X
রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫
২২ আষাঢ় ১৪৩২

ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করছে মিয়ানমার

শেখ শাহরিয়ার জামান
২২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০২:৩০আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০২:৩৩

মিয়ানমার সীমান্তে বিজিবির পাহারা (ফাইল ছবি: কক্সবাজার প্রতিনিধি) রাখাইনকে আবারও অশান্ত করে তুলছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। যা এ অঞ্চলের ভূরাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের বিতাড়নের পরে রাখাইনে আরাকানিদের বিরুদ্ধে অপারেশন শুরু করেছে মিয়ানমার বাহিনী। গত কয়েক মাসে অন্তত ২০টি গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে তারা। এক লাখেও বেশি আরাকানি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী গৃহহারা হয়েছে। মিয়ানমারে আগামী নভেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এ পরিস্থিতিতে রাখাইন অশান্ত হলে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তবর্তী প্রদেশগুলো এবং মিয়ানমারের অভ্যন্তরেও সমস্যা আরও প্রকট হবে।
এ বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র ফেলো মোহাম্মাদ শহীদুল হক বলেন, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী এই অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। এরফলে পার্শ্ববর্তী দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে এখন গণতন্ত্রের মাধ্যমে ধ্বংসলীলা চালানো হচ্ছে। দীর্ঘদিন দমন-পীড়ন করে ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের একটি বড় অংশকে তারা বলপূর্বক বাংলাদেশের দিকে ঠেলে দেয়। ফলে সেখানে শূন্যস্থান দখল করে আরাকানিরা।তিনি বলেন,  ‘এখন মিয়ানমার বাহিনী আরাকানিদের বিরুদ্ধে অপারেশন চালাচ্ছে যা পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করবে।’
মিয়ানমার বাহিনীর উদ্দেশ্য ছিল আরাকানি ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংখ্যার মধ্যে ভারসাম্য তৈরি করা। এ কারণে তারা কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে বিতাড়ন করে কিন্তু এটি একটি ভয়ংকর কৌশল কারণ এর ফলে ওই এলাকার অর্থনীতি ও রাজনীতি উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, রাখাইনে ধান চাষ, মাছ উৎপাদনসহ আরও কৃষিকাজ রোহিঙ্গারা করতো কিন্তু এখন এই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড না থাকার কারণে মিয়ানমার অর্থনৈতিক সমস্যায় পড়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে জাতিসংঘকে আরও বেশি তৎপর হওয়ার আহবান জানিয়ে সাবেক এই পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘জাতিসংঘকে আরও বেশি স্বচ্ছ ও জবাবদিহি হতে হবে।’
মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে জাতিসংঘের দুটি সংস্থা চুক্তি করেও রাখাইনে পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য কাজ করতে পারছে না জানিয়ে তিনি বলেন, কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে এ জন্য জাতিসংঘের পক্ষ থেকে কোনও অভিযোগ বা বিবৃতি বা অন্য ধরনের কার্যক্রম নেওয়া হয় না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিয়ানমারে বাংলাদেশের সাবেক এই ডিফেন্স এটাশে বলেন, ‘রাখাইনে এখন অশান্ত পরিস্থিতি তৈরি হলে সেখানে অবস্থিত আরাকানি অর্থাৎ বৌদ্ধরা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘তারা যদি বাংলাদেশে পালিয়ে আসে তবে এখানে অবস্থিত রোহিঙ্গাদের সঙ্গে তাদের জাতিগত দাঙ্গা হওয়ার আশঙ্কা আছে। কারণ ২০১২ ও ২০১৭ সালে আরাকানিরা রোহিঙ্গাদের অত্যাচার করেছে।’ নতুনভাবে মিয়ানমারের মানুষ বাংলাদেশে আসলে এটি নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হবে বলে তিনি মনে করেন।



/এমআর/আপ-এনএস/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ট্রাম্পের সঙ্গে সর্বশেষ ফোনালাপকে সবচেয়ে ফলপ্রসূ বললেন জেলেনস্কি
ট্রাম্পের সঙ্গে সর্বশেষ ফোনালাপকে সবচেয়ে ফলপ্রসূ বললেন জেলেনস্কি
গ্লোবাল সুপার লিগে দুবাইয়ের সাকিব
গ্লোবাল সুপার লিগে দুবাইয়ের সাকিব
‘ধর্ষণের’ পর লোকলজ্জার ভয়ে কিশোরীর বিষপানে আত্মহত্যা
‘ধর্ষণের’ পর লোকলজ্জার ভয়ে কিশোরীর বিষপানে আত্মহত্যা
‘কার্গো ভিলেজের কোল্ডস্টোরেজ আরও বড় করা হবে’
‘কার্গো ভিলেজের কোল্ডস্টোরেজ আরও বড় করা হবে’
সর্বাধিক পঠিত
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু
সঞ্চয়পত্রের মুনাফায় হাত: চাপের মুখে প্রবীণ ও মধ্যবিত্তরা
সঞ্চয়পত্রের মুনাফায় হাত: চাপের মুখে প্রবীণ ও মধ্যবিত্তরা
আসছে নতুন কারিকুলাম: ফ্রেমওয়ার্ক ডিসেম্বরে, ‘বড় পরিসরে’ থাকবে জুলাই
আসছে নতুন কারিকুলাম: ফ্রেমওয়ার্ক ডিসেম্বরে, ‘বড় পরিসরে’ থাকবে জুলাই
কনস্টেবলকে ‘স্যার’ ডেকে ধরা পড়লেন ভুয়া এসআই
কনস্টেবলকে ‘স্যার’ ডেকে ধরা পড়লেন ভুয়া এসআই
আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে প্রতীকী কফিন মিছিল
আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে প্রতীকী কফিন মিছিল