X
বুধবার, ০৮ মে ২০২৪
২৪ বৈশাখ ১৪৩১

প্রথম বিজয় দিবসের কর্মসূচি ঘোষণা

উদিসা ইসলাম
২২ অক্টোবর ২০২০, ০৮:০০আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২০, ০৮:০০

প্রথম বিজয় দিবসের কর্মসূচি ঘোষণা (বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সরকারি কর্মকাণ্ড ও তার শাসনামল নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ পড়ুন ওই বছরের ২২ অক্টোবরের ঘটনা।)
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর কবল থেকে মুক্তিলাভের প্রথম জাতীয় বিজয় দিবস উদযাপন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণের ঘোষণা দেওয়া হয়। এ উপলক্ষে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী ময়দানে এক জনসমাবেশের আয়োজন করা হবে। যেখানে জাতির জনক প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষণ দেবেন। বঙ্গবন্ধু সেদিন সেই সমাবেশে দেশের সংবিধান, প্রথম সাধারণ নির্বাচন ও বিভিন্ন জাতীয় বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ভাষণ দেবেন। ১৯৭২ সালের ২২ অক্টোবর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান সংবাদপত্রে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানান।
উল্লেখ, ১৯৭২ সালের ২৫ মার্চের কালরাত থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত হানাদার পাকিস্তানি জল্লাদ বাহিনী বাংলাদেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর ইতিহাসের এক নজিরবিহীন মর্মান্তিক হত্যাযজ্ঞ, নারী নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ, লুটতরাজ এবং এক ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পর বাংলার অগ্নিসন্তান মুক্তিবাহিনীর প্রচণ্ড দুর্বার আক্রমণে শোচনীয় পরাজয়ের মুখে ১৬ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর যৌথ কমান্ডের নিকট আত্মসমর্পণ করে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান এই জাতীয় বিজয় দিবসকে সফল করে তোলার জন্য দেশের সর্বস্তরের জনগণ, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।

প্রথম বিজয় দিবসের কর্মসূচি ঘোষণা
দশটি সংশোধনী প্রস্তাব বিবেচনায়

১৯৭২ সালের এই দিন গণপরিষদ ভবনের কমিটির পক্ষে দশটি সংশোধনী প্রস্তাব বিবেচনার কথা জানানো হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় সেখানে জমা হওয়া প্রস্তাব থেকে এগুলো বাছাই করা হয়। আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সদস্যদের কাছ থেকে প্রাপ্ত খসড়া সংবিধান সংশোধনী প্রস্তাব গ্রহণ সম্পর্কে সাধারণ সভায় আলোচনা করা হয়। বৈঠক শেষে সংসদীয় দলের চিফ হুইপ শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের এ তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি আরও জানান, খসড়া সংবিধানের সংশোধনী প্রস্তাব পরীক্ষার উপ-কমিটি কর্তৃক বাছাইকৃত এবং সুপারিশকৃত সংশোধনের প্রস্তাবগুলো আলোচনা করা হয়। গত চারদিনে উপ-কমিটি প্রায় ৭৫টি সংশোধনী প্রস্তাব পরীক্ষা ও বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে।

ভোজ্যতেলে সোয়া কোটি লোক রোগাক্রান্ত

দেশে ভেজালবিরোধী বিশুদ্ধ খাদ্য আইন বলবৎ থাকা সত্ত্বেও ১৯৭২ সালের এই সময়টাতে রাজধানীসহ দেশের সর্বত্র খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পায়। সে সময় বনস্পতি সরিষার তেল পাওয়া যায়। বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য ৪০ থেকে ৬০ ভাগ ভেজাল দেওয়া হচ্ছে বলে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ করা হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা বলছেন, কেবল ভোজ্যতেলে ভেজালের কারণে দেশের শতকরা ২৫ ভাগ লোক অর্থাৎ প্রায় সোয়া কোটি লোক পেটের পীড়া, চোখের পীড়াসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছে।

প্রথম বিজয় দিবসের কর্মসূচি ঘোষণা

বাঙালিরা আমার খাঁচায় বন্দি পাখি

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলী ভুট্টো পাকিস্তানে আটক বাঙালিদের ‘আমার খাঁচায় বন্দি পাখি’ বলে অভিহিত করেন। এপ্রিল মাসে করাচির পত্রিকায় প্রকাশিত এক সংবাদ থেকে এ তথ্য জানা যায়। এছাড়া সম্প্রতি পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় সরকারি কর্মচারী হুমকি দিয়েছেন যে বাংলাদেশ ‘ভালো আচরণ প্রদর্শন না করলে’ পাঞ্জাবের ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের পুনরাবৃত্তি ঘটবে। এবং পাকিস্তানে আটক বাঙালিদের বন্দি হিসেবে রাখা হবে। এই হুমকি প্রকাশের পর ১৯৭২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নিউ টাইমস-এ প্রকাশিত এক সম্পাদকীয়তে ও ৫ সেপ্টেম্বর করাচি থেকে প্রকাশিত ডন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়, ওই বছরের জানুয়ারি মাসে প্রেসিডেন্ট পাকিস্তানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সুযোগদানের সম্মতির কথা ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু মে মাসে আবার ঘোষণা করেন যে পাকিস্তান সরকার আটক বাঙালিদের জীবনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বিধানের দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারে না। উল্লেখ্য যে ডন পত্রিকার নিবন্ধকার নাজিউল্লাহ সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

একই সূত্রে জানা যায়, গত ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে পাকিস্তানে আটক বাঙালি সামরিক অফিসার কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত ও নিরস্ত্র করা হয়। তাদের পরিবারের প্রায় ৩৯ হাজার সদস্যকে প্রাথমিক পর্যায়ে বেলুচিস্তান উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ বন্দিশিবিরে আটক রাখা হয়। পরে তাদের মাঝে অনেক অসুস্থ ব্যক্তিদের খাইবার গিরিপথের সাগাই দুর্গে অন্তরীণ রাখা হয়। পাকিস্তানে আটক বাঙালিদের ‘নাগরিক’ অথবা ‘শত্রু’ কোনও পর্যায়ে ঘোষণা করা হয়নি। পাকিস্তান সরকারের উদ্দেশ্য হচ্ছে আটক বাঙালিদের জেনেভা কনভেনশনের আওতাবহির্ভূত রাখা।

করাচির পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে বলা হয়, প্রাথমিক, মাধ্যমিক কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত প্রায় কুড়ি হাজার বাঙালি ছাত্রছাত্রীকে আটক করা হয়। সমস্ত বাংলা মাধ্যম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের বাঙালি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।

/এমআর/এমওএফ/
সম্পর্কিত
ভূমিহীনমুক্ত হচ্ছে সাতক্ষীরার ৬ উপজেলা, প্রস্তুত ৩৬৪টি ঘর
‘প্রধানমন্ত্রীর উপহার বেঁচে থাকার সাহস জুগিয়েছে’
রাহমানের কণ্ঠে ‘জয় বাংলা’, ভিডিও করলেন মুগ্ধ প্রধানমন্ত্রী
সর্বশেষ খবর
পিএসজিকে হারিয়ে ফাইনালে ডর্টমুন্ড
চ্যাম্পিয়নস লিগপিএসজিকে হারিয়ে ফাইনালে ডর্টমুন্ড
রাজস্থানকে হারিয়ে প্লে অফের আশা বাঁচিয়ে রাখলো দিল্লি
রাজস্থানকে হারিয়ে প্লে অফের আশা বাঁচিয়ে রাখলো দিল্লি
ঢাকা আসছেন মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু
ঢাকা আসছেন মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন আজ
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন আজ
সর্বাধিক পঠিত
ব্যারিস্টার সুমনকে একহাত নিলেন চুন্নু
ব্যারিস্টার সুমনকে একহাত নিলেন চুন্নু
ছুড়ে দেওয়া সব তীর সাদরে গ্রহণ করলাম: ভাবনা
ছুড়ে দেওয়া সব তীর সাদরে গ্রহণ করলাম: ভাবনা
শনিবার স্কুল খোলা রাখার প্রতিবাদে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা
শনিবার স্কুল খোলা রাখার প্রতিবাদে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ঘোষণা
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি, বিএনপির প্রস্তুতি কী?
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি, বিএনপির প্রস্তুতি কী?
আসছে ব্যয় কমানোর বাজেট
আসছে ব্যয় কমানোর বাজেট