সাহেদুর রহমান পরিবার নিয়ে নারায়ণগঞ্জের পথে রওনা দেন। নিজে গাড়ি চালান। কোনপথ দিয়ে ফ্লাইওভারে ওঠা যায় সেটার পথ জানা না থাকায় শাহবাগ দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকেন তিনি। একটু যেতেই বামে হঠাৎ দেখেন নির্দেশক দেওয়া- মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার এই দিকে। সেইদিকে যেতে গিয়ে দেখে কয়েক হাত দূরে দূরে ছোট ছোট টিনে একই দিক-নির্দেশক দেখেন। সেটা দেখে দেখে তিনি আনন্দবাজার ও চানখারপুল মোড়ের কাছে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন দুইদিক দিয়েই নির্দেশক দেওয়া। অবশেষে তাকে নেমে এলাকাবাসীকে জিজ্ঞেস করতে হয় কোনদিক দিয়ে তিনি গেলে ফ্লাইওভারে উঠতে পারবেন।
রাজধানীর শাহবাগ দিয়ে বাংলা একাডেমির সামনে চানখারপুলের পথে কুড়িটি জায়গায় ছোট ছোট টিনের গায়ে লেখা ‘মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার এই দিকে’। শাহবাগ থেকে টিএসসি যেতে চার জায়গায় আছে এটি। চানখারপুল মোড়ে গিয়ে দেখা যায় একটা বিদ্যুতের খুঁটির দুই দিকেই ইন্ডিকেটর দিয়ে লেখা ‘মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার এইদিকে’।
এলাকায় কথা বলে জানা যায় দুইদিক দিয়েই ওঠা যায় বলে হয়তো এভাবে লাগিয়ে রেখেছে। কিন্তু এটা বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে। ঘটাতে পারে দুর্ঘটনাও।
চার লেনবিশিষ্ট এই ফ্লাইওভারে ছয়টি প্রবেশ ও সাতটি বেরোনোর পথসহ মোট ১৩টি ওঠা-নামার পথ (র্যাম্প) রয়েছে। বৃহত্তম ও আধুনিক এই ফ্লাইওভার রাজধানীর শনির আখড়া থেকে যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, টিকাটুলি, গুলিস্তান হয়ে নিমতলী পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ।
যেকোনও নির্দেশকের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মানা হয়। রাস্তার মোড়ে মোড়ে গাড়িচালকের চোখে এমনিতে পড়বে এমন জায়গায় ইন্ডিকেটর লাগানো হয় এবং সেজন্য তাকে যেন বামে ডানে তাকিয়ে দেখতে না হয় সেই দিকটিও দুর্ঘটনা এড়াতে মাথায় রাখতে হয়।
এ ধরনের নির্দেশক সিটি করপোরেশনের মতো জায়গায় মানানসই হিসেবে দেখতে রাজি নন নগর পরিকল্পনাবিদেরা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইকবাল হাবিব বলেন, এ ধরনের টিনের ওপরে কয়েক হাত পর পর ইন্ডিকেটর দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। আপনি প্রতিটা মোড়ে দিতে পারেন যেখানে কিনা কয়েকদিকে যাওয়ার রাস্তা আছে। সেখানে কোনদিকে গেলে কী পাবেন সেটা দেয়া যেতে পারে। কিন্তু একটা লম্বা রাস্তায় একটু পরপর এটা করা দৃষ্টিকটূও বটে।
এ বিষয়ে ঢাকা সিটিকরপোরেশন দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকনকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি তার নজরে ছিল না। কিন্তু অবশ্যই তিনি দেখবেন। তিনি আরও বলেন, এটা সম্ভবত সিটি করপোরেশন থেকে করা হয়নি, ফ্লাইওভারের সঙ্গে যারা জড়িত তারা করে থাকতে পারে।
ছবি: নাসিরুল ইসলাম
/এফএ//আপ-এনএস/