খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) একদল শিক্ষার্থী। বিক্ষোভ শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ছাত্রলীগের মতো কার্যকলাপ করলে ছাত্রদলকেও ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ক্যাম্পাসের মূল গেট থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে বিজয়-২৪ হলের সামনের গিয়ে শেষ হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা, একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার, চব্বিশের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার, বায়ান্নর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার, রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়, কুয়েটে হামলা কেন? প্রশাসন জবাব চাই’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
বিজয়-২৪ হলের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মো. হান্নান রহিম বলেন, ‘আজকে কুয়েটে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদলের সন্ত্রাসীদের হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি আমরা। প্রশাসনকে ঘটনাটি তদন্ত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে এর বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আজকে ছাত্রদল যে লিখিত বিবৃতি দিয়েছে, তাতে তারা উল্লেখ করেছে ছাত্রদলের ওপর হামলা করা হয়েছে। এটি হাস্যকর এবং ছাত্রলীগের মতো কার্যকলাপ। আমি ছাত্রদলকে বলতে চাই, আপনারা ছাত্রলীগের পথে হাঁটবেন না। আমরা ছাত্রলীগকে দেশছাড়া করেছি। আপনারাও যদি তাদের পথে হাঁটেন তাহলে আপনাদেরও বিতাড়িত করতে দ্বিধা করবো না। কুয়েটের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার না করলে ঘরে ফিরবে না শিক্ষার্থীরা।’
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিব হোসাইন বলেন, ‘ছাত্র রাজনীতির সংস্কার না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও ছাত্ররাজনীতি চলবে না। অন্যথায় ক্যাম্পাসে এরকম হামলা, সন্ত্রাসী কার্যক্রম চলতে থাকবে। আমি ছাত্রদের বলবো, আপনারা যদি জুলাই গণঅভ্যুত্থান ধরে রাখতে চান তাহলে কোনও ক্যাম্পাসে কোনও দল যেন লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি না করতে পারে, সে বিষয়ে সোচ্চার হোন।’
কুয়েটের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কুয়েট শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন গ্রুপে ছাত্রদলের কমিটি গঠন করার প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা চলছিল। সোমবার তারা ক্যাম্পাস এলাকায় লিফলেট বিতরণ করে। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে মিছিল বের করেন। এ সময় তারা ‘ছাত্ররাজনীতির ঠিকানা, এই কুয়েটে হবে না’, ‘দাবি মোদের একটাই, রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস চাই’, ‘এই ক্যাম্পাসে হবে না, ছাত্ররাজনীতির ঠিকানা’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে ছাত্র হলগুলোর সামনে দিয়ে প্রদক্ষিণ করেন। পরে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে পৌঁছালে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দেন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলা সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩০ জন আহত হন। সংঘর্ষে আহত ব্যক্তিদের কুয়েটের অ্যাম্বুলেন্সে করে একের পর এক হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। সন্ধ্যার পরও অ্যাম্বুলেন্সে করে আহত শিক্ষার্থীদের হাসপাতালে নিতে দেখা যায়।