আগামী ১০ দিন বন্যা পরিস্থিতির যে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, তাতে বড় বন্যার আশঙ্কায় দেশ। পূর্বাভাসে দেশের প্রধান সব নদীর পানি বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। দেশের উত্তর ও পূর্ব অঞ্চলের পাশাপাশি মধ্যাঞ্চলেও বন্যা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বর্তমানে দেশে ১০ জেলার ৬৪ উপজেলা বন্যাকবলিত। চলতি সপ্তাহে আরও এলাকা বন্যাকবলিত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ইতোমধ্যে নীলফামারী, রংপুর, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ ও পাবনার আশেপাশের নদীগুলোর পানি বাড়ছে। এসব এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে এই এলাকাগুলো পুরোপুরি বন্যাকবলিত হয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
কেন্দ্রের পূর্বাভাস অনুযায়ী, জুন মাসের তৃতীয় সপ্তাহে অর্থাৎ চলতি সপ্তাহে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা অববাহিকায় পানি সমতল বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে; যার ফলে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ ও পাবনা জেলায় ৭ থেকে ১০ দিন মেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
জুন মাসের তৃতীয় সপ্তাহে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে; যার ফলে কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও লালমনিরহাট জেলায় ৫ থেকে ৭ দিন মেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। এরপর জুন মাসের চতুর্থ সপ্তাহের প্রথম ভাগে বৃষ্টিপাত কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে এবং ওই অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে জুন মাসের তৃতীয় ও চতুর্থ সপ্তাহে অর্থাৎ চলতি ও আগামী সপ্তাহে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে; এর ফলে রাজবাড়ী, ফরিদপুর, মুন্সীগঞ্জ ও শরীয়তপুর জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।
এছাড়া চলতি সপ্তাহে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা, কুশিয়ারাসহ সব প্রধান নদীগুলোর পানি সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে এবং সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলায় ৭ থেকে ১০ দিন মেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে। এরপর জুন মাসের চতুর্থ সপ্তাহের প্রথম ভাগে বৃষ্টিপাত কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে এবং ওই অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়া অন্য একটি সূত্র জানায়, বন্যার পানি ফরিদপুর, মাদারীপুর, চাঁদপুর পর্যন্ত চলে আসতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের একজন কর্মকর্তা বলেন, আমরা পূর্বাভাস দিয়েছি জুনের শেষ পর্যন্ত। একদিকে বর্ষাকাল, অন্যদিকে উজানের পানি। দুই মিলিয়ে পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। খুব দ্রুত পানি বাড়ছে। এতে করে আগামী কয়েকদিনে পরিস্থিতি আরও কিছুটা খারাপ হওয়ার পাশাপাশি বন্যাকবলিত এলাকার সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তবে উজানে বৃষ্টি কমে এলে কিছু এলাকায় পানি কমতে পারে। এই বন্যা ৭ থেকে ১০ দিন স্থায়ী হতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি।