগের আংশিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে
মঙ্গলবার দুই বিভাগের সব, তিন বিভাগের আংশিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে