X
বুধবার, ১৫ মে ২০২৪
১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

রাজধানীর ৪০ শতাংশ ভোটার স্মার্ট কার্ড নিতেই যাননি

এমরান হোসাইন শেখ
১৫ এপ্রিল ২০১৭, ২৩:০১আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০১৭, ০৮:২৭

 

স্মার্ট কার্ড অনেক আয়োজন করে মাইকিং, ব্যানার, পোস্টার, মোবাইলে এসএমএস দিয়ে বিতরণ কার্যক্রম চালানো হলেও রাজধানীর ৪০.৫২ শতাংশ ভোটার উন্নত জাতীয় পরিচয়পত্র (স্মার্ট ভোটার কার্ড) নিতে নির্ধারিত কেন্দ্রে যাননি। কার্ড নিতে ৫৯.৪২ শতাংশ কেন্দ্রে গেলেও হাতে পেয়েছেন ৫৫.৪২ শতাংশ ভোটার। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়েও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রযুক্তিগতসহ নানা জটিলতায় ৪ শতাংশ ভোটার কার্ড পাননি। ইসির গত ২ এপ্রিল পর্যন্ত স্মার্ট কার্ড বিতরণের কার্যক্রম পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

অবশ্য ইসি বলছে, রাজধানীর ভোটারের বড় অংশ অস্থায়ী হওয়ায় তারা কার্ড নিতে আসেননি। তবে যারা কার্ড নেননি, তারা সংশ্লিষ্ট থানা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করে কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন।

জানা গেছে, রাজধানীতে ৬ষ্ঠ পর্যায়ের কার্ড বিতরণের কাজ শেষ পর্যায়ে গত ২ এপ্রিল পর্যন্ত কমিশনের ২৪ লাখ ৯৫ হাজার ৭৮টি কার্ড বিতরণের জন্য প্রস্তুত ছিল। এর মধ্যে ১৩ লাখ ৮২ হাজার ৮৫০টি কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। কার্ড নিতে কেন্দ্রে গিয়েছেন ১৪ লাখ ৮৩ হাজার ৯৬৩ জন ভোটার। যার মধ্যে ইসির ডাটা সেন্টার থেকে ভোটারের ডাটা মুছে যাওয়া, অসম্পূর্ণ তথ্যের কারণে ছাপা না হওয়া, আঙুলের ছাপ অস্পষ্ট হওয়াসহ নানা জটিলতায় কেন্দ্রে গেলেও কার্ড পাননি ১লাখ ১ হাজার ১১৩জন।

কার্ড বিতরণ কার্যক্রম পর্যালোনা করে দেখা গেছে, পুরান ঢাকায় বিতরণের হার বেশি। অন্যদিকে সব থেকে কম বিতরণ করা হয়েছে রমনা ও উত্তরা এলাকায়। ইসির তথ্য মতে, রমনায় ৪৫.শূন্য ৩ শতাংশ, ক্যান্টমেন্টে ৫৪.৭১ শতাংশ, লালবাগে ৫৬.৭৫ শতাংশ, সবুজবাগে ৫৮.শূন্য ৮ শতাংশ, মিরপুরে ৫১.৫৮ শতাংশ, মতিঝিলে ৬০.৫০ শতাংশ, মোহাম্মদপুরে ৫৬.১৫ শতাংশ, ডেমরায় ৬৯.১৭ শতাংশ, উত্তরায় ৪৭.৬২ শতাংশ, গুলশানে ৪৮.৫০ শতাংশ, কোলোয়ালীতে ৮০.৫৮ শতাংশ এবং ধনমন্ডিতে ৫৩.৯৬ শতাংশ কার্ড বিতরণ হয়েছে।

রমনা থানা নির্বাচন অফিসার মাহবুবা মমতা হেনা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রাজধানীকে অনেকে বসবাস করেন অস্থায়ীভাবে। আর ওই অস্থায়ী ঠিকানায় তারা ভোটার হয়েছিলেন। যাদের অনেকে এখন ওই বাসা ছেড়ে ঢাকার বাইরে বা ঢাকার অন্য এলাকায় চয়ে গেছেন। এসব লোকের অনেকেই কার্ড নিতে আসেননি। যে কারণে বিতরণের হার কিছুটা কম। তবে, প্রথম দিকে যে গতি ছিল শেষ দিকে সেটা অনেক বেড়েছে। অনেকে দিনভর লাইন দিয়ে কার্ড নিয়েছেন।’

যারা কার্ড নিতে পারেননি তাদের থানা অফিসে কার্ড দেওয়া হবে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে মাহবুবা মমতা হেনা বলেন, ‘বায়োমেট্রিক ও চোখের আইরিশ নেওয়ার যন্ত্র তাদের থানায় থাকবে।’ তবে এখনও পর্যন্ত তারা এটা পাননি ফলে বর্তমানে এই সেবাটি দিতে পারছে না। তিনি বলেন, ‘এটি পেলেই কার্ড বিতরণের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। আর এর আগে চাইলে ইসির এনআইডি শাখায় গিয়ে আঙুলের ছাপ ও আইরিশের প্রতিচ্ছবি দিয়ে কেউ স্লিপ নিয়ে এলে কার্ড সরবরাহ করতে পারবে।’

ধানমন্ডি থানা নির্বাচন অফিসার শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার এলাকায় কেন্দ্র পর্যায়ে কার্ড বিতরণ শেষ হয়েছে। কেন্দ্র থেকে ৫৫ শতাংশের মতো ভোটারের কার্ড দেওয়া হয়েছে। যারা নিতে পারেননি, তারা থানায় অফিসে এসে নিতে পারবেন।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ডিভাইস স্বল্পতার কারণে পুরোপুরি বিতরণ কার্যক্রম করা যাচ্ছে না। কমিশন থেকে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বয়োমেট্রিক ও আইরিশের প্রতিচ্ছবি সংগ্রহের ডিভাইস সরবরাহ করলে, এটি করা যাবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রথম দিকে কার্ড গ্রহণের হার কিছুটা কম হলেও ভোটারদের মাঝে সাড়া পড়ায় এখন ব্যাপকহারে তারা কার্ড নিতে আসছেন। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে অনেকে কার্ড নিচ্ছেন। তবে, আমাদের ডিভাইস স্বল্পতার কারণে কিছুটা সমস্যা মোকাবিলা করতে হচ্ছে।’

বর্তমানে ধার করা ডিভাইস দিয়ে স্মার্ট কার্ড বিতরণ হচ্ছে ‍উল্লেখ করে ইসি সচিব জানান, ‘আমরা ৪ হাজার ডিভাইস কেনার জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। তবে এটি নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা চলছে। মামলা নিষ্পত্তি হলেই ডিভাইসগুলো কিনতে পারব। তখন প্রতিটি থানা অফিসে ডিভাইস সরবরাহসহ মাঠপর্যায়ে পুরোদমে বিতরণ কার্যক্রম চালাতে পারব।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের মধ্যে দেশের ৯ কোটি ভোটারের মধ্যে স্মার্টকার্ড সরবরাহ করার কথা রয়েছে। গত বছরের ২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট কার্ড বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। পরদিন ৩ অক্টোবর থেকে রাজধানী ঢাকা ও বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীদের মাঝে কার্ড বিতরণ শুরু হয়। গত ৬ মাসে রাজধানীর ৫০ লাখের মতো ভোটারের মধ্যে অর্ধেকের কিছু বেশি ভোটার বিতরণ কার্যক্রমের আওতায় এসেছে। বর্তমানে রাজধানীতে সপ্তম তথা শেষ পর্যায়ের বিতরণ কার্যক্রম চলছে। আগামী ১১ অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকার বিতরণ কার্যক্রম চলবে। রাজধানীর বাইরে গত ১৬ মার্চ চট্টগ্রাম ও গত ২ এপ্রিল রাজশাহী মহানগরীতে কার্ড বিতরণ শুরু হয়েছে। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্য ৫টি বিভাগীয় শহরে বিতরণ শুরু হবে। তারপর জেলা, উপজেলা/পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কার্ড বিতরণ হবে।

/এমএনএইচ/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
যে কারণে রাজশাহীর তিন প্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী ফেল
যে কারণে রাজশাহীর তিন প্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী ফেল
টিভিতে আজকের খেলা (১৫ মে, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (১৫ মে, ২০২৪)
আইএফআইসি ফার্স্ট কোয়ার্টার ফিন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্ট
আইএফআইসি ফার্স্ট কোয়ার্টার ফিন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্ট
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ফিন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্ট
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ফিন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্ট
সর্বাধিক পঠিত
শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল
শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল
সাকিব-তামিমের কারণে দলের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে: ইমরুল 
সাকিব-তামিমের কারণে দলের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে: ইমরুল 
সোনার অলংকার কেনাবেচায় নতুন হার নির্ধারণ
সোনার অলংকার কেনাবেচায় নতুন হার নির্ধারণ
পেঁয়াজ আমদানি শুরু
পেঁয়াজ আমদানি শুরু
তাসকিনকে সহ-অধিনায়ক করে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা
তাসকিনকে সহ-অধিনায়ক করে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা