X
মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫
১৭ আষাঢ় ১৪৩২

জঞ্জাল

অরিত্র সান্যাল
০৭ মে ২০২১, ২৩:২০আপডেট : ০৭ মে ২০২১, ২৩:২০

জঞ্জাল

কী দেখে চিনব যে ওটাই মহাকাল—
সূচিভেদ্য অন্ধকার অথবা দিনের আলো—
বিভ্রান্ত একটি জাহাজ না থাকলে
সাদা পাতাকেও অতটা গভীর লাগে না
মৃত্যুভয়ে

`কোথাও পৃথিবী নেই’
এই লেখার ওপরে শুধু দীর্ঘ দীর্ঘশ্বাস
বায়ুহীন
না-ফুরোনো দুপুর অবধি পড়ে আছে

একটি বৃহৎকায় যন্ত্র সে দীর্ঘশ্বাস তুলে নিল
চারদিকে এখন যন্ত্র
লক্ষ লক্ষ মরে যাওয়া
বিস্মৃত যন্ত্র জেগে উঠছে

রহস্যময় ইথার তরঙ্গের দিকে একটি ভাঙা ট্রানজিস্টার তাকিয়েছিল

তোমার আমার মধ্যে কত পলক দূর

পাশেই নয়ানজুলি। অঝোরে বৃষ্টি পড়ছিল। মাঠ।
ছেলেরা দাপাদাপি করে ফুটবল খেলছে—

আমার সমস্ত দেখতে পাওয়ার শুরু হলো এখান থেকে—
এই বাবলাতলায়

আকাশ থেকে নেমে আসা জোনাকিদের প্রকাণ্ড সব নাম।
চারদিকে আবেশ ছড়িয়ে ছিল পরিত্যক্ততার।
এমন সময় মস্ত অঘটন
বাইরে একটা দুপুর ফুরোচ্ছে না—
সময় ঘড়ঘড় করে উল্টোদিকে ঘুরতে শুরু করল

আস্ত মাঠ থেকে ছেলেদের ফুটবল খেলা উবে
ধারাবিবরণীর শব্দ হয়ে ঢুকে যাচ্ছে ট্রাঞ্জিস্টরে
বৃষ্টির ফোঁটা তিথি নক্ষত্র হয়ে
উঠে যাচ্ছে আকাশে

প্রতিটি শব্দ মুছে পাতা সাদা হতে হতে
এখন প্রথম পঙক্তিতে এসে ঠেকেছে
কোথাও পৃথিবী নেই
কোথাও পৃথিবী নেই

অল্প কম্পন নিয়ে আকাশের দিকে তাকাচ্ছে একটি ট্রানজিস্টার
যেন মহাকাল
যেন একটা জাহাজ
যেন একটা সাদা পাতা—সবকিছু ওখানেই

২.

আমি যা লিখি তা এক প্রকাণ্ড ধ্বংসস্তূপ।

আসলে, শূন্যতা আমাদের ক্রমাগত দেখে যাচ্ছে।

একটি ভাঙা পূর্বদিক কেউ ফেলে দিয়ে গেল—

আসলে
শূন্যতা
আমাদের
ক্রমাগত দেখে যাচ্ছে।

দিশাহীন একটি অন্ধ আলো জ্বলে আছে আমাদের জীবনে—
যে জীবন সামান্য ঘর্ষণ লাগলেই মনে হয় এগিয়ে গেল।

পুরোনো ভাঙা দেহযন্ত্র পঙক্তির ওপর পড়ে আছে শেষ মাটি

আমি সর্বদাই একটি যুদ্ধের পরে লিখতে বসি
চারিদিকে ধ্বংসস্তূপ, সারা পৃথিবী আবার শুরু হবে—এখান থেকে

যুদ্ধের কথা ধুন্ধুমার যুদ্ধের কথা
লিখতে—মুখের ভিতর থেকে শব্দ শব্দের ভিতর থেকে
মুখ ক্লান্তির মেদ মাংস সব উপুড় হয়ে পড়ে আছে
কোথাও কিচ্ছু নেই শুধু বাসি ধাতু
অপচয় চুঁইয়ে আসছে ক্ষীণ বাতাস

আমি নিজের ভিতর গা-ঢাকা দিয়ে আছি

৩.

সকাল হলেই পেরেক ডেকে উঠছে লক্ষ লক্ষ।
স্প্রিং লাফিয়ে উঠে তছনছ করতে চাইছে জাড্য।
জলাধার যেমন হু হু ভরে যায়—দৃশ্যের পর
দৃশ্য–জগৎ খুলে যাওয়ার পর—এসে
ভরে দিচ্ছে চতুর্দিক

সচলতার নির্যাস ফোঁটা ফোঁটা ঢুকে আসছে শরীরে—
ঢেউ এসে ধাক্কা দিচ্ছে—অধীর সমীর তাকে ঠেলে দিচ্ছে
দূরে—তার গা থেকে খসে যাচ্ছে নুনের চাঙর

খেত ও জলার ধারে আমি নিজেকেও শুইয়ে রেখে ভাবি
মৃত্যু আমার সাষ্ঠাঙ্গের থেকে কতই বা দীর্ঘ হতে পারে?
যান্ত্রিক বিশ্রামের থেকে বেশিকিছু কি?

অবব্যহারে স্প্রিংয়ের চঞ্চলতা পেরেক বল্টু নাট
ঘুমিয়েই থেকে গেল শরীরে আমার
মানুষও কি ব্যবহারে জেগে ওঠে?

/জেডএস/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ইউল্যাবে রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী উদযাপন
ইউল্যাবে রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী উদযাপন
সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে ডাকসু নির্বাচন কমিশনের বৈঠক
সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে ডাকসু নির্বাচন কমিশনের বৈঠক
এভিয়েশন সিকিউরিটির নতুন ইউনিফর্ম উদ্বোধন
এভিয়েশন সিকিউরিটির নতুন ইউনিফর্ম উদ্বোধন
এক দলকে সরিয়ে আরেক দলকে বসানোর জন্য কেউ রক্ত দেয়নি: নাহিদ ইসলাম
এক দলকে সরিয়ে আরেক দলকে বসানোর জন্য কেউ রক্ত দেয়নি: নাহিদ ইসলাম
সর্বাধিক পঠিত
সঞ্চয়পত্রে কমলো মুনাফার হার, কার্যকর ১ জুলাই থেকে
সঞ্চয়পত্রে কমলো মুনাফার হার, কার্যকর ১ জুলাই থেকে
ইস্টার্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পরিবারের ব্যাংক হিসাব জব্দ
ইস্টার্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পরিবারের ব্যাংক হিসাব জব্দ
আরও ১১ ব্যাংকের সম্পদ যাচাই করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
আরও ১১ ব্যাংকের সম্পদ যাচাই করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
অন্তর্বর্তী সরকার ও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা মুখোমুখি
প্রশাসনে থামছে না আন্দোলনঅন্তর্বর্তী সরকার ও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা মুখোমুখি
আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে নতুন অর্থবছরের বাজেট
আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে নতুন অর্থবছরের বাজেট