X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘তৃতীয় চোখে অন্য জীবন’

মো. বরাতুজ্জামান স্পন্দন, গণ বিশ্ববিদ্যালয়
২৯ নভেম্বর ২০২২, ০২:২৪আপডেট : ২৯ নভেম্বর ২০২২, ০২:২৪

সমাজের অবহেলিত ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে হিজরা বা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষজন অন্যতম। এই অবহেলিত জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে গণ বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৮ সালে তৃতীয় লিঙ্গের ছয় জনকে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে নিয়োগ দেয়। তাদের জীবনের গল্প তুলে ধরার প্র‍য়াসে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ছবি প্রদর্শনী হয়েছিল গত ৩০ জুলাই। দ্বিতীয়বারের মতো প্রদর্শনী হহয় গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে গত ১৯ থেকে ২১ নভেম্বর।

গণ বিশ্ববিদ্যালয় ফটোগ্রাফিক সোসাইটির (জিবিপিএস) এ আয়োজনে সার্বিক সহায়তায় ছিল গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান ও সমাজকর্ম বিভাগ এবং টেকনিক্যাল পার্টনার হিসেবে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক ছবি প্রতিযোগিতা প্রকল্প। এই প্রদর্শনীতে অবহেলিত জনগোষ্ঠী থেকে উঠে আসা ছয় জনের জীবনের গল্প উঠে এসেছে। ছবি তুলেছেন মুহাম্মদ নঈম উদ্দিন।

তাদের মধ্যে একজন নূর আলম নীলা। খুলনা জেলার রূপসা উপজেলায় জন্মগ্রহণ করলেও বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর বড় ভাইয়ের সঙ্গে ঢাকায় চলে আসেন। তার মধ্যে তৃতীয় লিঙ্গের বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পেলেই শুরু হয় পারিবারিক বৈষম্য। সময়ের আবর্তনে বড় ভাইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হলেও যোগাযোগ আছে বোনদের সঙ্গে। একসময় গুরু অনন্যার হাত ধরে শুরু হলো নতুন জীবন। জীবিকার তাগিদে বাস, লঞ্চ, ট্রেন বা দোকান থেকে টাকা তুলেছেন। পোশাক কারখানা ও বিউটি পার্লারে কাজ করলেও ন্যায্য মুজুরি মিলতো না।

সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তাকর্মী হিসাবে যোগদানের পর তার স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেয়েছেন নূর আলম নীলা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক সবার সঙ্গে দিনযাপন করেন সম্মানের সঙ্গে। তার মতে বাংলাদেশের সবগুলো সরকারি-বেসরকারি অফিসে যদি অন্তত পাঁচ জন করে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষকে কাজের সুযোগ দেওয়া হয় তবে তাদের অন্তত রাস্তাঘাটে মানুষের কথা শোনা লাগবে না।

টাঙ্গাইলের পিতৃ-মাতৃহীন সুমন মিয়া ওরফে সুমনা বলেন, মানুষের একটুখানি সুন্দর আচরণ যে কত বড় শক্তির উৎস সেটা আমি এখন প্রতিনিয়ত উপলব্ধি করি। সুন্দর আচরণ মানুষকে সুস্থভাবে বাঁচিয়ে রাখে। যেমন আমার সারাদিনের পরিশ্রমকে ম্লান করে রাখে এখানকার ছাত্র- শিক্ষকদের সুন্দর আচরণ। এখানে আমার বেতন হয়তো খুব বেশি না, মাঝে মধ্যে অবসর জীবন নিয়েও চিন্তিত হই। কিন্তু বর্তমানে খুব ভালো আছি। এই একটুখানি সুন্দর আচরণ এবং আত্মসম্মানবোধের জন্য অনেক দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। এখন এই চাকরি আমাকে আত্মসম্মানবোধ এনে দিয়েছে। এখন আমার নিজ গ্রামেও আমার গ্রহণযোগ্যতা আছে।

তৃতীয় লিঙ্গের একজন মানুষ হিসেবে যে সমাজে একাই টিকে থাকা কঠিন, সেখানে টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার জাহানারা কাঁধে তুলে নিলেন একই মায়ের গর্ভে জন্ম নেওয়া অসুস্থ আরেক তৃতীয় লিঙ্গ বোনের দায়িত্ব। ক্যান্সারে আক্রান্ত বোনের চিকিৎসার গুরুভার একাই টেনে নিয়ে যাচ্ছেন একজন নিঃসঙ্গ শেরপার মত। একান্ত আলোচনায় জাহানারা জানান, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি হওয়ার পর মনে হলো এই বুঝি সুখ খুঁজে পেলাম। কিন্তু অসুস্থ বোনের চিকিৎসার খরচ এবং বাস্তবতা আমাকে সারাদিনই চিন্তিত করে রাখে।

 

/এফএস/
সম্পর্কিত
আইএসইউর উপাচার্য পদে পুনরায় নিয়োগ পেলেন ড. আব্দুল আউয়াল খান
সিআইইউতে সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট বিষয়ক কোর্স চালু
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর আদায়ের ওপর আদালতের স্থিতাবস্থা
সর্বশেষ খবর
ব্যাংককে চীনের দাবাড়ুকে হারালেন মনন
ব্যাংককে চীনের দাবাড়ুকে হারালেন মনন
ব্যয়বহুল প্রযুক্তি আর ক্ষতিকর জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধের এখনই সময়
এনার্জি মাস্টার প্ল্যান সংশোধনের দাবিব্যয়বহুল প্রযুক্তি আর ক্ষতিকর জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধের এখনই সময়
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়েছে
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়েছে
তিন লাল কার্ডের ম্যাচ নিয়ে কে কী বললেন!
তিন লাল কার্ডের ম্যাচ নিয়ে কে কী বললেন!
সর্বাধিক পঠিত
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
ইস্পাহানে হামলাইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান